ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যার আগে বাবাকে ফোনে যে কথা বলল ছেলে

নেত্রকোণার ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় নিহতের ছেলেসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে র‌্যাব-১৪ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয়।

গ্রেফতাররা হলেন- ৩৫ বছর বয়সী মো. আজহার মিয়া, নিহতের ছেলে ২২ বছরের তরিকুল ইসলাম বিপ্লব, ১৯ বছরের বিজয় কর্মকার ও ১৮ বছরের তরিকুল ইসলাম রানা।

নিহত আজিজ নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের মানিকদির গ্রামের বাসিন্দা। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে তাকে হত্যা করা হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তা আখের মুহম্মদ জয় জানান, ১ সেপ্টেম্বর রাতে আজিজকে কুপিয়ে গুরুতর অবস্থায় ফেলে যান গ্রেফতাররা। পরে স্থানীয়রা হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে পূর্বধলা থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী। মামলার পর মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিজয়, রানা ও আজহারকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। একই রাতে শ্যামগঞ্জ এলাকা থেকে নিহতের ছেলে বিপ্লবকেও গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাবের কোম্পানি অধিনায়ক আরো জানান, মাদক সেবন করে প্রায়ই বাড়িতে এসে মাতলামি করতেন বিপ্লব। মাদক সেবন থেকে বিরত রাখতে ছেলেকে শাসন করতে গিয়ে অনেক সময় মারধর করতেন আজিজ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাদকাসক্ত এ ছেলে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দুদিন আগে শ্যামগঞ্জ বাজারে একটি দোকানের পেছনে বসে বন্ধু বিজয়, রানা, আজাহার, রাসেল ও সাধনদেরকে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করেন বিপ্লব। একই সঙ্গে মিশন সফল করতে বিজয়কে দুটি চাইনিজ কুড়াল কেনার জন্য দেড় হাজার টাকা দেন।

ঘটনার দিন রাতে আজিজকে ফোন করেন বিপ্লব। বাবা ফোন ধরতেই ‘আমাকে পুলিশে ধরেছে, আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাও’ বলে জানান ছেলে। মাদকাসক্ত ছেলের কথা বিশ্বাস করে ঘটনাস্থলে যান আজিজ। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার পেছন থেকে হাত ধরেন বিপ্লব ও আজাহার। এছাড়া গামছা দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে দুদিক থেকে টেনে ধরেন রাসেল ও সাধন। একপর্যায়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আজিজকে রক্তাক্ত করেন বিজয় ও রানা। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা চলে যান। তবে পাশের একটি পুকুরে হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল দুটি ফেলে রেখে যান।