ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পাওনা টাকা আদায়ের দারুণ কৌশল!

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯  

প্রয়োজনে কম-বেশি সবাইকে টাকা ধার নিতে হয়। আবার অনেক সময় নিজেকেও অন্যজনকে থাকা ধার দিতে হয়। কিন্তু সমস্যাটি হয় তখন, যখন পাওনা টাকা আদায়ের সময় আসে।

টাকা ধার নেয়ার সময় বিনয়ী থাকলেও, ফেরতের সময় তা মোটেও থাকে না। তবে পাওয়ানা টাকা আদায়ের জন্যও আছে দারুণ কৌশল। চলুন জেনে নেয়া যাক উদাহরণসহ সমাধানের উপায়-

করিম একজন শান্তিপ্রিয় ভদ্রলোক। তার একটি পাইকারি মাল বিক্রির দোকান আছে। রহিম করিমের দোকানের একজন নিয়মিত ক্রেতা। নিয়মিত ক্রেতা সেই সুবাদে রহিম প্রায় সময়ই করিমের দোকানে বাকিতে পণ্য ক্রয় করে থাকে। এভাবেই এক সময় রহিম প্রচুর পরিমাণে বাকিতে পণ্য ক্রয় করে যাচ্ছে। একসময় করিম রহিমের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা বকেয়া পাওনা হয়ে যায়। বকেয়া টাকা উঠানোর জন্য করিম রহিমের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে এখন ক্লান্ত। বকেয়া টাকা সে তার কাছ থেকে তুলতে পারল না।

কীভাবে রহিমের কাছ থেকে এই পাঁচ লাখ টাকা তুলতে পারবে তা নিয়ে করিম ভীষণ চিন্তায় পরে গেল। একসময় সে বুঝতে পারল এভাবে তার কাছ থেকে টাকা তুলতে পারবে না। তাকে রহিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কীভাবে রহিমের কাছ থেকে সে পাঁচ লাখ টাকা পাওনা আদায় করতে পারবে সে সম্পর্কে জানতে সে গেল একজন আইনজীবীর কাছে।

ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোককে বাকিতে মাল দিতে হয়। তবে অনেক সময় অনেক অসাধু লোক উক্ত টাকা পরিশোধ করে না। এটা যে শুধুমাত্র উক্ত দেনাদারের আর্থিক অক্ষমতার কারণে হয়ে থাকে তা নয়। কিছু মানুষ আছে যারা পাওনা টাকা পরিশোধ না করে পাওনাদারকে পিছনে ফেলতে খুব আনন্দ পায়। আবার কিছু লোক আছে যারা স্থানীয়ভাবে খুব প্রভাবশালী। তারা মানুষকে হয়রানি করতেও কেন যেন পছন্দ করে। এখন আমরা জেনে নিব কীভাবে করিম রহিমের কাছ থেকে সেই পাঁচ লক্ষ টাকা আদায় করবে।

এজন্য করিমকে যে সমস্ত কাগজপত্র আনতে হবে তা হলো- করিম যে রহিমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা পায় সেই টাকা দাবীর সাপেক্ষে যে সমস্ত কাগজ পত্র বা যে সমস্ত প্রমাণ করিমের কাছে আছে সে সব কিছু নিয়ে আসতে হবে। যেমন- রশিদ থাকতে পারে-ইত্যাদি যে সমস্ত ডকুমেন্টগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আসতে হবে।

মূল মামলায় যাওয়ার আগে করিমকে প্রথমেই একজন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে উক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে রহিমকে লিগ্যাল নোটিশে করিমের পাওনা পাঁচ লক্ষ টাকা পরিশোধের জন্য কয়েক দিন সময় দিতে হবে। এই নোটিশে রহিমকে ৩০ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হল।

উক্ত নোটিশে আরো লিখতে হবে উক্ত টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ না করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উক্ত লিগ্যাল নোটিশটি অবশ্যই রেজিস্ট্রারে ডাক যোগে রহিমের ঠিকানায় পাঠাতে হবে। লিগ্যাল নোটিশে দেয়া উক্ত সময়ের মধ্যে যদি রহিম করিমের পাওনা টাকা পরিশোধ করে তাহলেতো ভালো।

তবে এই সময়ের মধ্যে যদি উক্ত টাকা পরিশোদ না করে সেক্ষেত্রে করিমকে রহিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণগুলো সঙ্গে নিয়ে করিমকে যেতে হবে নিকটতস্থ কোর্টে। সেখানে গিয়ে একজন ভালো আইনজীবীর মাধ্যমে করিমকে রহিমের বিরুদ্ধে একটি মানি সুটের মামলা করতে হবে।

উক্ত মামলা করার জন্য কি পরিমাণ কোর্ট ফি দিতে হবে? পাওনা টাকার উপর ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে এডভেলোরেম ফি দিতে হবে। অর্থাৎ পাওনা টাকা যদি হয় ১ লাখ টাকা তবে উক্ত টাকার উপর কোট ফি হবে ২ হাজার ৫০০ টাকা। আরো আনুসাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে মোট খরচ হতে পারে প্রতি লাখে ৩ হাজার টাকার মতো। তবে সরকার চাইলে এই হার বাড়াতে বা কমাতে পারে।

সমস্ত সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে এই আদালত যদি সন্তোষ্ট হয় তবে আদালত রহিমের বিরুদ্ধে ডিক্রি জারী করতে পারে। আদালত কি পরিমাণ টাকা জরিমানা করতে পারে? এখানে মূল বকেয়া টাকা প্রদানের জন্য ডিক্রি দিতে পারে অর্থাৎ সেই পাঁচ লাখ টাকা প্রদানের জন্য রায় দিতে পারে।

পাওনা টাকার উপর সুদ প্রদানের ডিক্রি প্রদান করতে পারে। অর্থাৎ এই যে পাঁচ লাখ টাকা দীর্ঘ দিন যাবৎ রহিমের কাছে বকেয়া পরে আছে সেই সময়ের উপর নিদিষ্ট হারে সুদ প্রদানের জন্য আদালত ডিক্রি দিতে পারে। এছাড়া মামলা পরিচালনার ব্যয় পরিশোধের জন্য দেনাদারের বিরুদ্ধে ডিক্রি দিতে পারে। অর্থাৎ এই মামলাটি পরিচালনার জন্য করিমের যে পরিমাণ খরচ হয়েছে সেই খরচও তাকে দেয়ার জন্য আদেশ দিতে পারে আদালত।

একই সঙ্গে আরো কিছু ক্ষতিপূরণ দিতে আদেশ দিতে পারে আদালত। এই সমস্ত টাকা যদি রহিম পরিশোধ করতে না পারে সেক্ষেত্রে  তার বিরুদ্ধে দন্ড বা জেল হাজতের ব্যবস্থা করতে পারে আদালত। এভাবে করিম তার পাওনা টাকা রহিমের কাছ থেকে আদায় করতে পারে। বা তাকে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।