নুসরাত হত্যায় অর্থ লেনদেনের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তদন্তের অংশ হিসেবে সোনাগাজীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেনীর সোনাগাজী যাবে সিআইডির তদন্ত দল।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার সঙ্গে এই ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুসন্ধান করা হবে। তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেমসহ সবার ব্যাংক হিসাব দেখবে সিআইডি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই অর্থ লেনদেনের সংস্পর্শে এসেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। অনুসন্ধানে যদি মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার সোনাগাজী থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে। 

মোল্যা নজরুল আরো বলেন, অবৈধ অর্থ, কেরোসিন কেনার জন্য বা কাউকে প্রভাবিত করার জন্য অথবা কেউ যদি তাকে হত্যার জন্য টাকা লেনদেন করে থাকেন অথবা শ্লীলতাহানির ক্ষেত্রে অর্থ ব্যবহার করেন। এর সবই মানিলন্ডারিং।

গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে মাদরাসায় গেলে মুখোশধারী চার/পাঁচজন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজদৌল্লাহর বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

প্রায় ৫ দিন চিকিৎসাধীন থেকে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় নুসরাতের পরিবারের করা মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৪ জন দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার এজাহারে থাকা ৮ আসামির সবাই গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় গ্রেফতার মোট ১৮ জনের মধ্যে ১৩ জনকে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। তারা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ ও হাফেজ আবদুল কাদের।