আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় কুমিল্লায় কমছে অপরাধ প্রবণতা

ধারাবাহিকভাবে অপরাধ কর্মকাণ্ড কমছে কুমিল্লায়। কমেছে হত্যা, রাহাজানি, নারী নির্যাতনসহ অন্যান্য অপরাধ প্রবণতাও। গত দু’মাস ধরেই স্বাভাবিক রয়েছে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। গতকাল জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর।

বেলা ১২টায় শুরু হওয়া আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার প্রথমেই গত সভার কার্য বিবরণী তুলে ধরেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন। এসময় কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান, হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, জেলা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন ইমন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মানজুরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ/ প্রতিনিধি, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। আমরা চাই- এ ধারা বজায় থাকুক, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ হোক। আর এজন্য আইনশৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট সকল বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করছে। এর সুফল পাচ্ছে জেলার জনগণ। বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। আইনশৃঙ্খলার এ স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

এরপরই তিনি পাসপোর্ট অফিস ঘিরে দালালদের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে ডিডি রাজ আহমেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে রাজ আহমেদ বলেন, ‘কুমিল্লায় প্রতিমাসে গড়ে ৮/৯ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু হয়। পাসপোর্ট করতে আসা জেলার সর্বস্তরের মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে অকান্ত পরিশ্রম করেও এর কোনো সুফল পাচ্ছি না। গত তিনদিন আমি লাঞ্চ করেছি সন্ধ্যার পর। আমি নিজে প্রত্যেককে লাইনে দাঁড় করিয়ে বিভিন্ন খুঁটি-নাটি বিষয়ের তথ্য নিই। কারণ ইদানিং রোহিঙ্গা ইস্যুটা একটা ফ্যাক্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে, এজন্য আমাদেরকেও অধিক পরিশ্রম করতে হয়। র‌্যাবের অভিযান বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করা হয়নি। কার কাছ থেকে কি পরিমাণ পার্সপোর্ট জব্দ করা হয়েছে তাও জানি না।’

মহাসড়কে যান চলাচল ও থ্রি হুইলার চলার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আমার বেশ কিছু সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও থ্রি হুইলার জব্দ করেছি। অভিযান অব্যাহত আছে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সিএনজি-থ্রি হুইলারের পাশাপাশি মহাসড়কে অনুমুতিহীন কোনো গাড়িই চলতে দেয়া যাবে না বলে সভায় জানানো হয়।

সভার শেষ দিকে কুমিল্লার সিভিলসার্জন ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, কুমিল্লায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাউকেই মৃত্যুবরণ করতে হয়নি। এজন্য সকলের সচেতনতার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর করেন তিনি। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লা মেডিকেলসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ১১ শ’ ২৯জন রোগী সেবা নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।