ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

এই দিনে কারবালার মরু-প্রান্তরে পৌঁছান ইমাম হুসাইন (আ)

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

আজ থেকে ১৩৮০ চন্দ্র-বছর আগে ৬১ হিজরির এ দিনে (দোসরা মহররম) কারবালার কালজয়ী বিপ্লবের মহানায়ক হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) বিশ্বের সবচেয়ে করুণ অথচ বীরত্বপূর্ণ ঘটনার অকুস্থল কারবালার মরু-প্রান্তরে এসে পৌঁছেন। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। সর্বোচ্চ ত্যাগের দৃষ্টান্ত রেখে ৮ দিন পর মানবতার শত্রুদের হাতে এখানেই তিনি শাহাদত বরণ করেছিলেন।

কুফায় নিযুক্ত ইয়াজিদের গভর্নর নিনেভা বা নেইনাভা অঞ্চলের কারবালা প্রান্তরে ইমাম হুসাইনের কাফেলার আগমন সম্পর্কে জানতে পারে। পানি, ঘাস ও দুর্গবিহীন এই শুস্ক এলাকায় কুফাগামী ইমামের কাফেলাকে নিয়ে আসার পেছনে ইয়াজিদ-বাহিনীর জেনারেল হোরের ভূমিকা ছিল। এ রকম একটি এলাকায় ইমামের কাফেলাকে আসতে বাধ্য করার জন্য হোরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

ইমাম হুসাইন (আ) কারবালায় পৌঁছেই জানতে পারেন ওই এলাকার নাম কারবালা। তখনই তিনি জানান যে, সেখানে তার ও সঙ্গীদের শাহাদাত ঘটবে এবং তাদের নারী ও শিশুদের বন্দি করবে ইয়াজিদ বাহিনী। এ দিনেই তিনি কাইস বিন মাসহারকে দূত হিসেবে কুফায় পাঠান।

ইমাম তার কাছে একটি চিঠি দিয়েছিলেন কুফায় তার সমর্থক নেতাদের উদ্দেশ্যে। কিন্তু ইয়াজিদের সেনারা কাইসকে পথে গ্রেফতার করে। কাইস ইয়াজিদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে শহীদ করা হয়।

ইবনে জিয়াদ দোসরা মহররম ইমামের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে সে জানায়, তাকে ও তার সঙ্গীদেরকে ইয়াজিদের প্রতি বায়আত বা আনুগত্যের অঙ্গীকার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এর অন্যথা হলে তাদেরকে হত্যা করতে বলেছেন ইয়াজিদ। ইমাম এ চিঠির জবাব না দিয়ে বললেন, ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে।

জালিম ও মহাপাপিষ্ঠ শাসক ইয়াজিদের প্রতি আনুগত্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি মহাবিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন যাতে নানাজান বিশ্বনবী (সা.)’র ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা পায় এবং প্রকৃত ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার পথ খুলে যায়। মদীনা থেকে মক্কায় গিয়ে তিনি ইয়াজিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এরপর নিরাপত্তার কারণে এবং পবিত্র ও শান্তির নগরী মক্কায় রক্তপাত এড়ানোর জন্য তিনি হজ না করেই ইরাকের কুফার দিকে রওনা দেন।

ইয়াজিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন শুনে কুফার দোদুল-মনা লোকেরা তাকে ইসলামী বিপ্লবের নেতৃত্ব দেয়ার ও ইসলামী হুকুমাত কায়েমের মাধ্যমে মদ্যপ, জুয়াড়ি ও ব্যভিচারী ইয়াজিদের প্রজা হওয়ার কলঙ্ক থেকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।

কুফাবাসী’র পক্ষ থেকে ১৮ হাজার চিঠি তাঁর কাছে পৌঁছে এবং প্রতিটি চিঠির মধ্যে ১০০ জনের স্বাক্ষর ছিল। কিন্তু প্রয়োজনের সময় কারবালায় খুব কম লোকই তাকে সহায়তা দিয়েছে। ফলে ইয়াজিদের প্রায় ত্রিশ হাজার সদস্যের সুসজ্জিত বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ থেকে ১৪০ জন সঙ্গী নিয়ে তিনি বীরের মত লড়াই করে শহীদ হন।

এই অসম লড়াইয়ে তার পরিবারের অনেক সদস্যসহ ৭২ জন সঙ্গী শহীদ হন। কারবালা বিপ্লব মুসলমানদের মধ্যে প্রকৃত ইসলামের চেতনা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করেছে। আর এ জন্যই বলা হয়: ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর কারবালা কি বাদ। অর্থাত প্রতিটি কারবালার পরই জীবিত হয় ইসলাম।

ইমাম হুসাইন (আ.) মনে করতেন তার শাহাদত ও রক্তদান ছাড়া যদি ইসলাম পুনরুজ্জীবিত না হয় তাহলে শাহাদতই উত্তম এবং ইয়াজিদের মত শাসক যদি বিনা বাধায় ও আপত্তিতে ‘ইসলামী সমাজের নেতা’ হন তাহলে ইসলাম চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। সত্যের পথে শাহাদত মধুর চেয়েও মিষ্টি এই সংস্কৃতি চালু করে গেছেন কারবালার বীর শহীদরা। ইসলামকে আর কোনো কিছুই এত প্রাণ ও মর্যাদা দেয় না যা দেয় শাহাদত। কবি নজরুলের ভাষায়: আঁজলা ভরে আনলো কি প্রাণ কারবালাতে বীর শহীদান