খালেদা মুক্তিতে পর্দার আড়ালে ‘সমঝোতা’ চান বিএনপি নেতারা!

প্রাকৃতিক নিয়মে ঋতু ও আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেও বিএনপির রাজনৈতিক ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন নেই। আর এর নেপথ্য কারণ- দলীয় অন্তঃকোন্দল, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বৈরাচারী মনোভাব ও সাংগঠনিক ভঙ্গুরতা। এ কারণে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল- সর্বত্রই দলটির গা-ছাড়া অবস্থা বিরাজ করছে। এমনকি পরীক্ষিত দুর্নীতি মামলায় দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে কারান্তরীণ দলীয় চেয়ারপারসন খালেদার মুক্তিতেও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সহাস্যে অনাগ্রহ দেখিয়ে পিছুটান দিয়েছেন। এমতাবস্থায় দিশেহারা বিএনপি হাইকমান্ড বলছে, পর্দার আড়ালে সরকারের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ করা ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্নীতি মামলায় দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে কারান্তরীণ খালেদা জিয়া। অথচ এই সময়ে দল পুনর্গঠন কিংবা তার মুক্তির দাবিতে দলের পক্ষ থেকে গড়ে ওঠেনি শক্ত কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন। এর পেছনে অদ্বিতীয়ভাবে দায়ী লন্ডনে বসে ‘যাচ্ছেতাই’ভাবে দল নিয়ন্ত্রণ করা তারেক রহমান। তিনি শুধুমাত্র অর্থের জোরে অযোগ্য-অদক্ষ-অজনপ্রিয় ও রাজনৈতিকভাবে অনভিজ্ঞদের পদ-মনোনয়ন দিয়ে নিজের পকেট ভারী করে আসছেন। এতে দলের দুর্দিনে মাঠে থাকা রাজনৈতিক কর্মীরা বঞ্চিত হয়ে দলত্যাগ বা দলবিমুখ হওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এ কারণে কারান্তরীণ খালেদার মুক্তিতে ডাকা কোনো কর্মসূচিই আলোর মুখ দেখছে না। এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীদের সমর্থনের বিপরীতে মিলছে নিদারুণ অনাগ্রহ। ব্যর্থ হয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরাও। এমতাবস্থায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বিএনপি চাইছে পর্দার আড়ালে আপোষ।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতে, আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন মিলছে না। এর জন্য পর্দার আড়ালে সরকারের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যেও বারবার কেন দলের একটা অংশ জামিনের জন্য চেষ্টা করে মিথ্যা সান্ত্বনা ঝুলিয়ে রাখছে তা মাথাতেই আসছে না। একইসঙ্গে খালেদার পরিবারের নীরব ভূমিকাও তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকারের অনুকম্পা চাইলে বিএনপির আগেই চাওয়া উচিত। কারণ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না হলে জামিনেরও সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে আন্দোলনেও ব্যর্থ হতে পারে বিএনপি। তাই এখন যা করার, তারেকের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে বিএনপির নিজেরই করতে হবে।