ব্রেকিং:
৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বিমানের জিএসএ অফিসে বছরে শতকোটি টাকা লুট

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০১৯  

বিমানের আন্তর্জাতিক অফিসগুলোতে সবচেয়ে বড় আয়ের খাত জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) কার্যক্রম ও কার্গো সার্ভিস। এগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বছরে শতকোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিমানের দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

দুদকের অনুসন্ধানভিত্তিক এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিএসএ কোম্পানিগুলোর টিকিট বিক্রি, জ্বালানি তেল ক্রয়, যন্ত্রপাতি কেনা, যাত্রীদের দেওয়া কর ও এক্সেস ব্যাগেজের অর্থ জমা না দেওয়া, ভুয়া বিল ভাউচার ও ব্যাংকে টাকা জমা না রাখা ইত্যাদি পন্থায় বিমানের টাকা লুটপাট হচ্ছে। আমদানি ও রফতানি পণ্যের ওজন এবং ভলিউম কম দেখিয়ে কার্গো বিমানে উঠিয়ে ও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কার্গো চার্জ নিয়েও টাকা লোপাট করা হচ্ছে। বিমানের প্রধান কার্যালয়ের কার্গো শাখা, মার্কেটিং বিভাগ ও শীর্ষ পর্যায়ের একটি সিন্ডিকেটের যোগসাজশে বিদেশের স্টেশন ম্যানেজার, কান্ট্রি ম্যানেজার ও স্থানীয় জিএসএ এসব অনিয়ম-দুর্নীতি করছে।

সম্প্রতি বিমানের জিএসএ নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও তদন্ত করেছে। বিমানের বৈদেশিক অফিস পরিদর্শন করেছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। তদন্তে দেখা গেছে, জিএসএ কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করছে টিকিট বিক্রি খাতে। এ খাতে শিশু ও ইনফ্যান্ট বাচ্চাদের ক্যাটাগরিতে ফেলে প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে টিকিট বিক্রি করে এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজ অনুমোদন করে বাড়তি অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। সম্প্রতি সৌদি আরবের একটি স্টেশনে এ ধরনের একটি ঘটনা ধরা পড়ে। তবে লুটপাট বেশি হচ্ছে লন্ডন, জেদ্দা, দুবাই, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর স্টেশনে। দেশে ফেরার তারিখ এগিয়ে আনতে হজযাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ টিকিট কাটতে গিয়ে বিমানের টিকিট না পেলেও পরে দেখা যাচ্ছে অনেক আসন শূন্য রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিকবার। টিকিট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, বিমানের জেদ্দা ও লন্ডনের (কার্গো) জিএসএ নিয়োগ নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি ও গোপন লেনদেন হয়েছে। বছরে ৩৬ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে ওমান জিএসএ অফিসের বিরুদ্ধে। জেদ্দায় জিএসএ অপারেটরের বিরুদ্ধে একশ' কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে। জেদ্দাতে এই জিএসএ কোম্পানি আরও অনেক এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কাজ করে। বিমানের বদলে অন্য এয়ারলাইন্সের কাছে যাত্রী বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এটির বিরুদ্ধে। 

বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও ১৫টি দেশে বিমানের অফিস রয়েছে। তবে বিদেশি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জিএসএ নিয়োগে চুক্তিতে উপনীত হওয়ার কোনো নীতিমালা নেই বিমানের। ১৯৯৮ সালে বিমানের ২২৯তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জিএসএ নিয়োগ দেওয়া হয়। এ সুযোগে বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছামতো জিএসএ নিয়োগ করে। 

দেশে বিমানের বৈদেশিক অফিস রয়েছে। অধিকাংশ স্টেশনে বিমানের জিএসএ রয়েছে। অনেক জায়গায় বিমানের নিজস্ব কান্ট্রি ম্যানেজার, স্টেশন ম্যানেজারসহ একাধিক স্টাফ থাকলেও জিএসএ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব জিএসএ নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বিমানের শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে। রয়েছে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ। 

নিয়ম অনুযায়ী, বিমানের ককপিট ক্রুদের জন্য নির্ধারিত হোটেল প্রথম শ্রেণির হওয়ার কথা। কিন্তু জিএসএ প্রতিষ্ঠানগুলো পাঁচ তারকা শ্রেণির বিলাসবহুল হোটেল রুম ভাড়া করে ককপিট ক্রুদের থাকার ব্যবস্থা করে। সিঙ্গাপুরে একজন সচিবের হোটেল কক্ষে থাকার জন্য সরকারি বরাদ্দ ১৪০ ডলার। অথচ বিমানের একজন ককপিট ক্রু থাকছেন প্রতিদিন ২৪৪ মার্কিন ডলার দামের হোটেল কক্ষে। আর কেবিন ক্রু থাকছেন ১৮৪ মার্কিন ডলারের হোটেল কক্ষে। এভাবে ব্যয়বহুল হোটেল ব্যবহার করেও বছরে ৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করছে বিমান। 

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম মোসাদ্দেক আহমেদ সমকালকে বলেন, জিএসএ নিয়োগে আলাদা কোনো নীতিমালা নেই। বিদেশি স্টেশনগুলোতে বিমানের যাত্রী বাড়াতে জিএসএ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিমানকে লাভজনক করতে জিএসএ কাজ করে থাকে। জিএসএ কোম্পানিগুলোর দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। 

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মহিবুল হক সমকালকে বলেন, বিমানের দুর্নীতির খাতগুলো চিহ্নিত করে একের পর এক শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। দুদকের অনুসন্ধানে এসেছে, বিমানের দুর্নীতির বড় একটি খাত হচ্ছে জিএসএ নিয়োগ। জিএসএ নিয়োগে নীতিমালা তৈরি ও কঠোর হওয়ার বিষয়টি আগামী বোর্ড মিটিংয়ে তোলা হবে। বিমানকে লাভজনক করতে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে।