ছলনাময়ী স্ত্রী, প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দিলেন স্বামী!

কারো ভালোবাসায় সংসারে সুখ আসে আবার কারো ভালোবাসার অভাবে সংসার তছনছ হয়ে যায়। তবে এই ভালোবাসা দুজনেরই থাকতে হয়। যেমন ধরুন, একজন স্বামী তার স্ত্রীকে প্রচুর ভালোবাসেন অথচ তার সেই স্ত্রী নিজের স্বামীকে মুঠেও সহ্য করতে পারেন না, তাহলে সে সংসার একেবারে বৃথা। ঠিক একইভাবে একজন স্ত্রী তার স্বামীকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন অথচ স্বামীর স্ত্রীকে পছন্দই না তাও সে সংসার বৃথা। মোদ্দাকথা সংসারে পরিপূর্ণ সুখ ভোগ করতে হলে একে অপরের মধ্যে অগাধ ভালোবাসা থাকতে হবে নতুবা ছেড়ে দেয়ায় ভালো।

এই তো কিছুদিন আগে, ভারতের এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, বলিউড ভাইজান সালমান খানের বড় ভাই আরবাজ খানের সংসার বিচ্ছেদের গল্প। সেখানে প্রকাশ পায়, দীর্ঘ দিনের সেই সম্পর্ক নাকি ভেঙেছে শুধু মাত্র দুজনের ভালোবাসায় মিল না থাকার কারণে। একসময় একে অপরকে ভালোবাসতেন তারা। এরমধ্যে কেউ একজন তাদের সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করেছে, পরে তা বুঝতে পারায় দিন দিন দুজনের সম্পর্ক অবনতির দিকে গেছে। পরে একসময় বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন তারা।

আরবাজের ভাষ্য ছিল এমন, আমি চাইলে ওই সংসার যুগ যুগ ধরে করতে পারতাম কিন্তু আমার কাছে মনে হল, কারো মনের মিল এক না হলে সে সংসার চলমান রাখা উচিত নয়। তাই ভেবে চিন্তে আমরা দুজনে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর থেকে মূলত আলাদা থাকছেন আরবাজ ও মালাইকা।

যাইহোক এটা আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়, আজ আমাদের আলোচনার বিষয় হল, মনের মিল নেই বুঝতে পারে অন্যরকম রেকর্ড গড়ার কাজ করলেন স্বামী। যা শুনলে চোখ কপালে উঠবে যা কারোই। ঘটনাটি হল, এক স্বামীর স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে আরো চার বছর আগে। শুরুতে বেশ ভালোই চলছিল দুজনের। তবে একসময় এসে সব কিছু যেন কেমন হয়ে গেলো। একধরণের তছনছ হয়ে গেলো পুরো সংসার।     

সজল দাস। তিনি ভারতের নদিয়ার নবদ্বীপের মাজদিয়া মাঠপাড়ার বাসিন্দা। স্ত্রী মিঠু দাসের সঙ্গে তারই বিয়ে হয়েছে চার বছর আগে। শুরুতে সব কিছু ঠিক চলছিল তাদের। প্রচণ্ড ভালোবাসতেন দুজন দুজনকে। কিন্তু হঠাৎ কিছুদিন ধরে সজল লক্ষ্য করছিলেন তার স্ত্রী কেমন জানি বদলে গেছেন। প্রথমে সজল কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে তিনি ঠিকই বুঝতে পারলেন, তার স্ত্রী গোপনে কারো সঙ্গে প্রেম করছেন।

এদিকে, কোনো কিছুই না বলে সজল স্ত্রীকে চুপেচুপে আরো স্পষ্ট হওয়ার চেষ্টা করছেন, কার সঙ্গে প্রেম করছে সে। পরে সে ঠিকই বুঝতে পারলেন, বিয়ের চার বছর পরে এসে সেই প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে পরকীয়া করছেন স্ত্রী। পরে সজল মাথা গরম না করে এক অন্যরকম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। তিনি নিজেই স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন। পরে নিজ উদ্যোগে প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীর রেজিস্ট্রি করিয়েছেন। এমনকি বিয়ের রেজিস্ট্রির টাকা এবং রেজিস্ট্রি শেষ হওয়া পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত থেকে সবকিছু পরিচালনা করেছেন সজল নিজেই। আর এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটিয়ে এরই মধ্যে তিনি প্রশংসার দাবীদার হয়েছেন পুরো এলাকাজুড়ে।

এদিকে, সব কাজ শেষ করে যখন শূন্য হাতে ঘরে ফিরলেন সজল। এরপর থেকে পুরো চার বছরের স্মৃতি তার মাথায় ঘুরতে থাকলো। সজল কোনভাবেই মানতে পারছিলেন না, কীভাবে কি হয়ে গেলো! তখন পুরনো ছবি আর স্মৃতি তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন। তবে সজল বুঝতে পেরেছিলেন, যে ভালোবাসা প্রকৃত নয়, সে ভালোবাসা জোর করে রাখা উচিত নয়। তাই সে নিজ হাতে সব কিছু করে এলাকায় অন্যরকম নজির গড়লেন। 

মূলত, ভালোবাসা মানে তো কাউকে জোর করে ধরে রাখা নয় বরং সে যেন ভালো থাকে সেটা করতে দেয়া। তবে আমরা ক'জনে সজলের মত সেক্রিফাইস করতে পারি। তবে সজল এটাও বুঝতে পেরেছিলেন যে, মিঠু চার বছরের কোনদিন তাকে ভালোবাসেনি বরং শুধু অভিনয় করেছে। তাই তার ইচ্ছে, এবার অন্তত সত্যিকারে কাউকে ভালোবেসে তার বউ সংসার করুক। তাই সে এই মহৎ কাজটি নিজ হাতে করেছেন।