‘Evaly’ অনলাইন শপে ৫৪০ টাকার WOK PAN ১০৭০ টাকা!

দিন দিন অনলাইনে কেনাকাটা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর এ সুযোগে নতুন নতুন কৌশলে ইভ্যালি নামক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি চটকদার সব অফার দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে করছে প্রতারণা। ইভ্যালির লোভনীয় অফারে আকৃষ্ট হয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকেই ।

২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ইভ্যালি’। যাত্রার শুরুর পর থেকেই সাইক্লোন, লণ্ডভণ্ড, দেশব্যাপী সবাইকে ১৫ নম্বর অফার সতর্ক সংকেত এমন ভয়ঙ্কর নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে প্রতিষ্ঠানটির চটকদার ও লোভনীয় সব বিজ্ঞাপন। 

এসব লোভনীয় অফারে আকৃষ্ট হয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা এবং হচ্ছেন প্রতারণার শিকার। কেউ কেউ প্রি-অর্ডারের টাকা ফেরত নিয়েও রয়েছেন শঙ্কায়। দাম পরিশোধ করার পরেও পণ্য দেয়া হচ্ছেনা। বলা হচ্ছে অর্ডার বাতিল করতে। অর্ডার বাতিলের পর টাকা জিম্মি রেখে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

পণ্য অর্ডার করার পর দুই থেকে তিন মাস পর পণ্য নেই বলে ইভ্যালি থেকে দেয়া হয় রিফান্ডের বার্তা। তবে সেই টাকা ফেরত পেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রাহককে।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ইভ্যালির রিফান্ড সম্পর্কে জানান, পণ্য পাওয়ার আগেই ইভ্যালিকে টাকা দিতে হয়। এরপর ১৫ দিন পর পণ্য দেয়া হবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। এমন হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা আছে তাদের কাছে। ভুক্তভোগীরা আরো জানান, দুই থেকে তিন মাস পর ইভ্যালির পক্ষ থেকে বলা হয় পণ্য নেই, অর্ডার ক্যান্সেল করেন। এটা প্রতারণা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
কোনপ্রকার পূর্বশর্ত ছাড়াই ইভ্যালি টাকা আটকে রাখছে ও হেনস্তা করছে। প্রতিষ্ঠানটি রিফান্ডের নামে ছলচাতুরির মাধ্যমে জনগণের টাকা মাসের পর মাস আটকে রেখে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এক ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ইভ্যালির পন্য তালিকায় SA Fashion world এর KIAM WOK PAN 22CM নামক মাত্র একটি রান্নার কড়াইয়ের মূল্য ৯৫০ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সাধারণ বাজার যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় উক্ত কড়াইটির মূল্য মাত্র ৫৪০ টাকা। ইভ্যালি এবং সাধারণ বাজারের তুলনায় কড়াইটির মূল্য ব্যবধান ৪৫০ টাকা। আবার এর সঙ্গে পার্সেল সার্ভিস ফি ১২০ টাকা যোগ করতে হবে। অতএব, উক্ত কড়াইটির বর্তমান ইভ্যালি মূল্য ৯৫০+১২০=১০৭০ টাকা। যা সাধারণ বাজারের তুলনায় দ্বিগুণ। 
অভিযোগ করে তাদের শপিং মালিকের সাথে কথা বলতে গেলে, তারা উত্তর এই বলে যে, “ক্যাশব্যাকের টাকা বেশী দাম দিয়েই কিনতে হয়” 

এভাবেই অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপনের লোভনীয় অফারের ফাঁদে ফেলে যে কোন সাধারণ পণ্যেরও দ্বিগুণ-তিনগুণ মূল্য ডিসপ্লে করে, তা থেকে ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে এক আজব প্রতারণার মায়াজাল সৃষ্টি করেছে ইভ্যালি।  

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইভ্যালি সম্পর্কে বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি আমরা, তদন্ত চলছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের এমন অফারের নামে কোনো ক্রেতা হয়রানি বা প্রতারণার শিকার হলে আপনারা অবশ্যই অভিযোগ করুন। আমাদের কাছে অভিযোগ করলে তদন্তে প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না।

এ বিষয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি দেশের বাইরে আছেন বলে জানান। তিনি দেশে আসার পর মোবাইলে কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। কয়েকবার এসএমএস করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।