ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

জন্মদিনের শুভেচ্ছা বীর পিতার বীর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০  

২৮ সেপ্টেম্বর, আজ থেকে ৭৩ বছর আগে, ১৯৪৭ সালের আজকের এই দিনে জাতির পিতার নয়নমণি, বাঙ্গালীর রত্ন, আধুনিক বাংলাদেশের জননী, জননেত্রী, বীর পিতার বীর কন্যা, ৭৫ পরবর্তী দেশীয় ইতিহাসের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- ধরার বুক আলো করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নব পর্যায়ের বাংলাদেশের নির্মাতা। হিমাদ্রী শিখর সফলতার মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কাণ্ডারি। উন্নত সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার। বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার একান্ত বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্নসারথী। বিশ্বরাজনীতির উজ্জ্বলতম প্রভা, বিশ্ব পরিমণ্ডলে অনগ্রসর জাতি-দেশ-জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র, বিশ্বনন্দিত নেতা। বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা ‘নীলকণ্ঠ পাখি’, মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তমানবী, মাদার অব হিউম্যানিটি। আত্মশক্তি-সমৃদ্ধ সত্য-সাধক, প্রগতি-উন্নয়ন শান্তি ও সমৃদ্ধির সুনির্মল-মোহনা। এক কথায় বলতে গেলে সমুদ্র সমান অর্জনে সমৃদ্ধ শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেধা-মনন, সততা, নিষ্ঠা, যোগ্যতা, প্রাজ্ঞতা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদারমুক্ত গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। এক সময়ের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতে হয়েছে শেখ হাসিনার কল্যাণমুখী নেতৃত্বে  সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রাম। এই নিভৃত পল্লীতেই ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। শৈশব কৈশোর কেটেছে বাইগার নদীর তীরে টুঙ্গীপাড়ায় বাঙালির চিরায়ত গ্রামীণ পরিবেশে। 

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাবা শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর, তিনি তাঁর পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। একই বছর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোরী বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যার রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে তিনি আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন এবং ৬-দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ফলে মুজিব পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা, অনিশ্চয়তা ও অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলিতেই, কারাবন্দি পিতার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় ১১-দফা আন্দোলন এবং  ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতে বঙ্গবন্ধুকে পাক হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে করাচিতে নিয়ে যাবার ৯ মাস পর, ১৭ ডিসেম্বর পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে মুক্ত হন তিনি। 
১৯৭৩ সালে, শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স সম্পন্ন করেন। 

সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হবার ৬ বছর পর, ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে দলের হাল ধরেন জননেত্রী। এরপর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে বাংলার মানুষের প্রিয় আপায় পরিণত হোন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে ৩টি আসন থেকে প্রথমবারের নির্বাচিত হন তিনি।

১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে, ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মত দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪ বার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমাদের পরিচালনা করে আসছেন ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্য হাতে গুণে শেষ করা যাবে না। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির মাধ্যমে ২৫ বছরের পাহাড়ি বিদ্রোহের অবসান, যমুনা সেতু নির্মাণ, ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি,  পোলিও মুক্ত বাংলাদেশ, এসিড সন্ত্রাস বন্ধ করা, মায়ানমারের সাথে নদী সীমা বিজয়, ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময়, সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন, জাতির পিতার খুনীদের বিচার সম্পন্ন, ৭১ এ যুদ্ধাপরাধের চলমান বিচারকাজ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, থ্রিজি/ফোরজি সুবিধা, সমুদ্র জয়ের মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, আধুনিক কৃষকনীতি, নারীনীতি ও শিক্ষানীতি প্রভৃতি কয়েকটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। 

বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গৃহহীন মুক্ত বাংলাদেশ, করোনা দুর্যোগের ধাক্কা সামলে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।  

তবে দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অবদানের বিপরীতে স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্ষুশূল হয়েছেন তিনি বারবার। ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে এ পর্যন্ত, প্রকাশ্যেই সর্বমোট ১৯ বার ওনাকে  হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে প্রতিপক্ষ। কিন্তু বারবার মানুষের ভালবাসায় তিনি মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছেন। 

এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন জননেত্রী শেখ হাসিনার। সহজ সারল্যে ভরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, সততা, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও কোন প্রকার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার ছাপ নেই। একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ইতোমধ্যে তিনি শান্তি, গণতন্ত্র, শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন অসংখ্য মর্যাদাপূর্ণ পদক, পুরস্কার আর সম্মাননায়।

নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ় মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। বাঙালি জাতির সকল আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ৭৫ পরবর্তী বাঙালি জাতির যা কিছু মহৎ অর্জন তা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন, আজ গোটা বাঙালি জাতির জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।  

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, সারা বাংলার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি রইলো সশ্রদ্ধ অভিনন্দন।  জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন..