ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ধর্ষকের শাস্তি যে দেশে যেমন

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২০  

পত্রিকার পাতা খুললে কিংবা টেলিভিশনের ব্রেকিং নিউজ শুধুই ধর্ষণের খবর। সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায়। শিশু, গৃহবধূ কিংবা বৃদ্ধ কেউই নিরাপদ না। শুধু যে নারীরাই এর শিকার হচ্ছেন, তা কিন্তু নয়। ছেলে শিশুরাও রয়েছে এই তালিকায়। কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষরূপী পশুর লালসার শিকার হচ্ছে নারীরা। 

সারাদেশে চলছে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাসির দাবিতে বিক্ষোভ, মিছিল, সড়ক অবরোধ। তবে তাতেও কমছে না এই সংখ্যা। তাহলে কি দেশের আইনে শাস্তির বিধানে ধর্ষণ অপরাধ বিবেচনায় কম? তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ধর্ষকের শাস্তি কেমন জানেন কি?ভারত, ইরান, চীন, গ্রিস, রাশিয়াসহ এশিয়া-ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। 

তবে যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়েসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ৩০ বছর কারাদণ্ড। আর বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনে শুধুই ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি  যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে ধর্ষণের ফলে ধর্ষিতার মৃত্যু হলে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। 

আমাদের দেশে ধর্ষণের শাস্তির বিষয় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৬ ধারায় বলা হয়েছে। এই ধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ধর্ষণের অপরাধ করে। তবে সে ব্যক্তি যাবজীবন কারাদণ্ডে অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে। যদি না ধর্ষিতা স্ত্রীলোকটি তার নিজ স্ত্রী হয় এবং সেই স্ত্রী ১২ বছরের কম বয়স্কা না হয়। আর যদি এমন হয় যে ধর্ষণের শিকার নারীটি তার স্ত্রী, যার বয়স ১২ বছরের কম। তবে সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে। 

এ ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ নম্বর ধারায়ও ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা আছে। তবে এ আইনে ধর্ষণের ফলে মৃত্যু হলে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা আছে। ৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন। এরপর ৯(২) ধারায় আছে, যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ-পরবর্তী তাহার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

 এ ছাড়া ৯(৩) ধারায় আছে, যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন। (৪) যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে-(ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।


চলুন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষণের শাস্তি কী?  

ভারত

প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০১৩ সালে ধর্ষণের শাস্তি আগের চেয়ে কঠোর করা হয়েছে। দেশটিতে বিশেষ ক্ষেত্রে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। তবে সচরাচর সাত থেকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

চীন

এশিয়ার বৃহৎ দেশ চীনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কেটে দেয়া হয়।

ইরান

এশিয়ার আরেক দেশ ইরানে সাধারণত ধর্ষককে জনসম্মুখে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্ষিতার অনুমতি নিয়ে ধর্ষককে জনসম্মুখে ১০০ দোররা (চাবুক) মারা অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

গ্রিস

গ্রিসে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আর এই শাস্তি কার্যকর করা হয় আগুনে পুড়িয়ে।

মিসর

মিসরে জনাকীর্ণ এলাকায় জনসম্মুখে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ধর্ষককে ফায়ারিং স্কোয়াডে নিয়ে মাথায় গুলি করে এই শাস্তি কার্যকর করা হয়।

আফগানিস্তান আফগানিস্তানে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আদালতের রায়ের চার দিনের মধ্যে ধর্ষকের মাথায় গুলি করে এই রায় কার্যকর করা হয়। সৌদি আরব : সৌদি আরবে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। জনসম্মুখে ধর্ষকের শিরশ্ছেদ করে এই সাজা কার্যকর করা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে যৌন নির্যাতন বা ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড। রায়ের সাত দিনের মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাজা কার্যকর করা হয়।

ফ্রান্স

ফ্রান্সে ধর্ষণের শাস্তি কী তা ভিকটিমের ক্ষতি কতটা গুরুতর, তার ওপর নির্ভর করে। সেখানে ধর্ষকের সাজা ৩০ বছরের কারাদণ্ড থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড।

নেদারল্যান্ডস

নেদারল্যান্ডসে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে চার থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওই দেশে যেকোনো ধরনের যৌন নিপীড়ন, অনুমতি ছাড়া জোর করে চুম্বনও এ ধরনের অপরাধ হিসেবে গণ্য করে শাস্তি দেয়া হয়ে থাকে।

রাশিয়া

বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি তিন থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড।

যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্বের শীর্ষ শক্তিধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুই ধরনের আইন প্রচলিত রয়েছে। এগুলো হলো অঙ্গরাজ্য আইন এবং ফেডারেল আইন। ফেডারেল আইনে মামলা হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে অঙ্গরাজ্য আইনে একেক অঙ্গরাজ্যে একেক রকম শাস্তি।

নরওয়ে

নরওয়েতে ধর্ষকের সাজা চার থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড। 

ইসরায়েল

ইসরায়েলে ধর্ষণের শাস্তি চার থেকে সর্বোচ্চ ১৬ বছরের কারাদণ্ড।

সৌদি আরব
ধর্ষণে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে শাস্তি প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ। তবে তার আগে দোষীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করা হয়।

মঙ্গোলিয়া
ধর্ষিতার পরিবারের হাত দিয়ে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় দেশটিতে।