ডাকাত সন্দেহে জোড়া খুনের ঘটনায় আটক ২জন কারাগারে

মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের পালাসুতা গ্রামে ডাকাত সন্দেহে পিটুনিতে নিহত দু’যুবককে হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক ২ জনকে শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার কেন্দ্রিয় কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এরা হলেন, পালাসুতা গ্রামের মৃত মুতি ব্যাপারীর ছেলে মাদক সম্রাট আলাউদ্দিন ওরফে আলা (৪২) ও একই গ্রামের মোহছেন মিয়ার ছেলে নাইম মিয়া (২৪)। গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে পালাসুতা গ্রামের সেকান্দর আলীর বাড়ির গাঁজার আস্তানা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ইসমাইল হোসেন (৩০) পালাসুতা গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ও নূরে আলম (৩৫) পাশের কাজিয়াতল গ্রামের আবদুস ছালামের ছেলে।
এলাকাবাসী, থানা পুলিশ ও নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে উপজেলার পালাসুতা, লক্ষ্মীপুর, বোরারচর, নেয়ামতকান্দি, মেলামচর ও কাজিয়াতল গ্রামে চুরি–- ডাকাতি বেড়ে গেছে এমন সংবাদ প্রচার করে আসছিলো একটি পক্ষ। এ নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরই মধ্যে গত ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে পালাসুতা গ্রামে একটি মাহফিল হচ্ছিল। হঠাৎ খবর আসে গ্রামে ডাকাত ঢুকেছে। তখন মসজিদের ও মাহফিলের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় গ্রামে ডাকাত ঢুকেছে। খবর শুনে লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় পালাসুতা গ্রামের মৃত মুতি ব্যাপারীর ছেলে মাদক সম্রাট আলাউদ্দিন ওরফে আলার নেতৃত্বে কিছু লোকজন তিন যুবককে আটক করে পিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই শ্বশুর বাড়ির জামাতা নুরে আলম ও চাচাতো শ্যালক ইসমাইল হোসেন মারা যান। এ ঘটনায় গুরতর আহত শাহজাহান মিয়া গুরতর আহত হলে তাকে কুমেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোটবাড়ী বাঘমারা এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে। সে নূরে আলমের সাথে পালাসুতা গ্রামে বেড়াতে এসেছিল।
এ ঘটনায় নিহত নুরে আলমের বাবা আবদুস ছালাম বাদী হয়ে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে কুমিল্লার আদালতে মামলা করেন। অপর দিকে নিহত ইসমাইল হোসেনের ভাই লিটন শিকদার বাদী হয়ে ২৭ জনকে অভিযুক্ত করে কুমিল্লার আদালতে আরেকটি মামলা করেন। মামলা দু’টি মুরাদনগর থানায় এফআইআরভুক্ত করা হলে এলাকাবাসী দুই আসামীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। আরো ১১ জন আসামী মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্থন করে।
মুরাদনগর থানার ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিল দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছিল। সম্পৃক্ততা না থাকায় একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপর দু’জনকে চালান করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।