ব্রেকিং:
ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

কুমিল্লায় স্থবিরতায় ভুগছে মডেল মসজিদ প্রকল্প

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর ২০২০  

কুমিল্লার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অপেক্ষার পালা আর ফুরোচ্ছে না। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করতে সরকার যে বিশাল প্রকল্পযজ্ঞ হাতে নিয়েছে, কুমিল্লায় সেই প্রকল্পের কাজ চলছে ধীর গতিতে। প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার ১৭টি উপজেলায় মোট ১৮টি মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অনেক পিছিয়ে আছে সেই কাজ। এমনকি, কবে নাগাদ কুমিল্লার এই ১৮টি মডেল মসজিদের কাজ শেষ হবে, তা পরিষ্কার করে বলতে পারছে না দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিংবা গণপূর্ত বিভাগ।

জানা যায়, ২০১৭ সালের গৃহীত সরকারি প্রকল্পের অংশ হিসেবে সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ হওয়ার কথা। এর মধ্যে কুমিল্লা জেলাতেই হওয়ার কথা ১৮টি। কিন্তু ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগ কুমিল্লা কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, দাউদকান্দি উপজেলার মডেল মসজিদ ছাড়া আর কোনোটির তেমন অগ্রগতি নেই। লালমাই, বরুড়া, মনোহরগঞ্জ, হোমনা, তিতাস, মেঘনা, মুরাদনগরে এখনো মডেল মসজিদ নির্মাণের জমি নির্ধারণই হয়নি। এসব উপজেলায় কোথাও সরকারি জমি, কোথাও দান কিংবা অধিগ্রহণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এছাড়া চান্দিনায় দোতলা ছাদ ঢালাই, বুড়িচংয়ে গ্রেটবিম ঢালাই হচ্ছে। লাকসাম ও দেবিদ্বারে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে।  সদর দক্ষিণে মাত্র জমি পাওয়া গেছে। ব্রাহ্মণপাড়ায় দোতলার কাজ চলছে। কুমিল্লা সদর ও সিটি করপোরেশনে মডেল মসজিদের কাজ চলছে। নাঙ্গলকোটে গ্রেটবিমের কাজ শুরু হয়েছে আর চৌদ্দগ্রামে টেন্ডার হলেও জমি মেলেনি।

মডেল মসজিদের অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুস সাত্তার জানান, মডেল মসজিদ নির্মাণে মূল প্রতিবন্ধকতা জমি। এছাড়া বাজেটেও আরো বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘করোনার সময়ে কাজ থেমে থাকায় আমরা পিছিয়ে গেছি। তবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমরা ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাউদকান্দির মডেল মসজিদটি নির্মাণ শেষ করবো।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. নাজমুস সাকিব জানান, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিককেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পগুলোতে জেলা শহরে লিফট-এসিসহ চারতলা এবং উপজেলা শহরে তিনতলাবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ হবে। এছাড়াও নারী ও পুরুষের পৃথক নামাজ ও অজুর স্থান, পাঠাগার, গবেষণাকেন্দ্র, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন, পর্যটকদের আবাসন, গাড়ি পার্কিং, লাইব্রেরি, হিফজ মাদ্রাসা, দাফন-কাফনের ব্যবস্থা এবং ইমাম ও মুয়াজ্জিনের থাকার ব্যবস্থাসহ নানান সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুমিল্লার উপরিচালক সরকার সারোয়ার আলম বলেন, সবগুলো মসজিদই একই ডিজাইনে তৈরি হবে। পূর্ব-পশ্চিমে ১৭০ ফুট এবং উত্তর-দক্ষিণে ১২০ ফুট জায়গা নিয়ে কমপক্ষে ৪৩ শতাংশ কওে জায়গা প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি, খুব দ্রুত কাজগুলো সম্পন্ন করতে। মূলত জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণেই আমরা পিছিয়ে আছি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে মডেল মসজিদ স্থাপন প্রকল্পের বরাদ্দের হিসাব থেকে জানা যায়, শুরুতে কুমিল্লা জেলা সদরে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা, আদর্শ সদর উপজেলায় ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, সদর দক্ষিণে ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, বরুড়ায় ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, বুড়িচংয়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার, চান্দিনায় ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, চৌদ্দগ্রামে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার, দাউদকান্দিতে ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, দেবিদ্বারে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার, হোমনায় ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার, লাকসামে ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, মুরাদনগরে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার, নাঙ্গলকোটে ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, মেঘনায় ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার, তিতাসে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার, মনোহরগঞ্জে ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার এবং লালমাইয়ে ১২ কোটি ৬৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

মডেল মসজিদগুলোর নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এ প্রসঙ্গে আলহাজ্ব শাহ মোহাম্মদ আলমীর খান বলেন, মডেল মসজিদগুলো স্বচ্ছতার সাথে দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করা উচিত। সরকারের এটি একটি অনন্য উদ্যোগ। এতে করে প্রতিটি উপজেলায় ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর নান্দনিকতা প্রকাশ পাবে। সাধারণ মানুষ নামাজ-কালামসহ অন্যান্য ইসলাম ধর্মীয় কার্যক্রম সহজে করতে পারবেন।

জানতে চাইলে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন জমি পছন্দের বিষয়ে নানান সময় নানান কথা বললেও আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করতে অথবা কেউ দান করলে এবং সেটি নিয়ে কোনো জটিলতা থাকলে সেগুলোও দ্রুত শেষ করতে। কুমিল্লায় মডেল মসজিদ প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে আমরা সচেষ্ট আছি।’