ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

অন্যের ঘরণী হয়েও পরকীয়ার ফাঁদে পড়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছি

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২০  

চট্টগ্রাম মহানগরীর টেরিবাজারে স্বর্ণের কারিগর মাধব দেবনাথ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিজের মামাতো ভাই পিন্টু দেবনাথের স্ত্রী বিথী দেবনাথ একাই মাধবকে খুন করেছেন। টানা দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের পর মাধবকে খুনের কথা ও পরকীয়ার করুণ বর্ণনা দিয়েছেন অভিযুক্ত বিথী দেবনাথ।

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আমার পেশাগত জীবনে বিথীর মতো নার্ভ শক্ত নারী খুব কমই দেখেছি। জিজ্ঞাসাবাদের শুরু থেকে মাধব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করে আসছিলেন। 

তিনি বলেন, ৪ ডিসেম্বর রাতে মাধবের মরদেহ উদ্ধারের পর বিথী দেবনাথ ও তার স্বামী পিন্টু দেবনাথসহ পিন্টুর দুই ভাই, মা-বাবাসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর ডিসি, এডিসি ও এসিসহ আমরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। শেষ পর্যন্ত রোববার রাতে বিথী মাধবকে একাই হত্যার কথা স্বীকার করেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

বিথী স্বীকারোক্তিতে বলেন, অন্যের ঘরণী হয়েও পরকীয়ার সর্বনাশা ফাঁদে পড়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। যার কিছু ভিডিও স্বামী ও ননদের হাতে পাঠায় মাধব। এতে প্রথমে আত্মহত্যার কথা চিন্তা করেন বিথী। পরে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেন, যে তাকে ফাঁদে ফেলেছে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিলেই কেবল এ যন্ত্রণার অবসান হবে।

বিথী বলেন, ২ ডিসেম্বর রাত পৌঁনে ১০টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে দেবর, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ সবাই বাসার বাইরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর মাধব আমার রুমে আসে। ঘরে ঢোকার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, দরজা খোলা থাকায় অন্যদের বের হতে দেখে বাসায় ঢোকেছে সে। তখন হাত-পা কাঁপছিল আমার। মাধবকে জিজ্ঞাসা করি- কেন এসেছো এবং কীভাবে আমার স্বামীর কাছে ভিডিওটা (বিথীর খোলামেলা ভিডিও) পাঠিয়েছো। সে জানায়, ফেক আইডি খুলে ওই ভিডিও আমার হাজবেন্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। 

মাধব ওই সময় বলে, ও যেভাবে শরীরিক সম্পর্ক করতে চায় সেভাবেই আমাকে সম্মতি দিতে হবে। ওর কথা না শুনলে সব ভিডিও আমার ভাই, কাকা, আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে আমাকে চরিত্রহীনা বানাবে। আমার হাজবেন্ড হাজারী গলিতে কোনোদিনও মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সে ব্যবস্থাও করবে।

তখনই আমার মাথায় আসে, এখান থেকে বের হলে সে যে কাউকে ভিডিওগুলো দেখাতে পারে। তাই তাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেই। কৌশল হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেই। তবে আমার মনে যেভাবে চায় সেভাবেই তোমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করবো। এতে রাজি হয় মাধব। এরপর শারীরিক সম্পর্ক করার সময় উত্তেজনার দোহাই দিয়ে কামিজের এক টুকরা কাপড় দিয়ে তার মুখ, পা ও হাত বেঁধে ফেলি। এরপর ওর রানের ওপরে বসে গামছা দিয়ে গলা চেপে ধরি। নাক মুখ থেকে ফেনা বের হলে গলা ছেড়ে দেই। পরে পুরো শরীর খাটের নিচে ঢুকিয়ে দেই।

বিথী বলেন, ২০১৮ সালে ১ মার্চ আমার বিয়ে হয়। বিয়ের ১০ দিন পর চট্টগ্রামের  লালদীঘিরপাড় জামাল কমপ্লেক্সের ওপরে চার তলায় উঠি। মাধব আমার স্বামীর পিসতুতো (ফুফাত) ভাই হিসেবে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে দু‘বেলা ভাত খেতে আসতো। মাঝে কয়েকদিন অসুস্থ ছিল। তার সেবা যত্নের কাজে শ্বাশুড়ির সঙ্গে আমি সহযোগিতা করতাম। সুস্থ হওয়ার পর মাধবের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হতো, চ্যাটিং হতো। এভাবে তার সঙ্গে আমার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আমার বাসায় মাধবের সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়।

লকডাউন শুরু হলে মার্চের ২৭ কিংবা ২৮ তারিখ মাধব দেশের বাড়ি চলে যায়। তখন আমার স্বামীর মোবাইলে ইমোতে ভিডিও কলে কথা বলতো মাধব। একপর্যায়ে সে আবদার করলে আমার খোলামেলা ভিডিও ইমোতে পাঠাই। পরে আমার স্বামীর মোবাইল থেকে তা ডিলিট করে দিই। লকডাউনের ৩ মাস মাধব বাড়িতে ছিল। নতুন বাসায় ওঠার এক থেকে দেড় মাস পর মাধব চট্টগ্রাম আসে। পূর্বের মতো দুই বেলা খাওয়ার খরচ দিয়ে বাসায় খাবার খেতো।

এর মধ্যে মাধব থেকে পিন্টু ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। ধারের টাকা নিয়ে মামাতো ও পিসতুতো ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। মাধবকে ওই টাকা পরিশোধ করেন পিন্টু এবং বাসায় যেতে নিষেধ করেন। স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আমি মাধবকে এড়িয়ে চলতাম। এর মধ্যে আগস্টে বাবার বাড়ি বেড়াতে যাই আমি। তাই বাপের বাড়ি থাকা অবস্থায় মাধব বিভিন্নভাবে কথা বলার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি । এর মধ্যে একদিন মাধব খবর পাঠায়, তার কাছে দু’জনের এমন কিছু গোপন কথা ও দৃশ্য ধারণ করা আছে, যা ছড়িয়ে দেয়া হবে। তাই মাধবকে কাকুতি মিনতি করে বলি চট্টগ্রামে এসে সামনা-সামনি কথা বলবো। কিন্তু চট্টগ্রামে ফিরে এলেও বিভিন্ন কারণে মাধবের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয় মাধব। পরে মাধব আমার ননদকে জানিয়ে দেয় তার কাছে থাকা দু’জনের ভিডিওর কথা। নভেম্বর মাসে কালিপূজার দু’দিন আগে একটা ফেইক আইডি থেকে স্বামী পিন্টুর কাছে ভিডিও পাঠায় মাধব। শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি। এ সময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু তাতে তো বদনাম ঘুচবে না, তাই তাকে সরিয়ে দেই।

উল্লেখ্য, খুনের শিকার মাধব দেবনাথ, খুনি বিথী দেবনাথ, তার স্বামী পিন্টু দেবনাথ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় মাধব দেবনাথের পরিবার কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন।