ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

দুই বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০১৯  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার বিকেল ৪টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান ও সালমা বেগম সুজাতা (২০১৭), এম এ আলমগীর ও প্রবীর মিত্র (২০১৮)। 

সেরা ছবি :  ‘ঢাকা অ্যাটাক’ (২০১৭), ‘পুত্র’(২০১৮)।  সেরা অভিনেতা :  আরিফিন শুভ, শাকিব খান (২০১৭), ফেরদৌস, সাইমন সাদিক(২০১৮)  সেরা অভিনেত্রী: নুসরাত ইমরোজ তিশা(২০১৭), জয়া আহসান(২০১৮)  সেরা নির্মাতা : বদরুল আনম সৌদ(২০১৭), মোস্তাফিজুর রহমান মানিক (২০১৮)।

শেষ বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের বর্ণিল মঞ্চে বসেছিল ৪২ এবং ৪৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৭-১৮ প্রদানের জমকালো আসর। এতে সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে বর্তমান প্রজন্মের শিল্পী, নির্মাতা-কলাকুশলীদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে আলো ছড়ায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় চলচ্চিত্রের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চলচ্চিত্রকারদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে উন্নত কাজের ধারা অব্যাহত রাখারও প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী  ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে স্বাগত ভাষণ দেন তথ্য সচিব আবদুল মালেক।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি। আরো অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের সিনেমা দর্শক হারিয়েছে। কীভাবে দর্শককে ফের হলে ফেরানো যায় সেজন্য অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি আমরা।

আমি নিজেও হল মালিকদের সঙ্গে বসেছি। আমার মনে হয় দর্শক ফেরাতে হলে সিনেমাকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশেষ করে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সিনেমা হল ডিজিটাল করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তাদের জন্য সময় উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের ভেতরে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্র। এর মাধ্যমে মানুষের মনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এই চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে মানুষের জন্য। দেশে জঙ্গিবাদ আমরা প্রতিরোধ করছি। শুধু আইনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। চলচ্চিত্র এখানে বিরাট একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিকে আপনারা আরো বেশি নজর দেবেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল ৪০ মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র তারকা ও সংগীত শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় মাতিয়ে রাখন মিলনায়তন।  চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও নায়িকা পূর্ণিমার প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় এতে সংগীতের মূর্ছনা ছড়ান গুণী সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম, মমতাজ, নকীব খান, সামিনা চৌধুরী ও কণা।জমকালো আয়োজনে দেশয়ি সিনেমার সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন, অপু বিশ্বাস, তমা মির্জা, ববি, মাহি, নুসরাত ফারিয়া, ইমন ও জায়েদ খান। 

এক নজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭-১৮ 

২০১৭ সালে ২৭টি বিভাগে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এই বছর সর্বোচ্চ ৭টি পুরস্কার পায় বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘গহীন বালুচর’। আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করেন অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান ও অভিনেত্রী সুজাতা। ২০১৮ সালের ২৮টি বিভাগে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এই বছর সর্বোচ্চ ১১টি বিভাগে পুরস্কার পায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর নির্মিত ‘পুত্র’ চলচ্চিত্র। আজীবন সম্মাননা পন অভিনেতা আলমগীর ও প্রবীর মিত্র।

২০১৭ সালের সেরা অভিনেতা হিসেবে যৌথভাবে পুরস্কার পান শাকিব খান ও আরিফিন শুভ। শাকিব খান ‘সত্তা’ ও আরিফিন শুভ ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার পান। এই বছর ‘হালদা’ ছবিতে অভিনয় করে নুসরাত ইমরোজ তিশা সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। ২০১৮ সালের সেরা অভিনেতা হয়েছেন যৌথভাবে ফেরদৌস ও সাইমন সাদিক। ফেরদৌস ‘পুত্র’ ও সাইমন ‘জান্নাত’ ছবির জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৮ সালের ‘দেবী’র জন্য জয়া আহসান শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।

২০১৭ সালের সেরা ছবির পুরস্কার পান দীপংকর দীপনের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ আর ২০১৮ সালে সাইফুল ইসলাম মান্নুর ‘পুত্র’। ‘গহীন বালুচর’ ছবির জন্য ২০১৭ সালের সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান বদরুল আনাম সৌদ আর ২০১৮ সালের ‘জান্নাত’ ছবির জন্য মোস্তাফিজুর রহমান।

এ ছাড়া ২০১৭ সালে অন্য বিভাগগুলোতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ (তুমি রবে নীরবে), পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা শাহাদাৎ হোসেন (গহীন বালুচর), খল চরিত্রে অভিনেতা জাহিদ হাসান (হালদা), পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা (গহীন বালুচর), রুনা খান (হালদা), শিশুশিল্পী নাইমুর রহমান আপন (ছিটকিনি), শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার অনন্য সামায়েল (আঁখি ও তাঁর বন্ধুরা), প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিশ্ব আঙিনায় অমর একুশে), শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার আজাদ বুলবুল (হালদা), চিত্রনাট্যকার তৌকীর আহমেদ (হালদা), সংলাপ রচয়িতা বদরুল আনাম সৌদ (গহীন বালুচর), কৌতুক অভিনেতা এম ফজলুর রহমান (গহীন বালুচর), পুরুষ কণ্ঠশিল্পী জেমস (সত্তা), নারী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ (সত্তা), গীতিকার সেজুল হোসেন (সত্তা), সুরকার বাপ্পা মজুমদার (সত্তা), চিত্রগ্রাহক কমল চন্দ্র দাস (গহীন বালুচর), শব্দগ্রাহক রিপন নাথ (ঢাকা অ্যাটাক), নৃত্য পরিচালক ইভান শাহরিয়ার সোহাগ (ধ্যাত্‌তেরিকি), সম্পাদক মোহাম্মদ কালাম (ঢাকা অ্যাটাক), শিল্পনির্দেশক উত্তম কুমার গুহ (গহীন বালুচর), রূপসজ্জায় জাভেদ মিয়া (ঢাকা অ্যাটাক) এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় রিটা হোসেন (তুমি রবে নীরবে)।

২০১৮ সালের অন্যান্য ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- সংগীত পরিচালক ইমন সাহা (জান্নাত), পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা আলী রাজ (জান্নাত), খল চরিত্রে অভিনেতা সাদেক বাচ্চু (একটি সিনেমার গল্প), পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেত্রী সুচরিতা (মেঘকন্যা), শিশুশিল্পী ফাহিম মুহতাসিম (পুত্র), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী বিশেষ মাহমুদুর রহমান (মাটির প্রজার দেশে), প্রামাণ্যচিত্র ফরিদুর রেজা সাগর (রাজাধিরাজ রাজ্জাক), কাহিনিকার সুদীপ্ত সাইদ খান (জান্নাত), সংলাপ রচয়িতা হারুণ রশীদ (পুত্র), পুরুষ কণ্ঠশিল্পী নাইমুল ইসলাম রাতুল (পুত্র), নারী কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন (পুত্র) ও আঁখি আলমগীর (একটি সিনেমার গল্প), গীতিকার কবির বকুল (নায়ক) ও জুলফিকার রাসেল (পুত্র), সুরকার রুনা লায়লা (একটি সিনেমার গল্প), নৃত্য পরিচালক মাসুম বাবুল (একটি সিনেমার গল্প), কৌতুক অভিনেতা মোশাররফ করিম (কমলা রকেট) ও আফজাল শরিফ (পবিত্র ভালোবাসা), চিত্রগ্রাহক জেড এইচ মিন্টু (পোস্টমাস্টার ৭১), শব্দগ্রাহক আজম বাবু (পুত্র), সম্পাদক তারিক হোসেন বিদ্যুৎ (পুত্র), শিল্প নির্দেশক উত্তম কুমার গুহ (একটি সিনেমার গল্প), রূপসজ্জায় ফরহাদ রেজা (দেবী) এবং শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় সাদিয়া শবনম (পুত্র)।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার হচ্ছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৫ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। প্রথম দিকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার না থাকলেও ২০০৯ সালে প্রথম এই পুরস্কার চালু করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য এটিই সর্বোচ্চ পুরস্কার।