ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আঙ্গুলের ছাপে সরকারি চাল

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০  

দেবিদ্বার উপজেলায় প্রথমবারের মতো বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে (আঙুলের ছাপ দিয়ে) ওএমএসের চাল বিতরণ কার্যক্রম শুর” হয়েছে। ধামতী ইউনিয়নের ধামতী গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দিয়ে ওই চাল বিতরণ কার্যক্রম শুর” হয়। দুপুর ১২টার দিকে ধামতি ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার পাশে শুর” হওয়া এ কার্যক্রমে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, ইউএনও রাকিব হাসান ও ধামতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মিঠু উপস্থিত ছিলেন। প্রথম বারের মত সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম রুখতে দেবিদ্বারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিব হাসান একটি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিশেষ  ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উদ্যোগতা ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, হতদরিদ্র অনেকের নামে কার্ড করা হয়েছে, অথচ তাঁরা জানেই না তাঁদের নামে বছরের পর বছর চাল উত্তোলন হচ্ছে। ক্রমাগতভাবে যখন অভিযোগগুলো আসছিল, তখন চিন্তা করলাম প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে সঠিকভাবে চাল পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। তিনি আরও বলেন, ওয়েব সাইটের মাধ্যমে কারা চাল উত্তোলন করেছেন, কারা করেননি, তার তথ্য জানতে পারেন। ফলে চাল বিতরণে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই।

 দেবিদ্বারের ইউএনও রাকিব হাসানের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার ফসল ‘ওএমএস দেবিদ্বার’ । এ ওয়েবসাইটে উপকারভোগীর নাম, ঠিকানা, ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, আঙুলের ছাপসহ ১৩ ধরণের তথ্য রয়েছে। এতে উপকারভোগীকে আসল-নকল যাচাই করে চাল দেওয়া হয়। একই ব্যক্তি যেন একাধিকবার চাল উত্তোলন করতে না পারেন, সেটিও দেখা হয়। এ ওয়েবসাইটে প্রত্যেক উপকারভোগীর তথ্যের বিপরীতে যুক্ত করা হয়েছে তাঁর আঙুলের ছাপ। উপকারভোগী তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নম্বর, ডিজিটাল আইডি নম্বর দিয়ে ব্যবস্থাটিতে (সিস্টেম) প্রবেশ করা মাত্রই তাঁর ছবিসহ যাবতীয় তথ্য প্রদর্শিত হয়। সবার ১০ আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে। যেকোনো একটি আঙুলের ছাপ দিলে, তা মিললে ‘চাল উত্তোলন সম্পন্ন হয়েছে’, এমন ধন্যবাদ বার্তা দেখায়। শুধু তাই নয়, উপকারভোগীর চাল উত্তোলনের তথ্য কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার বা সার্ভারেও জমা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদারকি সুযোগ পান। গতকাল সন্ধ্যায় িি.িড়সংফবনরফধিৎ.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায়, মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৯৭৭। মজুত থাকা চালের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার কেজি। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০ কেজি চাল। ইউএনওর এ উদ্যোগের পর যাঁরা গতকাল চাল কিনতে গিয়েছিলেন ধামতী গ্রামের বিল্লাল হোসেন, আনোয়ারা বেগম, আবুল হাশেম, শিরিনিা বেগম তারা সবাই এ প্রতিবেদককে বলেন, আঙুলের ছাপে চাল উত্তোলন করেছি। এখন আর কেউ কারও চাল মেরে দিতে পারবে না। এ উদ্যোগটা আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।

গত কয়েকদিনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুবিল ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. নজর”ল ইসলাম সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হন ২০১৬ সালে। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে বছরে পাঁচ মাস ১০ টাকা দরে চাল দেয় সরকার। মাসে প্রতিজনকে দেওয়া হয় ৩০ কেজি করে। নজর”ল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। কিন্তু তাঁর নামে তিন বছর ধরে চাল উত্তোলন করছে একটি চক্র। এছাড়াও গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের উজানীজোড়া গ্রামের মো. সবুজ, সুফিয়া খাতুন ও রাশেদা বেগম ২০১৫ সাল থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা বছরে দু’বার করে চাল নিতে পেরেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুর”র পর যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান হয়, তাতে দেখা যায়, তাঁদের নামে ইতোমধ্যে প্রতি কার্ডে ১৮ থেকে ২২ বার পর্যন্ত চাল নেওয়া হয়েছে। দেবিদ্বারে চাল বিতরণে অনিয়ম র”খতে তথ্যপ্রযুক্তির যে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে অনিয়ম দূর করা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, দেবিদ্বারের ইউএনও যা করেছেন, দেশের প্রতিটি জায়গায় তা হওয়া দরকার। তাঁর  নেওয়া এ ব্যবস্থা জাতীয়ভাবে গ্রহণ করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাব।’

ইউএনও রাকিব বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছে এটি পুরানো বিষয়। করোনাকালীন সময়ে এ ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অনিয়মটি চিরতরে বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করছি। মূলত এ ব্যবস্থাটি তৈরির জন্য ডিলার ও উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ধীরে ধীরে সব ক’টি ইউনিয়নে ব্যবস্থাটি চালু করা হবে। পুরো উপজেলার সবাইকে এর আওতায় আনব। ওয়েবসাইটির আরও হালনাগাদ করা হবে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘ওএমএসের চাল বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি। একই পদ্ধতিতে সরকারের অন্যান্য সেবাও দেওয়ার চেষ্টা করছি।