জুতা দেখে খুনি শনাক্ত!

কুমিল্লার চান্দিনার শ্রীমন্তপুরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নসিমনচালক জাকির হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাকে হত্যার পর একটি ডোবার পাশে মরদেহ ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে শনিবার নিহতের মেয়ে নাঈমা আক্তার অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 
জাকিরকে কে বা কারা হত্যা করতে পারে এ নিয়ে এলাকায় নানান আলোচনা শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনসহ হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে মাঠে নামে চান্দিনা থানা পুলিশ। 

জাকির হত্যাকাণ্ডের কোনো সাক্ষী না থাকলেও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে সাক্ষী হয় একটি জুতা। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্থানে একপাটি রাবারের জুতা পাওয়ার পর ওই জুতাটি নিয়েই তদন্ত শুরু হয়। 

পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই জুতার মালিক শ্রীমন্তপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে অটোচালক ছানাউল্লাহকে আটক করে। ছানাউল্লাহর দেয়া তথ্যমতে একই গ্রামের আব্দুল এরশাদের ছেলে আব্দুল মালেককেও আটক করা হয়। এরপর থেকেই হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলতে থাকে।

তাদের দেয়া তথ্যানুসারে, জাকিরের সঙ্গে অটোরিকশা কেনাবেচা নিয়ে ছানাউল্লাহর বাকবিতণ্ডা হয়। এই ক্ষোভ থেকেই জাকিরকে আক্রমণ করে ছানাউল্লাহ ও তার সহযোগী মালেক। 

হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে মরদেহ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলার চেষ্টা করে তারা। এ সময় দূর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির টর্চের আলো পড়ে তাদের ওপর। আর মুহূর্তের মধ্যে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায় মালেক ও ছানাউল্লাহ। ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় ছানাউল্লাহর বাম পায়ের জুতা খুলে যায়।

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা চান্দিনা থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন জানান, হত্যাকারীদের তথ্যমতে তারা জাকির হোসেনকে মারধর করতেই আক্রমণ শুরু করে। কিন্তু তাদের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষিতে জাকিরের মৃত্যু হয়। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বুধবার কুমিল্লার ৭ নম্বর আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মাহবুব খানের আদালতে ঘটনার মূলহোতা ছানাউল্লাহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।