ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অভাবের সংসারে খিরায় এলো সচ্ছলতা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

কৃষক ফজলুল হক। শীতে জুবুথুবু। তার ছেলে মুরাদকে নিয়ে খেত থেকে খিরা তুলছেন। খিরা তুলে বস্তায় ভরে বাজারে বিক্রির জন্য ভ্যান গাড়িতে তুলছেন। একদিন পর পর ক্ষেত থেকে খিরা তুলে স্থানীয় বাঙ্গড্ডা বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দরে খিরা বিক্রি করেন। 

কৃষক ফজলুল হক এরইমধ্যে খিরা চাষ করে লাভের মুখ দেখে একজন সফল কৃষক হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন। অভাব অনটনের সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। 

গত পাঁচ বছরে প্রায় তিন লাখ টাকার খিরা বিক্রি করেছেন। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা লাভ করেছেন। খিরার পাশাপাশি তিনি বেগুনসহ অন্যান্য সবজিরও আবাদ করছেন।

সফল কৃষক ফজলুল হকের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বাঙ্গড্ডা ইউপির গান্দাছি গ্রামে। গত ২০১৫ সাল থেকে নিজের ১৮ শতক জমিতে খিরার আবাদ করেন। 

চলতি বছর নিজের ১৮ শতকের সঙ্গে আরো ২৪ শতক জমি বন্ধক নিয়ে খিরার আবাদ করেন। স্থানীয়ভাবে খিরার চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় তিনি চলতি মৌসুমে আরো ২৬ শতক জমিতে খিরা চাষ করার সিন্ধান্ত নিয়েছেন। খিরার পাশাপাশি বেগুন চাষ করার জন্য বীজতলাও তৈরি করেছেন।

ফজলুল হক জানান, বাংলা আশ্বিন মাসের শেষ দিকে খিরা ক্ষেত তৈরি করে বীজ বপন, আগাছা পরিষ্কার, সার, কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগ করার দেড় মাসের মধ্যে ফলন তোলা শুরু হয়। প্রায় এক মাস পর্যন্ত খিরা বিক্রি করেন। খিরা চাষে শ্রম আছে। ক্ষেত তৈরি, খিরার চারা উঠার পর ঘুঘু পাখির হাত থেকে চারা রক্ষা করা, আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। এছাড়া খিরা গাছের পাতা কুচকে যাওয়া, লেদা পোকার আক্রমণ, পাতা পঁচা রোগ দেখা দেয়। সবশেষ ভাইরাসের আক্রমণে গাছ হলুদ হয়ে আস্তে-আস্তে মরে যায়। চোরের হাত থেকে খিরা ক্ষেত রক্ষায় রাতে পাহারা দিতে হয়। চোরের দল খিরা চুরি করতে গিয়ে ক্ষেত মাড়িয়ে ফেলে। সবদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। 

তিনি আরো জানান, খেত থেকে একদিন পর পর খিরা তোলেন। প্রতিবার ৮ থেকে ৯মণ খিরা তোলা হয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর খিরার দাম ভালো। প্রতিমণ খিরা প্রথম দিকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। পরে প্রতিমণ ১৫০০, ১৬০০, ১২০০ টাকা থেকে বর্তমানে ৮০০ টাকা বিক্রি করছেন। শেষ দিকে খিরা ছোট হলে দামও কমে যায়। বর্তমানে খিরা খেত হলুদ হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। যদি নষ্ট না হতো তাহলে আরো ৩ থেকে ৪ বার খিরা সংগ্রহ করা যেত। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো উপকার পাচ্ছি না।

ফজলুল হক চলতি মৌসুমে প্রায় ৭০ মণ খিরা উঠিয়ে প্রায় ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৬০হাজার টাকা লাভের মুখ দেখেছেন। খিরার ফলন শেষ হলে ওই জমিতে বেগুন চাষের জন্য বীজ তলা তৈরি করেছেন। কৃষক ফজলুল হকের ছেলে মুরাদ হোসেন ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন। এখন বাবার সহযোগী হিসেবে নিয়মিত খিরা চাষে কাজ করছেন। 

ফজলুল হক আরো জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে বীজ, সার, কীটনাশক ওষুধ এবং উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের নিয়মিত সহযোগিতা পেলে আরো লাভবান হওয়া যাবে। তিনি এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসারের সহযোগিতা কামনা করেন। 

উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা আমাদেরকে তাদের যে কোনো সমস্যার কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে আমরা মাঠে উপস্থিত হয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষক ফজলুল হককে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। এছাড়া আমাদের স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাও তাকে নিয়মিত সহযোগিতা করছে। তারপরও একজন সফল কৃষক হিসেবে আমরা তাকে সব কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করব।