জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

নাঙ্গকোট উপজেলার বাঙ্গড্ডা এলাকার ফখরুল ইসলাম ওরফে হায়াতুন্নবী এর পুত্র জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জুয়েল একজন মৎস ব্যবসায়ী।

গতকয়েক দিন থেকে একই এলাকার সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জুয়েলের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিলো। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চাঁদা না দেয়ায় গত ৩০ ডিসেম্বর ১৯ইং ভোর রাতে সাইফুল ইসলাম ২০/২৫ জন নিয়ে জুয়েলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায়।

এ ঘটনায় কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা করে জুয়েল। এতে সাইফুল ও তার বাহিনী আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে জুয়েল ও তার পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।

এতে জুয়েল ও তার পরিবার এলাকা ছাড়া, স্কুলে ভর্তি করাতে পারছে না ২ স্কুল পড়–য়া ছেলেকে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার সকাল ১১টায় কুমিল্লা নগরীর একটি হোটলে সংবাদ সম্মেলন করেন জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জুয়েল ও তার পরিবার।

সংবাদ সম্মেলনে জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, আমি দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলাম। গত দুই বছর পূর্বে এলাকায় এসে আমার পৈতিৃক জমিতে মাছ চাষের ব্যবসা শুরু করি। এবছর আরেকটি নতুন প্রজেক্ট করতেছি। আমাদের একই এলাকার সাইফুল ইসলাম, ফারুক হোসেন কুতুব, ফারুক হোসেন ও আমির ইসলাম এসে আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে আমাকে মাছ চাষ করতে দিবে না। আমি ওদের কাছে জানতে চাইলাম, আমিতো তোমাদের এলাকার সন্তান চাঁদা কেন দিতে হবে। এরপর ও তারা আমাকে সময় বেঁধে দিয়েছিল। আমি যেন নির্দিষ্ট সময়ে তাদেরকে চাঁদা দিয়ে দেই। আমি তাদের বেঁধে দেয়া সময়ে চাঁদা দিতে না পারায় গত ৩০ ডিসেম্বর-১৯ইং তারিখ ভোররাতে সাইফুল সহ ২০/২৫ জন আমার বাড়িতে এসে আমাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তারা আমার উপর হামলার পাশাপাশি আমার বয়স্ক মাকে এবং আমার সহধর্মিনীর গায়ে আঘাত করেছে। এলাকাবাসী এসে আমাকে উদ্ধারের পর গত ৩০ ডিসেম্বর আমি কুমিল্লা সদর হসপিটালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হই। ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে আমি কুমিল্লার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা দায়ের করি। যার সিআর মামলা নং৪/২০২০। মামলা করার খবর জেনে সাইফুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হসিনার কাছে আমার স্কুলপড়–য়া ২শিশু সন্তানসহ পরিবারের সকল সদস্যের জীবনের নিরাপত্তা চাই।

এ কথা বলেই হাউ-মাউ করে কেঁদে দেয় জুয়েল। এসময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যগন ও  কেঁদে দিলে আবেগময় এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জুয়েল বলেন সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। সে এলাকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। ইতিপূর্বে সাইফুলের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে ও নাঙ্গলকোট থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জুয়েলের স্ত্রী নাসরিন বেগম বলেন আমার সামনে আমার স্বামীকে সাইফুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী যেভাবে আক্রমণ করে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গেল। এ ধরনের ঘটনা জীবনে ও দেখিনি। আমার স্বামীর উপর হামলা করেছে এখন আবার এলাকায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জুয়েলের ছেলে নাফিজুল ইসলাম বলে আমি এবং আমার ছোট ভাই জুনায়েদুল ইসলাম নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করেছি। এখন ৬ষ্ঠ শ্রেণির ফরম তুলতে পারিনি, ভর্তি ও হতে পারছি না।

নাফিজুল বলে আমাদের এলাকার সাইফুল চাচ্চু আমার বাবাকে মেরে ফেলবে, আমাদের মেরে ফেলবে। এগুলো শুনে আমরা ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছিনা। আমাদের হয়তো আর স্কুলে যাওয়া হবে না। আমাদের কে এলাকায় যাওয়ার সুযোগ করে দেন। পাশাপাশি স্কুলে ও যাওয়ার সুযোগ করে দেন। আমি এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই।