ব্রেকিং:
ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর বর্ষপূর্তি উদযাপন রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর চার প্রস্তাব পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুর্ঘটনা রোধে হটলাইন নম্বর চালু চাঁদপুরে ইলিশ উৎসবের ষষ্ঠ দিনের আলোচনা প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি করছেন তানিয়া ইশতিয়াক খান নারায়নপুর পৌরসভা বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল চাঁদপুর সদরে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে শিক্ষা অফিসার লক্ষীপুর ইউপিতে সিভিআরপি প্রকল্পের ঘর উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ মতলব উত্তরে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে মতলব মেঘনা-ধনাগোদা নদীর উপর নির্মাণ হচ্ছে দেশের প্রথম ঝুলন্ত সেতু জনসেবায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান চাঁদপুরে মেঘনা ট্রেনে ডেঙ্গুর আক্রমন আতংক! কচুয়ায় মাদ্রাসা ছাত্র বলৎকারের ঘটনায় শিক্ষক গ্রেফতার চাঁদপুর জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির মাসিক সভা স্ত্রী রাজিনা আক্তারকে নির্যাতনের ঘটনায় আক্তার মিজিকে পুলিশ খুঁজছ চাঁদপুর সদরে পাঁচ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৫ মাদক ব্যবসায়ী আটক নবীনগরে দুই দোকান ও তিন রেস্টুরেন্টকে জরিমানা চান্দিনায় পুকুরে মিলল মাদরাসাছাত্রের লাশ একসঙ্গে মা ও দুই ছেলের জানাজা, পাশাপাশি কবরে দাফন নিজে সৎ হয়ে অন্যকে সৎ হওয়ার পরামর্শ দেওয়া উচিত
  • শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩০

  • || ০৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

ভালো নেই বাঁশ-বেত শিল্পের কারিগররা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

সময়ের বিবর্তনে প্রাচীনকাল থেকে হেঁটে আসা বাঁশ-বেত শিল্পে পড়েছে ভাটা। আধুনিক যুগে এসে বাঁশ-বেত শিল্পের জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিকের রকমারি সরঞ্জাম। প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসা গৃহস্থালি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত একটি প্রয়োজনীয় শিল্প এটি। একসময় এই শিল্পের কারিগরদের কদর থাকলেও এই আধুনিক যুগে এসে ক্রেতা সংকটসহ ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পে বাসা বেঁধেছে নানান অবহেলা। তবু অভাব-অনটনের মাঝেও এখনও বংশপরম্পরায় পাওয়া এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কিছু সংখ্যক পরিবার।
সরেজমিনে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দীর্ঘভূমি, মাধবপুর, রামনগর চ-ীপুর, ধান্যদৌল নন্দীপাড়া ও সাহেবাবাদ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কিছু পরিবার এই বাঁশ আর বেত দিয়ে তৈরি শিল্পের মাধ্যমেই তাদের জীবিকানির্বাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন বাঁশ আর বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা। জীবন জীবিকার তাগিদে তবুও বংশপরম্পরায় পাওয়া এই পেশাকেই আঁকড়ে ধরে আছেন তারা। এই শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন উপজেলার সাহেবাবাদ গ্রামের ৪ পরিবার, রাগনগর গ্রামের ১ শত পরিবার, ধান্যদৌল গ্রামের ১৫ পরিবার, দীর্ঘভূমি গ্রামের ৪ পরিবার ও মাধবপুর গ্রামে রয়েছে ৩০ টি পরিবার। অনেকেই ঝরে গেছে বংশপরম্পরায় পাওয়া এ পেশা থেকে।

বাঁশ ও বেতের তৈরি কুলা, চালুন, খাঁচা, মাচা, মই, চাটাই, ঢোল, গোলা, ওড়া, বাউনি, ঝুঁড়ি, ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, মাথাল, সোফাসেট, বইপত্র রাখার র‌্যাকসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র, বাঁশের ঘর, বেড়া, ঝাপ, বেলকি, দরমা বাংলাদেশের নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতির প্রতীক। দৈনন্দিন কাজে ব্যবহূত বাঁশের তৈরি গৃহস্থালি পাত্রসমূহ খুবই আকর্ষণীয়। এসব পাত্র বা ঝুড়িতে বুননের মাধ্যমে নানা ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। জনপদের মানুষ গৃহস্থলি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেত ও বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতো, এখন এসব জিনিসপত্র প্লাস্টিকের মাধ্যমে মেশিনে তৈরী হচ্ছে। তাই আর আগের মতো বাঁশ বেতের তৈরী করা জিনিসপত্রের তেমন চাহিদা নেই। এখন আর যেখানে সেখানে দেখা মেলে না বাঁশ ও বেতের কারুকাজ। তাছাড়াও প্লাস্টিক ও অন্যান্য দ্রব্যের পণ্য টেকসই ও স্বল্পমূল্যে পাওয়ায় সাধারণ মানুষের চোখ এখন সেগুলোর ওপর। বর্তমানে স্বল্প দামে হাতের নাগালে প্লাস্টিক সামগ্রী পাওয়ায় বেত শিল্পের চাহিদা আর তেমন নেই। ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্পটি। ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রায় বিলুপ্তির পথে এ শিল্পটি।
বেত শিল্পের কারিগর রাধা চন্দ্র নম বলেন, বাঁশ ও বেত শিল্পের মাধ্যমে এখন আর আমাদের সংসার চলে না। ক্রেতা সংকটসহ নানান সমস্যায় আমরা জর্জরিত। তাছাড়া দিন দিন দুষ্প্রাপ্যও হয়ে পড়ছে এ শিল্প সংশ্লিষ্ট কাঁচামাল বাঁশ ও বেত। এখন আর আগের মতো বাড়ির আশেপাশে বাঁশ ও বেত গাছ রাখছে না কেউ। সেগুলো কেটে চাষাবাদসহ ঘরবাড়ি তৈরি করছে মানুষ। তাই কাঁচামাল আর আগের মতো সহজেই পাওয়া যায় না। কিনতে হয় চড়া দামে। তাই জিনিসপত্র তৈরী করে বিক্রিও করতে হয় চড়া দামে। অথচ স্বল্পমূল্যে এখন মানুষ প্লাস্টিক সামগ্রী পাচ্ছে। যে কারণে বংশপরম্পরায় পাওয়া এ কাজ থেকে অনেকেই সরে পড়ছে।
জানা যায়, এক সময় বিস্তীর্ণ এ জনপদে বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি হতো গৃহস্থালী ও সৌখিন পণ্যসামগ্রী। বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ থেকে বেত সংগ্রহ করে তৈরি করতেন হরেক রকমের ব্যবহারিক পণ্য। এসব নিজেদের ব্যবহারের পাশাপাশি, বাজারে বিক্রি করেও চলতো অনেক পরিবার। তবে এখনও গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশ ও বেতের তৈরি খোল, চাটাই, খোলুই, ধামা, টোনা, পালল্টা, মোড়া,দোলনা, বুক সেল্ফ, টুরি, টুকরী, ডোল কদাচিৎ চোখে পড়ে। তবে এই বেত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে দাবী করেন বাঁশ-বেত শিল্পের কারিগররা।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি ) মোহাম্মদ কাউছার হামিদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, বাঁশ-বেত শিল্প বাঙালির ঐতিহ্য। বাঁশ-বেত শিল্পের সাথে জড়িত ভূমিহীনরা আমার দপ্তরে যোগাযোগ করলে তাদের ভূমি পাওয়ার বিষয়ে আমি সুপারিশ করতে পারব, অথবা এ শিল্পের সাথে জড়িতদের বাঁশ চাষের জায়গা না থাকলে একই উপায়ে জায়গা পাওয়ার বিষয়ে আমি সুপারিশ করতে পারব