ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

পিপিই রফতানি করে পোশাক শিল্পে ফিরছে স্বস্তি

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২০  

করোনা মহামারিতে একের পর এক অর্ডার বাতিল করেছে নানা পশ্চিমা ব্র্যান্ড৷ এর ফলে ধস নেমেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে৷ কিন্তু কিছু কারখানা সে ধাক্কা সামলাচ্ছে মাস্ক, গ্লাভস, গাউন তৈরি ও রফতানি করে৷


নতুন অর্ডার কিছু পরিমাণে আসতে শুরু করেছে৷ তারপরও লাখ লাখ পোশাক শ্রমিক এখনও রয়েছেন চাকরির অনিশ্চয়তায়৷ অন্যদিকে, সাভারের শিল্প এলাকায় কিছু কারখানায় সপ্তাহে ছয় দিন আট ঘণ্টা করে কাজ করছেন লাখ লাখ কর্মী৷ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশে তৈরি হওয়া পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট- পিপিই৷

বেক্সিমকো বাংলাদেশের পোশাক খাতে একটি বড় নাম৷ জারা, কেলভিন ক্লাইন এবং টমি হিলফিগারের মতো বড় বড় ব্র্যান্ডের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এই বেক্সিমকো৷ কিন্তু করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি স্থবির হওয়ার পর এখন বেক্সিমকোর কারখানায় নীল-সাদা গাউনের ছড়াছড়ি৷

প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ নাভেদ হুসাইন বলেন,‘ফেব্রুয়ারিতেই আমরা এই সুযোগ আসবে বুঝতে পেরেছিলাম এবং সঙ্গে সঙ্গেই পিপিই তৈরিকে বিকল্প হিসেবে বেছে নেই৷’

গত মাসে বেক্সিমকো মার্কিন ব্র্যান্ড হানেসের কাছে প্রায় ৬৫ লাখ মেডিকেল গাউন রফতানি করেছে৷ এ বছর প্রায় ২৫ কোটি ডলার মূল্যের পিপিই রফতানির লক্ষ্য আছে তাদের৷


 
বার্তা সংস্থা এএফপিকে নাভেদ জানিয়েছেন,‘আমাদের ৪০ হাজার শ্রমিকের ৬০ শতাংশই এখন পিপিই তৈরির কাজ করছেন৷ করোনা ভাইরাস আসলেই পৃথিবীকে পালটে দিয়েছে৷’

সুমাইয়া আখতার ও রুবেল মিয়া নামের দুই শ্রমিক পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলোর অর্ডার বাতিলের পর চাকরি হারিয়েছিলেন৷ কিন্তু এখন তারা পিপিই তৈরির কাজ করছেন৷ ৩৪ বছরের সুমাইয়া এএফপিকে বলেন,‘অন্য অনেকে এখনও চাকরি খুঁজে বেড়াচ্ছেন, খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন৷ আমার সৌভাগ্য যে আমি এই কারখানায় কাজ করতে পারছি৷ অন্তত আমার পরিবার ও বাবা-মায়ের মুখে খাবার দিতে পারছি৷’

গত দুই দশকে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বড় পোশাক রফতানিকারকের জায়গা দখল করেছে৷ প্রাইমার্ক ও এইচ অ্যান্ড এম এর মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য পোশাক তৈরি করছে দেশটি৷ শীর্ষে থাকা চীনের চেয়ে অবশ্য পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ৷ মহামারির আগে বাংলাদেশের ৪০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির ৮০ শতাংশই আসতো তৈরি পোশাক রফতানি থেকে৷ ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করতেন এই খাতে, যাদের বেশিরভাগই গ্রামের দরিদ্র পরিবার থেকে আসা নারী৷


 
কিন্তু এপ্রিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন শুরুর পর প্রায় সাড়ে চার হাজার কারখানার ৮৪ শতাংশ সরবরাহই বন্ধ হয়ে যায়৷ এ সময়ে প্রায় ৩২ লাখ ডলারের অর্ডার বাতিল বা স্থগিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ৷ বেশিরভাগ কারখানা অর্ডার বাতিল ও নিজ দেশের লকডাউনের কারণে পর্যাপ্ত কাজ না পাওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করে৷ এর প্রতিবাদের বেশ কয়েকটি বিক্ষোভেও অংশ নেন পোশাক শ্রমিকেরা৷

বিজিএমইএর মুখপাত্র খান মনিরুল আলম শুভ এএফপিকে জানিয়েছেন, এখন অর্ডার ধীরে ধীরে আবার আসতে শুরু করেছে৷ তিনি বলেন,‘গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এই পরিমাণ একেবারেই নগণ্য৷ জুনে আমরা আমাদের সক্ষমতার কেবল ৫৫ শতাংশ কাজ করতে পেরেছি৷’

কারখানায় কাজ শুরু হলেও সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে কারখানাগুলোকে৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কারখানা মালিক জানিয়েছেন,‘এই কাজটা এমন যে এখানে সামাজিক দূরত্ব মানাটা প্রায় অসম্ভব৷’


 
বিজিএমইএ বলছে, কারখানাগুলো মেডিকেল সামগ্রী তৈরি করার দিকে নজর দেয়ায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটতে পারে৷ শুভ জানিয়েছেন মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০টি কারখানা পিপিই তৈরি করছে৷ এ সংখ্যাও দ্রুতই বাড়ছে বলেও জানান তিনি৷

যেসব কারখানা সীমিত আকারে পিপিই তৈরি করছিল, তাদের অর্ডার বাড়তে থাকায় কারাখায় কাজ বাড়াতে হচ্ছে৷ ফকির অ্যাপারেলসের পরিচালক মশিউর রহমান জানান,‘তিন দিন আগে আমরা দুই কোটি সার্জিক্যাল গাউনের অর্ডার পেয়েছি৷ আমাদের সব কারখানা এখন পুরো বছরের কাজ পেয়ে গেছে৷’

ফকির অ্যাপারেলস এখন নিজেদের পাঁচটি কারখানাকে পিপিই প্ল্যান্টে রূপান্তর করেছে এবং অতিরিক্ত কাজের জন্য আরো ৪০০ শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে৷ এ বছর ২০ কোটি ডলার মূল্যের রফতানির আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি৷

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ এর সাবেক নির্বাহী আহসান এইচ মনসুর জানান, বাংলাদেশের কারখানাগুলো এখন কেবল তাদের সক্ষমতার ৫০ শতাংশ কাজ করছে৷ ফলে পিপিইর অর্ডার আসতে শুরু করায় এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি৷

মনসুর বলেন,‘অলস পড়ে থাকা এই সক্ষমতাকে সামান্য অর্থ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বদলে ফেলা সম্ভব।