ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনা ঝুঁকিতে সীমান্তের মানুষ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২০  

লালমনিরহাট সীমান্তবর্তী এ জেলার প্রায় ২২ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়াহীন ভারতীয় সীমান্ত। লালমনিরহাটের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর অধিকাংশ মানুষ অবৈধ পথে চোরাচালান বা শ্রমিকের কাজে ভারতে যাতায়াত করে থাকেন। এদের অনেকের ভারত বাংলাদেশ দুই দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে বলেও স্থানীয়রা জানান। করোনা পরিস্থিতিতেও অনেকে ভারতে যাতায়াত আগের মতই স্বাভাবিক রেখেছেন। যার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে করোনা ঝুঁকিতে আতঙ্কিত স্থানীয়রা।

বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্কের নাম প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। এরইমধ্যে বাংলাদেশেও এই করোনাভাইরাসের সংক্রামণ দেখা দিয়েছে। একমাত্র সচেতনতাই মুক্তির পথ হলেও সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের অধিকাংশ মানুষ এখনো অসচেতন ভাবেই চলাফেরা করছেন। ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন দেশের সুধিজনের। 

তিস্তার আর ধরলার নদীর জেলা লালমনিরহাটের অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। তিস্তা ও ধরলা নদীর বুকে জেগে উঠা প্রায় অর্ধশত চরাঞ্চলে হাজার হাজার পরিবারের বসবাস। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে নিত্য লড়াই করে চলা চরাঞ্চলের মানুষ ব্যস্থ রয়েছে নিজেদের জীবিকার কাজে। সচেতন তো দূরের কথা আসন্ন করোনাভাইরাস সম্পর্কে কোনো ধারণাই তাদের নেই। তাদের সচেতন করতে স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না লালমনিরহাট জেলা জুড়ে। অজ্ঞ-অশিক্ষিত মানুষগুলো এখানো জানে না করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কি করা উচিৎ। কিভাবে চলা ফেরা করতে হবে এটা অজানার কারণেই ওই সব চরাঞ্চলের লোকজন আগের অভ্যাসেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন যে যার মত। 

চরাঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষদের দ্রুত করোনা প্রতিরোধে সচেতন করা না হলে দ্রুত মহামারী আকার ধারণ করবে স্বাস্থ্য অসচেতন ও পুষ্টিহীন এ জনপদে। চরাঞ্চলে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো কষ্টকর। সেখানে করোনার মত মরণঘাতি ভাইরাস প্রতিরোধে সেবা প্রদান অসম্ভব হয়ে পড়বে। ফলে আক্রান্ত শুরু হলে মুহুর্তে মহামারী আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা। 

তাদের দাবি, শহরের বাসিন্দাদের মত দ্রুত চরাঞ্চলের মানুষকে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সচেতন করতে হবে। একই সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার আগেই তাদের খাদ্য নিশ্চিত করে চলাফেরা বন্ধ করে দিতে হবে। এর ব্যতয় ঘটলে বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বিদেশ ফেরতরা হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে অবাদে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন গ্রামে। সীমান্তে কঠোর নজরদারী এবং গ্রামীণ ও চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া অজ্ঞ অশিক্ষিত জনগোষ্ঠিকে মাইকিং করে দ্রুত সচেতন করে স্বাস্থ বার্তা মেনে চলতে বাধ্য করার পাশাপাশি গ্রামীণ হাটবাজারে গণজমায়েত বন্ধ করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জেলার সচেতন মহল। 

ভারতীয় সীমান্ত ঘোঁষা দুর্গাপুরের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও ছাত্র ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, এ এলাকার শত শত মানুষ গরুসহ বিভিন্ন চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তারা প্রায় সময় অবৈধ পথে ভারতে যাতায়াত করছে। অনেকে শ্রমিকের কাজেও ভারতে যাচ্ছেন। এক দুই সপ্তাহ কাজ করে ফিরছেন। তাদের কোনো হিসাব রাখা হচ্ছে না।  ফলে জেলার সীমান্ত গ্রামগুলো সব থেকে বেশি করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে রয়েছে।

তিস্তা চরাঞ্চল গোবর্দ্ধন গ্রামের স্কুল শিক্ষক কাজী শফিকুল ইসলাম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, চরাঞ্চলের মানুষ করোনাভাইরাস তো বুঝেই না, স্বাস্থ্য সচেতনও নয়। খেটে খাওয়া মানুষজন জীবিকার তাগিদে কাজে ছুটছেন এবং চলাফেরায়ও নেই সীমাবদ্ধতা। করোনা সচেতনতার কথা বলতে গেলে এসব মানুষের ধারনা, ভয়ে ঘরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। আর করোনা ভাইরাস এলেও মরতে হবে। আল্লাহ যা করার করবে। এই বৃহত্তর চরবাসীকে সচেতন করতে না পারলে করোনাভাইরাসে বড় খেসারত দিতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি। 

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নিমর্লেন্দু রায় ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, জনসচেতনতার জন্য মাঠপর্যয়ে স্বাস্থ্যবার্তার লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। মাইকিং করলে আতঙ্কিত হতে পারে তাই করা হচ্ছে না। ৭৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে ও ভারত ফেরত একজনকে পাটগ্রাম হাসপাতালে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। করোনার আইসোলেশন বাড়াতে লালমনিরহাট রেলওয়ে হাসপাতাল ও লালমনিরহাট সরকারি কলেজের নবনির্মিত মহিলা হোস্টেল চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকট রয়েছে। যা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তৌহিদুল আলম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, লালমনিরহাট ডিসির দেয়া পরামর্শে সীমান্তে নজরদারী বাড়াতে ক্যাম্পগুলোতে জরুরি নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সীমান্তবাসীকে সীমান্ত অতিক্রম না করাতে নির্দেশনা দেয়া হবে। 

ডিসি আবু জাফর ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, সীমান্তে নজরদারী বাড়াতে বডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের সভায়ও বলা হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে জেলাবাসীর সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি মাইকিং করা হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবার্তা মেনে চলার আহবান জানান তিনি।