ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

কেন আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক চুরি করা হয়েছিল?

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

জার্মানির একটি ছোট শহরে একটি সম্ভ্রান্ত ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহন করেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানি আলবার্ট আইনস্টাইন। তিনি ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা ছিল একজন ইঞ্জিনিয়ার। পড়াশুনায় অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন আইনস্টাইন। মাঝে মাঝেই তার বিরুদ্ধে পড়াশুনায় খারাপ করার অভিযোগ আসত। স্কুলের শিক্ষক বা তার বাবা মা কেউই বুঝতে পারেননি যে, আসলে তাদের ছেলের মাথায় কি ঘুরছে। কিসে তার মনযোগ বেশি। কিন্তু শৈশবে যাই হোক না কেন বড় হয়ে একদিন সেই মানুষটি হয়ে উঠেছিল কোটি মানুষের কাছে উজ্জ্বল এক উদাহরণ। 

১৯৫৫  সালের ১৮ এপ্রিল ফাদার অফ রিলেটিভিটি এবং এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে বড় সায়েন্টিস্টদের মধ্যে একজন আলবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যু হয়। তারপর তার মৃতদেহ নিউ জার্সির একটি শব ঘরে রেখে দেয়া হয়। আইনস্টাইনের শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর যেন তার শেষকৃত্য যাতে আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়। কিন্তু প্যাথলজিস্টরা বলেছিলেন, এত বড়  বিজ্ঞানীর শরীরকে তারা বৃথা মাটিচাপা দিয়ে ধ্বংস করতে চাই না। তারপরে এক প্যাথলজিস্ট চুরি করে আইনস্টাইন এর মাথা খুলে মস্তিষ্ক রেখে দেয়। এমনকি আইনস্টাইনের চোখ দুটিও তুলে নেয়। ডঃ হারবি নামের ঐ ব্যাক্তি আইনস্টাইনের অঙ্গগুলোকে আলদা আলাদা পাত্রে রেখে দেন। আর তারপরে নিজেই ফোন করে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় বিষয়টি বলে দেন। 

আর এই খবর শুনে আইনস্টাইনের পরিবার খুব রাগান্বিত হয়ে যায়। তারপর ডঃ হারবি আইনস্টাইনের পরিবারকে বলেন সে যা করেছেন সেটা সাইন্সের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ছিল আর এই কথা শুনে পরবর্তীতে আইনস্টাইনের পরিবার তাতে রাজি হয়ে যায়। তারপর আইনস্টাইনের চোখ দুটো আইনস্টাইনের চোখের ডাক্তার হারনি আব্রাহামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর তিনি আইনস্টাইনের চোখ একটি সংরক্ষন পাত্রে ভরে রেখে দেন। 

ধারণা করা হয়, ঐ লকারটি নিউ ইয়র্ক সিটির ভেতরেই এখনও আছে। আর আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক ডঃ হারবি ২৪০টি অংশে বিভক্ত করেছিল। আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের আলাদা আলাদা অংশ দিয়ে তিনি ১০০০ এরও বেশি স্লাইড তৈরি করেছিলেন, আর প্রতিটি স্লাইড আলাদা আলাদা করে পৃথিবীর সব বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ডঃ হারবি  বলেছিলেন তিনি আইনস্টাইনের মস্তিস্ক নিচ্ছেন সাইন্সের কাজে ব্যবহার করার জন্য। তবে সে যে স্লাইডগুলো বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠিয়ে ছিল তা থেকে আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক সম্পর্কে অনেক নতুন নতুন ইনফরমেশন জানা গিয়েছিল। 

যেমন- সাধারণ মানুষের আইকিউ ৯০ থেকে ১১০ এর মধ্যে হয়ে থাকে, সেখান আইনস্টাইনের আইকিউ ১৬০ থেকে ১৯০ এর মধ্যে ছিল। জেনে অবাক হবেন যে, আইনস্টাইনের মস্তিস্ক সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের তুলনায় একটু ছোট ছিল। এছাড়াও মস্তিষ্কের একটি অংশ যার নাম ইনফেরিয়র পেরাইটল, আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ঐ অংশটা সাধারণ মানুষের থেকে ১৫ শতাংশ বেশি বড় ছিল। এটা মস্তিষ্কের অংশ যা ভাষা ও ম্যাথমেটিক্সের জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের একটা ফাটলও ছিল না যার নাম সেলভিয়ান ফিসার। এটা মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় ফাটল। 

এছাড়া আইনস্টাইনের মস্তিস্ক তার বয়স ডিফাইন করছিল না। অর্থাৎ একটা বয়সের পরে মানব শরীরে বার্ধক্য চলে আসে যা থেকে বোঝা যায় যে মানুষের বয়স বেড়ে গেছে, কিন্তু আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক ঐ সময় বয়স ডিফাইন করছিল না।  আসলে আইনস্টাইনের মস্তিষ্কে একটা জিনিসের অভাব ছিল। যাকে বলে লিপফুসিন। এটা সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা তেমন কিছুই জানেন না। তবে এটা জানেন যে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু আইনস্টাইনের মস্তিষ্কে এই জিনিসটা ছিলই না।  

মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর কিন্তু তার মস্তিষ্ক যেন ২৫ বছরের যুবকের মতো ছিল। কিন্তু এইসবও কোনো বিষয় না কারণ আমরা সবাই জানতাম আইনস্টাইন কতটা ব্রিলিয়ান্ট ছিলেন। এখন ড. হারবিরও মৃত্যু হয়ে গেছে, আর আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের কথাও সবাই ভুলে গেছে। ঐ সময় ড. হারবির কাছে আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের আরো অনেকটা অংশ ছিল। সে কিনা একটা জারে বিয়ার কুলারের নিচে একটি রুমে বন্ধ করে রেখেছিলেন ৪০ বছর। তারপর একটা সময় ডাক্তার হারবি আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের ওই অংশটুকু হাসপাতালে দিয়ে দেন। 

আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের স্লাইডের একটি সেট ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব হেলথ এন্ড মেডিসিনে রয়েছে। এছাড়াও আরো ৪৬টি স্লাইড একটি মিউজিয়ামে রাখা আছে। আর বাদ বাকি যত স্লাইড ছিল তা এম আই এম-এ জমা রয়েছে। 

ড. হারবি আইনস্টাইনের ব্রেইন নিয়ে যে স্লাইডগুলো করেছিল এই হলো তার হিসাব। তারপরও আমরা বলব ড. হারবি যা  করেছিলেন তা ইথিকাল ছিল না। না এটা সাইন্স এর জন্য খুব প্রয়োজন ছিল, এটা তিনি শুধু তার নিজের প্রয়োজনে করেছিল। বর্তমানে আমাদের কাছে অনেক আধুনিক টেকনোলজি রয়েছে যা দিয়ে হয়তো আমরা ভবিষ্যতে আইনস্টাইনের মস্তিস্ক সম্পর্কে এর থেকেও অনেক বেশি তথ্য জানতে পারবো।