বাবরি মসজিদের জমিই দিতে হবে: মুসলিম ল বোর্ড

ভারতের বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদ মামলার রায়ের মাত্র ৮ দিনের মধ্যেই দেশটির শীর্ষ আদালতে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। মুসলিম ল বোর্ডের দাবি- অন্যত্র নয় বাবরি মসজিদের জমিই দিতে হবে।

সম্প্রতি ভারতের বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদ মামলার রায় দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে পারে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড, এমন ইঙ্গিত মিলেছিল রায়দানের দিন। পরে অবশ্য তা খারিজ করে দেয়া হয়। কিন্তু মাত্র ৮ দিনের মধ্যেই মত বদল করে প্রাথমিক ইঙ্গিতকেই কার্যকর করে তুলল মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। 

রোববার এ কথা জানান মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের আইনজীবী জাফরইয়াব জিলানি। 

চলতি মাসের ৯ তারিখে বহু বিতর্কিত অযোধ্যা জমি মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিতে রাম মন্দির তৈরির ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। 

সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতিরা। এ রায় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড মেনে নিলেও মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড শুরু থেকেই সন্তুষ্ট ছিল না। রায় শোনার পরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে আইনজীবী জাফরইয়াব জিলানি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে পারেন। 

জিলানি জানান, তারা সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ পিটিশন দাখিল করবেন। ল বোর্ডের দাবি, অন্যত্র ৫ একর জমি নয়, বাবরি মসজিদ যেখানে ছিল, অর্থাৎ বিতর্কিত ২.৭৭ একর থেকেই তাদের জমি দিতে হবে।

যদিও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে একমত নন। তাদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে ফের আইনের দ্বারস্থ হলে তাতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। তাই তারা সে পথে হাঁটতে চান না। 

তবে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মামলাকারী আরেকপক্ষ জমিয়তে উলেমায় হিন্দ। তারা রিভিউ পিটিশনের পক্ষে সায় দিয়েছে।

অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে কী ছিল, তা নিয়ে একাধিক মতবিরোধের মাঝে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বিস্তারিত গবেষণা রিপোর্টের ওপরই সবচেয়ে বেশি আস্থা রেখেছিলেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা।

এএসআইয়ের রিপোর্ট বলছে, ষোড়শ শতকে মুঘল সম্রাট বাবরের আমলে অযোধ্যার ওই জমিতে যে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল, তা ফাঁকা জমির ওপর ছিল না।

কিন্তু মুসলিম ল বোর্ডের আইনজীবী জিলানির অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে ওই জায়গায় হিন্দুদের পাশাপাশি যে মুসলিমরাও প্রার্থনা করতেন, সেই বিষয়টিকে উপেক্ষা করা হয়েছে রায়দানের সময়ে। এরপরই তিনি রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আলোচনা সাপেক্ষে রিভিউ পিটিশন দাখিলের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন। পরে অবশ্য মুসলিম ল বোর্ড এই দাবি থেকে কিছুটা সরে এসেছিল।