কালেক্টরেট কর্মচারীদের ২য় দফায় কর্মবিরতি শুরু

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও উপজেলা ভূমি অফিসে নিয়োজিত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তনের বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত ঝুলিয়ে রাখায় কর্মচারীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। 

পদবী পরিবর্তনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা দীর্ঘদিন যাবত কর্মবিরতি পালনসহ স্মারকলিপি প্রদান এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণের মাধ্যমে অসংখ্যবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোন উদ্যোগ না নিয়ে রহস্যজনক কারণে স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে।

প্রায় দশ বৎসর পূর্বে সরকার কর্তৃক কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তনের লক্ষে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। এ কমিটি কয়েকবার মিটিং করে একটি সমন্বিত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২০১০ সালের ২৫ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এর সভাপতিত্বে সর্বশেষ সভায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার ও সহকারি তহশিলদার) পরিবর্তন করত: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারীদের নিয়োগ বিধি ১৯৮৬ পরিবর্তন পূর্বক পদ পরিবর্তনের সুপারিশ করেন! তৎপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরিত প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাঠ প্রশাসনের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীগণের পদ পরিবর্তনের সারসংক্ষেপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর বিষয়টিকে রহস্যজনক কারণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফাইল চাপা দিয়ে রাখা হয়। অতঃপর আবারও কর্মচারীরা মাঠে নেমে বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু করে।

এরপর মে ২০১৪ এর ২য় পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মাঠ প্রশাসনে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীগণের পদবি পরিবর্তন এবং বেতন স্কেল উন্নতকরণের প্রস্তাব যথাযথভাবে বিবেচনাক্রমে নিষ্পত্তি করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত সম্মতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৭ জুন ২০১৪ তারিখে ১৭৫ নং স্মারকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ আদেশ আজও প্রতিপালন করা হয়নি। এতে করে সারা দেশের বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। যার ফলে পদবী পরিবর্তন ও গ্রেড উন্নীত করণের দাবীতে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সারা দেশের ন্যায় ২য় দফায় পূর্নদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছে কুমিল্লা জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীরা। 

২৫, ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি টানা তিনদিন সকাল ৯টায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তারা এ কর্মবিরতি করবে বলে জানা যায়।  ১ম দফায় গত ২০, ২১  জানুয়ারী ২ঘন্টা, ২২, ২৩ জানুয়ারী ৩ ঘন্টা, ২৭, ২৮ জানুয়ারী ৪ ঘন্টা কর্ম বিরতি পালন করে তারা। ১ম দফা কর্মবিরতি পালন করার পর এসএসসি পরীক্ষা ও ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কারণে কর্মসূচি শিথিল করে ২য় দফায় পূর্নদিবসের কর্মবিরতি শুরু করেন কর্মচারীরা।

বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি মো: আবু হানিফ, সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মোঃ নাছির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: আরিফুর রহমান জানান দাবী মানা না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী এবং সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লা কালেক্টরেট এবং জেলার ১৭টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও ১৬টি উপজেলা ভূমি অফিসে এ কর্মসূচি চলবে। তারা জানান দীর্ঘদিনের দাবীকৃত পদবী ও গ্রেড পরিবর্তনে তাদেরকে বারবার আশ্বাস দিয়েও তা বাস্তবায়ন না করায় তারা এ কর্মবিরতি শুরু করেছে।