এ কে-৪৭ নামক মারণাস্ত্রটি কীভাবে এলো?
কুমিল্লার ধ্বনি
প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০১৯
বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীগুলো অত্যাধুনিক সব আগ্নেয়াস্ত্র থাকার পরেও একটি অস্ত্র সর্বাধিক ব্যবহার করে। আর সেটিই হলো ‘কালাশনিকভ’ নামে বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক পরিচিত এ কে-৪৭। তবে কীভাবে এলো এই মরণাস্ত্রটি তা হয়তো অনেকেরিই অজানা! তবে জেনে নিন এ কে-৪৭ এর অজানা ইতিহাস এবং এর বহুল ব্যবহারের আদ্যোপান্ত-
স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করা অর্থাৎ ইংরেজিতে যেটি ‘অটোমেটিক’ এর প্রথম অক্ষর ‘এ’ এবং কালাশনিকভ এর ‘কে’ থেকেই এসেছে, এ কে। এটি তৈরির সাল ১৯৪৭। তখন থেকেই এর নাম এ কে-৪৭। এখন স্বাভাবিকভাবেই জানতে ইচ্ছে হবে কে এই কালাশনিকভ যার নামে নির্মিত হয়েছিল এই ভয়াবহ আগ্নেয়াস্ত্রটি! মিখাইল কালাশনিকভ ছিলেন কবি পরিচয়ে লুকোনো এক প্রখর সৃষ্টিশীল মানুষ। ১৯১৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের শীতপ্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়ার কোরাইয়া নামের এক গ্রামের অস্বচ্ছল কৃষক পরিবারে জন্ম নেন মিখাইল কালাশনিকভ। আর আট-দশটি গরীব পরিবারের মতোই মিখাইলের ভাই বোনের কোনো কমতি ছিলোনা। নিরলসভাবে জন্ম দেয়ার ফলাফল ছিলো মিখাইলের ১৯ ভাইবোন যেখানে মিখাইলের অবস্থান ছিলো সপ্তদশ।
আর্থিক কষ্টের দরুন মাত্র সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পরে কোরাইয়ার এক ট্রাক্টর স্টেশনে চাকরি নেন মিখাইল। সেখানেই চাকরিরত অবস্থায় অস্ত্রের প্রতি অসামান্য ভালোবাসা জন্মে এই আগ্নেয়াস্ত্র প্রবক্তার। এরপর ১৯৩৮ সালে সোভায়িত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে ‘রেড আর্মিতে’ যোগ দেন মিখাইল। অস্ত্রের প্রতি আগ্রহ আর তার পারদর্শীতার কথা বিবেচনা করে মিখাইলকে একজন ট্যাংক মেকানিক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ধীরে ধীরে নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে ২৪ তম ট্যাংক রেজিমেন্টের ট্যাংক কমান্ডার হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।
১৯৪১ সালে আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত জার্মান বাহিনীর কাছে একরকম নাকানিচুবানি খাচ্ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এমনি এক কঠিন সময়ে ব্রায়ানাস্কের যুদ্ধে জার্মান বাহিনীর এক গুলিতে মারাত্নকভাবে আহত হন মিখাইল। আহত হওয়ার পর ছয়মাস ছুটি পেয়েছিলেন মিখাইল আর যেই ছুটি তার জন্য শাপে-বর হয়ে এসেছিলো। বিশ্রামরত অবস্থায় সোভিয়েত বাহিনীর উভয়সংকটময় অবস্থার কথা বিবেচনা করে নতুনভাবে তৈরিকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের নেশায় মত্ত ছিলো মিখাইলের উদ্ভাবনী মন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে যে স্বপ্ন চারা হয়ে উঠছিলো সুস্থ হওয়ার পর ইস্টবেজ অস্ত্র কারখানায় সেই চারায় পানি দিতে শুরু করেন মিখাইল।
এরপর ১৯৪৪ সালে আমেরিকান এ- মন এবং জার্মান এস আই জি-৪৪ অস্ত্রের নকশার সমন্বয়ে সর্বপ্রথম একটি কার্বাইনের ডিজাইন করেন তিনি। মিখাইলের ভাষায় তার তৈরিকৃত নকশায় সর্বোচ্চ কৌশলের পরিবেশন ঘটানো হয়েছিলো। কিন্তু বিধি বাম। বিভিন্ন খুঁত ধরে তার নকশা করা আগ্নেয়াস্ত্রটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় যুদ্ধ কতৃপক্ষ। একজন পাকা সৈনিকের স্বভাব অনুযায়ী দুই বছর পরে অর্থাৎ ১৯৪৬ সালে পূর্ববর্তী রাইফেলের উন্নত একটি সংস্করণ সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। এবারে নতুন এই ডিজাইন গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। তবে অল্প অল্প করে আবারো পরীক্ষা নীরিক্ষার পর কোথাও কোথাও ছোট্ট কিছু শুদ্ধির মাধ্যমে অবশেষে ১৯৪৭ সালে পূর্ণতা পায় এ কে-৪৭।
নতুন উদ্ভাবিত এই কার্বাইন রাইফেল ধীরে ধীরে সোভিয়েত বাহিনীর কাছে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। অবাক করার মতো হলেও সেই ১৯৪৯ সালেই এই কালাশনিকভ রাইফেল দিয়ে মিনিটে ৬০০ রাউন্ড গুলি করা সম্ভব হচ্ছিল। একটি সাবমিশন রাইফেলের এই সক্ষমতা বিশ্বের অন্যান্য সামরিক বাহিনীর কাছে রীতিমতো কল্পনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর এই সুযোগ নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ কে-৪৭ রপ্তানি করতে শুরু করে। সহজভাবে পরিচালনা করতে পারার কারণে উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সোভিয়েত ইউনিয়নের চরম শত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ভিয়েতনাম যুদ্ধে নিজেদের তৈরি এম-১৬ রাইফেল ফেলে সোভিয়েতের তৈরি একে-৪৭ ব্যবহার করতে শুরু করে।
তবে বহুল জনপ্রিয় এই রাইফেলের পেটেন্ট নিজেদের দখলে রাখতে পারেনি সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এই রাইফেলের স্বত্বাধিকার নিয়ে লড়ে যান মিখাইল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে এ কে-৪৭ রাইফেলের স্বত্ব ত্যাগ করতেই হয়। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবার কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ কে-৪৭ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তৈরি হতে থাকে। ফলে এক দশকেই সোভিয়েত ইউনিয়ন ২০০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আবিষ্কার হবার পর থেকে এই পর্যন্ত এ কে-৪৭ পার করেছে ৬০ বছরেরও বেশি সময়। আর এই সময়ের মধ্যে এই আগ্নেয়াস্ত্রটি প্রায় ১০০ মিলিয়নেরও বেশিবার উৎপাদিত হয়েছে।
বর্তমানে এই আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যবহৃত হচ্ছে ৫০টিরও বেশি দেশে। এই গ্যাসচালিত স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রটিকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ। চরম সত্যি এটি যে এ কে-৪৭ ছাড়া আধুনিক সামরিক বাহিনী কল্পনা করা অসম্ভব। পেটেন্ট সংরক্ষণ না করায় বিশ্বের প্রায় সকল সরকারি, বেসরকারি অস্ত্র কারখানাগুলোতে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত এবং ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র হলো এই এ কে-৪৭। পৃথিবীতে গুলি খেয়ে মারা যাওয়া মানুষগুলোর মধ্যে সিংহভাগের কপালে একে-৪৭ এর ১৬ দশমিক ৩ গ্রামের কার্টিজি জুটেছে। এ কে-৪৭ কে বলা হয় বিশ্বের প্রথম কার্যকর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। গ্যাসচালিত এই স্বয়ংক্রিয় রাইফেলটির জনপ্রিয়তার অন্যতম একটি কারণ হলো এটির সহজ ব্যবহার। প্রশিক্ষণে আসা নতুন সৈনিকও এক দুইবার দেখার পরে এই রাইফেল চালাতে সমর্থ হয়।
এই ব্যতিক্রমী রাইফেলটি যেমন পরিচালনায় সহজ তেমনি এর রক্ষণাবেক্ষণও ঝামেলাহীন। ধুলাবালি, কাদা-মাটি এমনকি পানিতে চুবানোর পরেও এ কে-৪৭ সমানভাবে কাজ করতে পারে। এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এটিকে রাস্তায় বসিয়ে অতঃপর রোলার চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরেও এটি দিয়ে গুলি চালানো সম্ভব হচ্ছে। জলে, স্থলে সব জায়গায় ব্যবহার করা যায় বলে একে বলা হয় পৃথিবীর সকল জায়গায় সর্বাধিক ব্যবহারোপযোগী রাইফেল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে এই রাইফেলে কখনো ব্যাকফায়ার হয় না যা এই সময়েও অন্যান্য রাইফেলের ক্ষেত্রে কল্পনা করা অসম্ভব।
এ কে-৪৭ এর বুলেটের মারাত্নক ভেদনক্ষমতা অন্যান্য রাইফেলের তুলনায় এটিকে অধিকতর ভয়ংকর করে তুলেছে। ১৬ দশমিক ৩ গ্রাম ওজনের ৭ দশমিক ৬২×৩৯ মি.মি এর প্রতিটি বুলেট সেকেন্ডে ৭১৫ মিটার ছুটে গিয়ে ৫ ইঞ্চি কংক্রিট কিংবা ৮ ইঞ্চি কাঠ ভেদ করতে সক্ষম। একইসাথে এই রাইফেল দিয়ে সিঙ্গেল শট, ব্রাশফায়ার এমনকি গ্রেনেড ছোঁড়ারও সুবিধা রয়েছে। এ কে-৪৭ উদ্ভাবনের কারণে ২০০৯ সালের ১০ নভেম্বর রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পদক ‘হিরো অব রাশা’ পান মিখাইল কালাশনিকভ। ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর ৯৪ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান পৃথিবীর ভয়ংকর এই মারণাস্ত্রের জনক।
- ব্রাহ্মণপাড়ায় সম্পত্তির রক্ষায় অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবাদ
- বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন?
- কুমিল্লা পুলিশ লাইনে সামনে রাস্তা কেটে ড্রেন নির্মাণ, জনদুর্ভোগ
- নবীনগরে পুকুরে ডুবে প্রাণ গেল দুই বোনের
- গরগর শব্দে মুখরিত দর্জিপাড়া
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দিন দুপুরে ব্যবসায়ীর সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাই
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ চিহ্নিত ছিনতাইকারী গ্রেফতার
- জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে পুলিশ পরিচয়ে টাকা দাবি
- চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
- চাঁদপুরে ২২ জেলে আটক, ১৩ জনের কারাদণ্ড
- মেঘনায় বাল্কহেডে অভিযান, আটক ৯
- চাঁদপুরে পিকআপ-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
- কুমিল্লায় স্বামী হত্যায় স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড
- অর্ধেক দামেও বিক্রি হচ্ছে না তরমুজ!
- ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
- নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
- এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
- কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
- গাজায় নিহত বেড়ে সাড়ে ৩২ হাজার ছুঁই ছুঁই
- ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের ট্রেন টিকিট বিক্রি শুরু
- চাহিদার চেয়েও ‘উদ্বৃত্ত’চাল, তবু দাম বাড়ছেই
- শাহজালাল বিমানবন্দরে ডলার কারসাজি ও পাচারের শক্তিশালী চক্র সক্রিয়
- দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের খাবার
- লঞ্চযাত্রীদের ব্যাগ ধরে টানাটানি, আটক ৬
- কুমিল্লায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল যুবকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ
- তুচ্ছ ঘটনায় ছোট ভাইয়ের হাতে প্রাণ গেল বড় ভাইয়ের
- এবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নজর কাড়ল সেই পুতুল নাচের দল
- ট্রেনে কাটায় দুই পা হারালেন বৃদ্ধা
- অপরাধের আখড়া আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন
- আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু
- ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছেন মুশতাক
- গার্ডেন থিয়েটার কুমিল্লার একক নাট্য প্রদর্শনী
- রমজানে যে সূচিতে চলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পিকআপ-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
- ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
- দুই শিশুকন্যাসহ বিষপান, প্রাণ গেল মায়ের
- বাজার স্বাভাবিক রাখতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের ভোগ্যপণ্য বিক্রি
- কুমিল্লায় মহাসড়কের পাশে জামালপুরের পৌর কাউন্সিলরের লাশ
- অসামাজিক কাজে লিপ্ত, ৫ নারী-পুরুষ আটক
- ‘আমার মেয়ে ফোন দিয়ে কেঁদে কেঁদে বলছিল, বাবা আমাকে বাঁচাও’
- জাহাজসহ জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের সবশেষ অবস্থা জানা গেছে
- বিশেষ ‘মার্কায়’ মেলে পাসপোর্ট, চুক্তিতে আবেদন জমা নেন আনসার সদস্য
- পাশাপাশি কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাবা-মা ও ছেলে-মেয়ে
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
- শিক্ষার্থীদের সামনেই শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা
- কুমিল্লা সিটি উপ-নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ছাত্রলীগের গোলাগুলি
- রমজান উপলক্ষে গাজায় ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশসহ ৯ দেশ
- গাজায় ‘জঘন্য অপরাধ’ বন্ধের আহ্বান সৌদি বাদশাহর
- আজ সারাদেশে ব্যাহত হবে ইন্টারনেট সেবা
- স্পর্শকাতর মামলার সাজা নিশ্চিত করতে হবে: আইজিপি