ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কুমিল্লা নগরীর চার ওয়ার্ডের লকডাউন নিয়ে নানা সমস্যা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২০  

করোনা সংক্রমণ রোধে কুমিল্লা নগরীর চারটি ওয়ার্ড লকডাউন করা হয়। গত ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া এ লকডাউন চলবে আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত। বুধবার লকডাউনের পঞ্চম দিন শেষ হলো। তবে লকডাউনের এ পাঁচ দিনে স্বেচ্ছাসেবীদের স্বেচ্ছাচারিতায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে। অন্য দিকে রাতে-বিরাতে নানা ফরমায়েশ পেয়ে ত্যক্ত বিরক্ত স্বেচ্ছাসেবীরাও।

গত ২১ জুন নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সুমন সালাউদ্দিন নামে এক সংবাদকর্মীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছেন লকডাউন গেটে দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবকেরা। পরে বহু কষ্টে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান। এ নিয়ে ওই সংবাদকর্মী তার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। যার সবটাই ছিলো তার স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এক নির্মম কাহিনি নিয়ে।

রেসকোর্সে বসবাসরত চিকিৎসকেরা জানান, লকডাউনে কারা বের হতে পারবে কারা বের হতে পারবে না  এ বিষয়ে জানেন না স্বেচ্ছাসেবকেরা। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই নীরবে সয়ে যান চিকিৎসকেরা। 

তবে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে লকডাউনে মানুষ বিড়ম্বনার শিকার এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ। তিনি জানান, নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড রেড জোনের আওতাভুক্ত। নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হয়। এ সময় হয়তো কোনো স্বেচ্ছাসেবীর সঙ্গে টুকটাক কথা কাটাকাটি হয়। 

কাউন্সিলর জাবেদ আরো বলেন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশ চিকিৎসকেরা বাস করে। তারা প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে। এভাবে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা প্রতিরোধ সম্ভব নয়। আমি পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ করবো চিকিৎসক ও পুলিশ যারা ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন তাদের যেন আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত ছুটি দেয়া হয়। অন্যথায় করোনা প্রতিরোধ সম্ভব নয়।

এদিকে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নবাববাড়ী চৌমুহনীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে লকডাউন করা হয়েছে। নানুয়ার দিঘীরপাড় হয়ে সকালে ইপিজেডের গার্মেন্টকর্মীদের যেতে দেয়া হলেও ডাক্তারদের যাওয়া নিয়ে তুমুল বিরোধ ঘটে স্বেচ্ছাসেবীদের। 

এছাড়া ১০ নম্বর ওয়ার্ডবাসী জানান, সকালে অন্তত ৫ হাজার গামেন্টস ওয়ার্কার বের হয়ে যায়। তারা আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসে। লকডাউন করা গেটে কোনো জীবাণুনাশক টানেল নেই। নেই হ্যান্ড ওয়াশের ব্যবস্থা। লকডাউনে এতগুলো লোক বাইরে যায়, সন্ধ্যায় আবার ফিরে আসে। এভাবে লকডাউন সফল হবে না। 

নবাববাড়ী চৌমুহনী নগর মাতৃসদনে দায়িত্ব পালন করেন ডা. ফারজানা জনি। তিনি জানান, একজন ডাক্তার হওয়ার পরেও প্রতিদিন নবাববাড়ী চৌমুহনীতে এসে স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে বাক-বিতন্ডা সৃষ্টি হয়। 

বিষযটি স্বীকার করেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইমরান বাচ্চু। তিনি বলেন, আমরা কি করবো। সিদ্ধান্ত হলো লকডাউনকৃত এলাকার বাসিন্দারা বাসায় বসে অফিসের কাজ করবেন। অথবা তারা সাধারণ ছুটির আওতাধীন থাকবেন। কিন্তু কারো অফিস থেকে ছুটি দেয়া হয়নি। ফলে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে। মানবিক কারণে আমরা তাদের যেতে দেই। তবে এতে করে লকডাউন শতভাগ সফল হবে না। আমার ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রতিনিয়ত মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ডাক্তারের বিষয়টা নিয়ে নগর মাতৃসদন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। ডাক্তারকে না চেনার কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন স্বাভাবিক।

গার্মেন্টস ওর্য়াকারদের জন্য টানেলের বিষয়ে কাউন্সিলর ইমরান বাচ্চু জানান, জীবাণুনাশক টানেল সরকার অনুমোদিত নয়। তবে আমরা হ্যান্ড ওয়াশের ব্যবস্থা করেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে। 

অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যে লকডাউন চলছে নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডবাসীর একাংশ জানালেন, স্বেচ্ছাসেবীরা চরম দুর্ব্যবহার করছে। আবার স্বেচ্ছাসেবীদের অভিযোগ ওয়ার্ডবাসী লকডাউন পালনে সহযোগিতা করছে না। ওর্য়াডবাসীর অভিযোগ আমরা ঘরে থাকছি। তবে এই ওয়ার্ডে অন্তত ৪০০-৫০০ শ্রমিক অনায়াসে ইপিজেডে যাওয়া আসা করছে। তাহলে ওয়ার্ডে করোনা সংক্রমণ সম্ভব হবে না। 

এ বিষয়ে কাউন্সিলর শাখাওয়াত উল্লাহ শিপন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি লকডাউনে যেন কারো কোনো সমস্যা না হয়। তবে এ ওয়ার্ডে অনেক গার্মেন্টসকর্মী থাকে। তাদের জন্য মানবিক হতে হয়। 
স্বেচ্ছাসেবকদের দুর্ব্যহারের বিষয়ে কাউন্সিলর শিপন বলেন, এত মানুষের আবদার রাখতে গিয়ে ছোটোখাটো ভুল হয়। তবে লকডাউন করা হয়েছে ওয়ার্ডবাসীর জন্য। এখন ওয়ার্ডবাসী যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে কীভাবে আমরা করোনা মুক্ত হবো। 

খুব একটা সমস্যা নেই নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে লকডাউন পালন হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার রাতে এ ওয়ার্ডের প্রিন্সরোডে লকডাউনের বেড়া চুরি হয়ে যায়। এছাড়া ওই ওয়ার্ডে আর তেমন সমস্যা নেই। 

স্থানীয়রা জানালেন, তারা লকডাউনের নিয়ামাবলী মেনে দিন পার করছেন। 

কাউন্সিলর মঞ্জুর কাদের মনি জানান, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারি নির্দেশনা মেনেই চলছে লকডাউন।