ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিলছে না মোটা ধান

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২  

প্রতি বোরো ও আমন মৌসুমে চালকল মালিকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চাল সংগ্রহ করেছে খাদ্য বিভাগ। চলতি আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ১৭ হাজার ১৭৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চালকল মালিকরা ১৫ হাজার ৬০৬ টন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছেন। ফলে দেড় হাজার টনেরও বেশি চালের ঘাটতি থাকবে। এতে করে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্য বিভাগে সরবরাহের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকাম থেকে চালকল মালিকরা সাধারণত বিআর-১১ বা মোটা ধান সংগ্রহ করেন। চাহিদা মেটাতে দেশের অন্যান্য মোকামগুলো থেকেও ধান আনতে হয় মালিকদের। তবে এবার কোনো মোকামেই বিআর-১১ জাতের ধান মিলছে না।

এবারের আমন মৌসুমে ৪২ টাকা কেজি দরে চাল সংগ্রহ করছে খাদ্য বিভাগ। এ দরে চাল দিতে গিয়ে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে বলে দাবি চালকল মালিকদের। মূলত আশুগঞ্জ মোকামে বিআর-১১ জাতের ধানের আমদানি নেই। ফলে বাধ্য হয়ে বিআর-২২ ও বিআর-৩৯ জাতের ধান থেকে চাল তৈরি করে তা সরবরাহ করছেন মিল মালিকরা। তবে চাহিদা বিবেচনায় দেশের অন্য মোকাম থেকেও ধান আনতে হচ্ছে। এতে করে চাল তৈরিতে খরচ পড়ছে বেশি।

বর্তমানে আশুগঞ্জ মোকামে বিআর-২২ জাতের ধান প্রতি মণ বেচাকেনা হচ্ছে ৯২০-৯৩০ টাকা এবং বিআর-৩৯ জাতের প্রতি মণ ধানের বাজারদর ১১৫০-১১৮০ টাকা। এসব ধান চলতি আমন মৌসুমের। যার বেশিরভাগই ভেজা। ফলে এসব ভেজা ধান থেকে পুরাতন ধানের তুলনায় চালও কম পাওয়া যায়।

আশুগঞ্জ মোকামে ধান নিয়ে আসা বেপারীরা জানান, গত জুন মাসে অকাল বন্যায় হাওরাঞ্চলে বিআর-১১ জাতের ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আমন মৌসুমে মোটা ধানের চাষ হয়েছে কম। এর ফলে কৃষকের গোলায় বিআর-১১ বা মোটা ধান নেই। তাছাড়া পুরাতন ধানের সংকট থাকায় দামও কিছুটা বেশি।

এদিকে, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার ধান বেপারী রহিম মিয়া জানান, তারা কৃষকদের কাছ থেকে চাহিদা মতো ধান সংগ্রহ করতে পারছেন না। ফলে মোকামে ধানের যোগান কম। আর চালকল মালিকদের চাহিদা বিআর-১১ বা মোটা ধান। কিন্তু হাওরাঞ্চলে এ ধানের ফলন ভালো হয়নি। এজন্য মোকামে আমদানিও নেই।

চাল সংগ্রহে চালকল মালিকদের সাথে চুক্তির জন্য খাদ্য বিভাগের ৩ দফায় বাড়ানো চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত ১৫ ডিসেম্বর। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় চালকল মালিকদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ৯১টি চালকল চুক্তি করে। যদিও জেলায় প্রায় দুইশ চালকল রয়েছে। তবে চালকল মালিকরা চুক্তির সমপরিমাণ চাল সরবরাহ করলেও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঘাটতি থাকবে ১ হাজার ৫৭০ টন চালের।

চালকল মালিকরা জানিয়েছেন, খাদ্য বিভাগে সরবরাহের জন্য বিআর-১১ জাতের ধান না পেয়ে বিআর-২২ এবং বিআর-৩৯ জাতের ধান থেকে চাল তৈরি করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি চাল তৈরিতে খরচ পড়ছে ৪৫ টাকারও বেশি। কিন্তু সরকার ৪২ টাকা নির্ধারণ করায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার যদি চালকল মালিকদের প্রণোদনা না দেয়, তাহলে চুক্তির সমপরিমাণ চাল সরবরাহ করা যাবে না। চুক্তির অর্ধেক চাল সরবরাহ করেই খাদ্য বিভাগে দেওয়া জামানত ফেরত চান চালকল মালিকরা।

আশুগঞ্জ রজনীগন্ধা অ্যাগ্রোফুডের সত্ত্বাধিকারী হাসান ইমরান জানান, মিলের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত অথবা কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার ভয়ে লোকসানেই চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছেন তারা। এজন্য বাধ্য হয়েই তুলনামূলক বেশি দামের ধান থেকে চাল তৈরি করতে হচ্ছে। এছাড়া মোকামে বিআর-২২ জাতের ধানের দরও স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ১০০ টাকা বেশি বলে জানান তিনি।

আশুগঞ্জ উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল সিকদার বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা লোকসানে চাল দেওয়ার জন্য চুক্তি করেছি। তবে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি আমাদের যেন প্রণোদনা দেওয়া হয়। যদি এটি না করা হয়, তাহলে অন্তত চুক্তির ৩০-৪০ শতাংশ চাল সরবরাহের পর যেন আমাদের জামানত ফেরত দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকারিয়া মুস্তফা বলেন, মিল মালিকদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী পুরো চালই আমরা সংগ্রহ করত পারবো। পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাকি দেড় হাজার টন চালও চুক্তি করা মিলগুলো থেকেই সংগ্রহ করা যাবে বলে আশা করছি। ফলে আমাদের কোনো ঘাটতি থাকবে না।