ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

গবেষণা প্রটোকল জমা না দিয়েই বিষোদগার করছেন জাফরুল্লাহ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২০  

যেকোনও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার অনুমোদনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ওই উদ্ভাবনের গবেষণা প্রটোকল নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি জমা দিতে হয় বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি)। অথচ উদ্ভাবিত করোনা টেস্টিং কিটের সেই প্রটোকলই জমা দেয়নি ডা. জাফরুল্লাহর গণস্বাস্থ্য।

গবেষণার একটি মৌলিক নিয়ম লঙ্ঘন করেই গত কয়েকদিন ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে এসেছেন জাফরুল্লাহ। এমনকি এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে অফিসিয়াল কোনো চিঠি বা অন্য কোনো মাধ্যমেও যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিএমআরসির পরিচালক ডা. মাহমুদ-উজ-জামান।

এদিকে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, খুব দ্রুতই আমরা প্রটোকল জমা দেবো।

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেকোনো নতুন গবেষণা বা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে মানুষের উপকারে কতটুকু আসবে তা নিশ্চিত করার জন্য সবসময় কিছু সাবধানতামূলক প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়। এক্ষেত্রে অন্যতম হলো উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানকে গবেষণা বিষয়ে একটি প্রটোকল (Protocol) প্রস্তুত করে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (BMRC)-এর ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিকস কমিটিতে পাঠাতে হবে। সেখানে অনুমোদনের পরেই প্রটোকলটি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ন্যাশনাল ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস অ্যাডভাইসারি কমিটিতে যাবে। সেখান থেকে অনুমোদনের পরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে হবে, যা আইন অনুযায়ী হতে হবে একটি থার্ড পার্টি বা কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (সিআরও) মাধ্যমে। এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সব ধাপ সম্পন্ন হলেই কেবল চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে। সেই ট্রায়ালের সফলতা সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন আসে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটি থেকে। এইগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রক্রিয়া। এইক্ষেত্রে প্রটোকল তৈরি করে তা জমা দেওয়াই হচ্ছে প্রথম কাজ।

বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) পরিচালক ডা. মাহমুদ-উজ-জামান বলেন, ‘আমাদের কাছে অফিসিয়ালি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো চিঠি বা কোনো অ্যাপ্রোচ করা হয়নি। যদি সেই অ্যাপ্রোচ করা হয় তবে আমরা খুব দ্রুততার সঙ্গে তা নিয়ে কাজ করব। আমাদের ওয়েবসাইটেই এই বিষয়ে বিস্তারিত আছে। আমরা অনলাইনেও এই ধরনের গবেষণার পেপার নিচ্ছি এখন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলা হচ্ছে তাতে জনগণের কাছে একটা ভুল তথ্য যাচ্ছে। আমরা চাই সত্য ও সঠিক বিষয় সবার সামনে যাক। বিজ্ঞান একটি জটিল প্রক্রিয়া। যেহেতু এটা সরাসরি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত তাই টেস্ট কিট গবেষণা বিষয়েও একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’

এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বব্যাপী প্রচলিত একটি নিয়ম আছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র যেটা উদ্ভাবন করেছেন সেটি হলো একটি ডায়াগনস্টিক কিট। এটিকে বলতে পারেন একটি টেস্টিং কিট বা ডিভাইস। আবার ধরুন কোনো নতুন ওষুধ বা ড্রাগ। এগুলো তৈরি করার জন্য যখন গবেষণা করবেন কোনো ল্যাবে তখন এটা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য ভ্যালিডেশন করতে হয়। এক্ষেত্রে সেটিকে সাকসেসফুল ঘোষণা দেওয়ার আগে পরীক্ষা করতে হয়। সেটার জন্য প্রথম যে বিষয় প্রয়োজন তা হলো একটা প্রটোকল তৈরি করে তার ইথিক্যাল অ্যাপ্রুভাল নেওয়া।’

ডা. মাহমুদ-উজ-জামান বলেন, ‘কিছু নিয়ম তো মানতে হবে। উনারা এই ধরনের কোনো কিছুই মানেননি বা সেজন্য কোনো আবেদনও করেননি। জনগণের সামনে এই ধরণের গবেষণা নিয়ে যেকোনো বিষয়ে বলার আগে কীভাবে সেটি প্রকাশ করব তার কিছু প্রক্রিয়া থাকে। জনগণকে তো দেখাতে হবে যে, আমার এই গবেষণা এত শতাংশ সফল হয়েছে, মানে এটা কাজ করছে। এই বিষয়টি যিনি গবেষণা বা আবিষ্কার করবেন তাকেই করতে হবে। আর এক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া আছে তার মধ্য দিয়েই করতে হয়। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য একটা ইথিক্যাল অনুমোদন নিতে হয়।’

তিনি জানান, অনুমোদন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ের একটি কমিটি আছে, যাকে ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিকস কমিটি বলে। সেটা বিএমআরসির অধীনে একটি স্বাধীন কমিটি। সেই কমিটির অনুমোদন নিতে হয়। এটা সব কিছুর ক্ষেত্রেই। সেটা হোক ড্রাগ বা কোনো ডিভাইস। এটা বিশ্বব্যাপী সব দেশেরই স্বীকৃত প্রক্রিয়া।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ড. বিজন কুমার শীলকে চিনি। তিনি সিঙ্গাপুরে ছিলেন এক সময়। উনার সঙ্গে যারা আছেন তাদেরকেও আমি চিনি। উনারা সবাই এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পর্কে জানেন। যারা বিদেশে কাজ করে এসেছেন তারা আরও ভালো করে জানেন যে, এই সিস্টেমের মধ্য দিয়েই যেতে হয়।’