অটোরিকশা কিনে না দেয়ায় স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ফাতেমা আক্তার মুন্নি নামে এক গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় নিহতের মা খায়েরুন নেছা বাদী অভিযুক্ত স্বামীকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এরআগে, বুধবার (৫ মে) রাতের কোনো এক সময়ে উপজেলার ৫নং ছয়ানী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর নয়নপুর গ্রামের ওদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফাতেমা আক্তার মুন্নি নোয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মধুসুদনপুর গ্রামের ফরিদ হাজী বাড়ির আহছান উল্যার মেয়ে।

গ্রেফতার স্বামী মো. জিহাদ উপজেলার ৫ নম্বর ছয়ানী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর নয়নপুর গ্রামের ওদার বাড়ির মো. হারুনের ছেলে।

মামলার এজহারে জানা যায়, গত ৩ মাস ২৭ দিন আগে মুন্নি ও জিহাদ প্রেম করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে জিহাদ যৌতুক হিসেবে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কিনে দেয়ার জন্য শ্বশুরের পরিবারের কাছে দাবি করে। তার স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন জিহাদ।

মুন্নির মা-বাবা গরিব বলে তাদের পক্ষে অটোরিকশা কিনে দেয়া সম্ভব নয় বলে স্বামীকে জানান। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতন করেন। শ্বশুর-শাশুড়ি একাধিকবার মেয়ের স্বামীর বাড়িতে গেলে মেয়ে জামাই তাদের কাছেও অটোরিকশা কিনে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করে। শ্বশুর-শাশুড়ি অটোরিকশা কিনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি ফের স্ত্রীর ওপর নির্যাতন করেন। 

এর জের ধরে বুধবার রাতে জিহাদ তার স্ত্রীকে অটোরিকশা কিনে দেয়ার জন্য টাকা দেয়ার কথা বললে এই নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। মুন্নি বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে পারবে না বললে রাতে তাকে বসতঘরে গলা টিপে হত্যা করে জিহাদ। নিহতের শাশুড়ি জোসনা বেগম সাহরি খেতে তাকে ডাকতে গেলে খাটের ওপর পুত্রবধূর মরদেহ দেখতে পান এবং ভোরে মুন্নির মা-বাবাকে তার মৃত্যুর খবর দেয়া হয়।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে। একপর্যায়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন স্বামী।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান সিকাদার জানান, আসামিকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাত ৯টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।