ব্রেকিং:
কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন র‍্যাব কর্মকর্তা দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ রাত ১১টার পর চা-পানের দোকান বন্ধের নির্দেশ রাত ৮টার পর শপিংমল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেশে পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনো দিন হবে না এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল, ৩-৪ মিনিটের জন্য স্বপ্ন ভেঙে গেল এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি এসটিপি ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে না : গণপূর্তমন্ত্রী সাড়ে ৫৮ লাখ টাকার হাঙর ও শাপলাপাতা মাছ জব্দ পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক
  • বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনার মৃত্যু নিয়ে ইতালির চিকিৎসকের মর্মস্পর্শী বার্তা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১ এপ্রিল ২০২০  

মড়কের মতো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। মৃত্যুর সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। চিকিৎসকরা সর্বাত্বক চেষ্টা করেও মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে পারছে না। করোনার করুণ মৃত্যু নিয়ে হতাশায় রয়েছেন বিশ্বের অনেক দেশের চিকিৎসকরা। এর মধ্যে ইতালির গাভাটেসনি হাসপাতালের চিকিৎসক ড্যানিয়েল ম্যাককিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত বৃদ্ধদের মৃত্যু নিয়ে হৃদয়বিদারক বর্ণনা ও মর্মস্পর্শী বার্তা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

ওই চিকিৎসক লিখেন, ইতালিতে এখন ভয়াবহ ট্রাজেটি চলছে। বৃদ্ধ রোগীরা মৃত্যুর আগে চোখের পানি ফেলছেন। কাছের মানুষরা তাদের বিদায় দিতে পারছেন। মৃত্যুর সময় হয়ত কাউকে পাশে পাওয়ার ইচ্ছা ছিল তাদের। কিন্তু সজ্ঞানে, কষ্টকে সহ্য করতে করতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন তারা। মৃত্যুর সংখ্যার মধ্যে বেশিরভাগ স্বামী ও স্ত্রী। বৃদ্ধ দাদা-দাদি, নানা-নানি তাদের নাতিদের মুখ শেষবারের মত দেখার সৌভাগ্য হচ্ছে না। করোনাভাইরাস ফ্লুর চাইতেও ভয়াবহ। এটি ভিন্ন রকমের অসুখ।তাই করোনাভাইরাসকে ফ্লু বলা উচিত নয়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ হলে অসম্ভব বেশি জ্বর হয়। শ্বাসকষ্ট প্রচণ্ড হয়। মনে হয়, মৃত্যুর সমুদ্রে এই ডুব দেয়া হচ্ছে। রোগীরা হাসপাতালে আসতে নারাজ। কিন্তু একটু অক্সিজেন পেতে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে চান বৃদ্ধরা।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে কিছু সংখ্যক ওষুধ। সেগুলো ব্যবহার করে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে রোগীর অবস্থার ওপর সফলতা বা ব্যর্থতা আসে। অনেকে যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন। তাদের জন্য চিকিৎসক ও নার্সরা কাঁদছেন। কারণ চোখের সামনে তাদের জীবন চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

প্রতিদিন প্রচুর রোগী হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতালে বেড নেই। সবাই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন।

করোনাভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক। ভাইরাসটি একেবারেই অন্যরকম থাকায় মানুষের জন্য ভয়ংকর। ইতালিতে ৬৫ বছরের বেশি মানুষের প্রায় প্রত্যেকের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বা যেকোনো রোগে আক্রান্ত। কোনো কোনো তরুণদের জন্যও ভাইরাসটি ভয়ানক।

হাসপাতালে রোগীদের দেখলে তরুণরাই ভড়কে যাবে। সার্জারির কক্ষগুলো আইসিইউতে রূপান্তর করা হচ্ছে। করোনার সঙ্গে সবাই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত পরীক্ষায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত পজিটিভ আসছে।

সব রোগীর একরকমের অভিযোগ অসম্ভব জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি, ডুবে যাবার মত দমবন্ধ অনুভূতি। প্রায় সবাই আইসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কেউ কেউ অক্সিজেন মাস্কে শ্বাস নিতে কষ্ট বোধ করছেন। এখন অক্সিজেন মেশিন সোনার চাইতেও দামি। কি দ্রুত এসব ঘটে গেল! আমরা সবাই ক্লান্ত। বিশ্বাস করতে পারছি না।

সবাই মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করে চলছি। চিকিৎসকরা নার্সদের মতো অবিরাম কাজ করছে। দুই সপ্তাহ হয় বাসায় যাই না। পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য বেশি শঙ্কিত । বাচ্চাদেরদ সঙ্গে ক্যামেরায় কথা বলছি। মাঝে মাঝে স্ত্রীর ছবি দেখে কাঁদি। এ নিয়ে কারো দোষ খোঁজে পাইনি।

রোগটি ভয়ংকর নয় বলে যারা খবর ছড়িয়েছিল তাদের সব দোষ। সাধারণ ফ্লু দাবি করায় কোনো অগ্রীম ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে।

চিকিৎসকদের কথা শুনুন। দয়ার করে ঘর ত্যাগ করবেন না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ার চিন্তা করবেন না। মাস্ক ব্যবহার করুন। পেশাগত মাস্ক চিকিৎসকদের ব্যবহার করতে দিন। কারণ মাস্কের অভাবে চিকিৎসকরাও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। এখন চিকিৎসকরা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।

চিকিৎসকের পরিবারের অনেকেই জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সবাইকে বাঁচানোর চেষ্টা করুন। বৃদ্ধদের ঘর থেকে বের হতেই দেবেন না। পেশাগত কারণে ঘরে থাকতে পারছি না। আমরা রোগীদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন শরীরে অসুখ ও মনে কষ্ট নিয়ে চলছি। কাল সব ঠিক হওয়ার আশায় সবকিছু ভুলতে চেষ্টা করি। এটাই চিকিৎসকের পেশা। মানুষকে বাঁচানোই আমাদের পেশা। 

করোনাভাইরাস সংক্রমিত হলেও সাবধান থাকুন।গণজমায়েত এড়িয়ে চলুন। সিনেমা, জাদুঘর, খেলার মাঠে ভুলেও যাবেন না। 

বৃদ্ধদের কষ্ট বুঝতে চেষ্টা করুন। আপনার সচেতনতাই তাদের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে। সমস্ত ইতালীয়ানদের জন্য এই চিঠিটি শেয়ার করুন। সমস্ত কিছু শেষ হওয়ার আগেই যেন তারা চিঠিটি পড়তে পারে।