ব্রেকিং:
নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা জাহাজসহ জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের সবশেষ অবস্থা জানা গেছে বেতন নেবেন না পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট জারদারি জলদস্যুর কবলে পড়া নাবিকদের ১১ জনই চট্টগ্রামের রমজান উপলক্ষে গাজায় ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশসহ ৯ দেশ রোজায় স্কুল খোলা না বন্ধ, সিদ্ধান্ত আজ পুরান ঢাকায় জুতার কারখানায় ভয়াবহ আগুন গাজায় ‘জঘন্য অপরাধ’ বন্ধের আহ্বান সৌদি বাদশাহর আম্বানিপুত্রের বিয়েতে যে দামি উপহার দিলেন শাহরুখ-সালমান মেয়র পদে উপনির্বাচন- কুমিল্লায় জয়ী বাহারকন্যা সূচনা বাহারকন্যা সূচনার বিরুদ্ধে সাক্কু-তানিম-কায়সারের অভিযোগ ভোট দিয়ে তানিমের অভিযোগ রমজানকে ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র
  • মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

অনিয়ম বন্ধে আঙুলের ছাপে সরকারি চাল

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০  

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় প্রথমবারের মতো বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে (আঙুলের ছাপ দিয়ে) খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

উপজেলার ধামতী ইউপির ধামতী গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দিয়ে চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। 

এ সময় দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, ইউএনও রাকিব হাসান ও ধামতি ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মিঠু উপস্থিত ছিলেন। 

প্রথমবারের মতো সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম রুখতে দেবিদ্বারের ইউএনও রাকিব হাসান একটি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, হতদরিদ্র অনেকের নামে কার্ড করা হয়েছে, অথচ তারা জানেই না তাদের নামে বছরের পর বছর চাল তোলা হচ্ছে। ক্রমাগতভাবে যখন অভিযোগগুলো আসছিল। তখন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে সঠিকভাবে চাল পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। 

তিনি আরো বলেন, ওয়েব সাইটের মাধ্যমে চাল বিতরণে ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। দেবিদ্বারের ইউএনও রাকিব হাসানের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার ফসল ‘ওএমএস দেবিদ্বার’ ওয়েবসাইট http://www.omsdebidwar.gov.bd/ । 

 

বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে চাল বিতরণ

বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে চাল বিতরণ

এ ওয়েবসাইটে উপকারভোগীর নাম, ঠিকানা, ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, আঙুলের ছাপসহ ১৩ ধরণের তথ্য রয়েছে। এতে উপকারভোগীকে আসল-নকল যাচাই করে চাল দেয়া হয়। 

একই ব্যক্তি যেন একাধিকবার চাল তুলতে না পারেন, সেটিও দেখা হয়। এ ওয়েবসাইটে প্রত্যেক উপকারভোগীর তথ্যের বিপরীতে যুক্ত করা হয়েছে তার আঙুলের ছাপ। উপকারভোগী তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নম্বর, ডিজিটাল আইডি নম্বর দিয়ে ব্যবস্থাটিতে (সিস্টেম) প্রবেশ করা মাত্রই তার ছবিসহ যাবতীয় তথ্য প্রদর্শিত হয়। 

সবার ১০ আঙুলের ছাপ নেয়া হয়েছে। যেকোনো একটি আঙুলের ছাপ দিলে, তা মিললে ‘চাল উত্তোলন সম্পন্ন হয়েছে’, এমন ধন্যবাদ বার্তা দেখায়। শুধু তাই নয়, উপকারভোগীর চাল তোলার তথ্য কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার বা সার্ভারেও জমা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদারকি সুযোগ পান। 

সন্ধ্যায় ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায়, মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৯৭৭। মজুত থাকা চালের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার কেজি। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০ কেজি চাল।  

ধামতী গ্রামের বিল্লাল হোসেন, আনোয়ারা বেগম, আবুল হাশেম, শিরিনিা বেগম তারা সবাই এ প্রতিবেদককে বলেন, আঙুলের ছাপে চাল তুলেছি। এখন আর কেউ কারো চাল মেরে দিতে পারবে না। এ উদ্যোগ আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। 

 

ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি

ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুবিল ইউপির বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হন ২০১৬ সালে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে বছরে পাঁচ মাস ১০ টাকা দরে চাল দেয় সরকার। মাসে প্রতিজনকে দেয়া হয় ৩০ কেজি করে। নজরুল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। কিন্তু তার নামে তিন বছর ধরে চাল তুলছে একটি চক্র। 

এছাড়াও গুনাইঘর দক্ষিণ ইউপির উজানীজোড়া গ্রামের মো. সবুজ, সুফিয়া খাতুন ও রাশেদা বেগম ২০১৫ সাল থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত। তারা বছরে দুই বার করে চাল নিতে পেরেছেন। 

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর যে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান হয়, তাতে দেখা যায়, তাদের নামে এরই মধ্যে প্রতি কার্ডে ১৮ থেকে ২২ বার পর্যন্ত চাল নেয়া হয়েছে। 

দেবিদ্বারে চাল বিতরণে অনিয়ম রুখতে তথ্যপ্রযুক্তির যে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে অনিয়ম দূর করা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।  

ইউএনও রাকিব বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছে এটি পুরানো বিষয়। করোনাকালীন সময়ে এ ব্যাপকতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অনিয়মটি চিরতরে বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করছি। মূলত এ ব্যবস্থাটি তৈরির জন্য ডিলার ও উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ধীরে ধীরে সব ইউপিতে ব্যবস্থাটি চালু করা হবে। পুরো উপজেলার সবাইকে এর আওতায় আনা হবে। ওয়েবসাইটির আরো হালনাগাদ করা হবে। 

কুমিল্লার ডিসি মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি। একই পদ্ধতিতে সরকারের অন্যান্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।