ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

মনোহরগঞ্জের পাটিয়ালা-বিহড়া শিক্ষা বঞ্চিত শত শত শিশু

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২৩  

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার ইউনিয়নের পাটিয়ালা-বিহড়া দু’গ্রামে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় আজকের ডিজিটাল যুগে এসে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শত শত কোমলমতি শিশু। বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দুরত্ব বেশি হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। ফলে এসব শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকায় পড়েছেন তারা। অথচ এ দু'গ্রামের মানুষের জন্য রয়েছে একটি ভোট কেন্দ্র। ভোটের সময় আসলে অস্থায়ী বুথ বসেন মসজিদের মক্তব ঘরে।


গ্রাম দুটির কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাটিয়ালা-বিহড়া গ্রাম দু’টিতে প্রায় এক হাজার পরিবারের বসবাস করে আসছেন। সে অনুযায়ী দু’গ্রামে ৫-১০ বছর বয়সী প্রায় পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে। এ গ্রাম দু’টি থেকে আশপাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব ৪-৫ কিলোমিটার হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না। কয়েক দিন গেলেও পরে আস্তে আস্তে পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে আজকের এ ডিজিটাল যুগে এসে শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন শত শত শিশু। এতে করে নিরক্ষরতা ও শিশু শ্রম বেড়েই চলেছে। অপরদিকে এ দু’গ্রামের মানুষের জন্য রয়েছে একটি ভোট কেন্দ্র। জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ইউপি নির্বাচনেও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় একটি মসজিদের মক্তব ঘরে। যা কি না অস্থায়ী কয়েকটি বুথ বানিয়ে ভোট নেয়া হয়। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন এলাকাবাসী৷ এ অবস্থায় তারা একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান।


পাটিয়ালা গ্রামের মাকসুদুর রহমান বলেন, এ সরকার শিক্ষা ও উন্নয়ন বান্ধব সরকার। আমার মনে হয় সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এমন কোন জায়গায় নেই, এ দু'গ্রাম ছাড়া। এ দু’গ্রামে বিদ্যালয় না থাকায় পার্শ্ববর্তী গ্রামে তিন চার মাইল পায়ে হেঁটে ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে হয়। তাদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন জানি দুর্ঘটনা খবর আসে। তাই তিনি একটি বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান।


বিহড়া গ্রামের প্রবাসী আব্দুল আজিজের স্ত্রী তানিয়া সুলতানা বলেন, তার এক মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে । মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয়। তিনি একদিন স্কুলে না গেলে, মেয়েও স্কুলে যাবে না বলে বাড়িতে থাকে। সংসারে অনেক কাজ। কি মেয়ে নিয়ে স্কুলে যাবো, না সংসার কাজ করবো। একটি বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান তিনি।


বয়োবৃদ্ধ নোয়াব আলী বলেন, এ দু'গ্রামের মানুষের জন্য একটি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। ভোটের সময় আসলে ভোট হয় মসজিদের মক্তব ঘরে। শত শত ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রয়েছে। যারা কি না ৩-৪ মাইল পায়ে হেঁটে পাশের গ্রামের স্কুলে যায়। যার জন্য অনেক ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়ে না গিয়ে পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন কাজকর্মে লেগে যায়। সরকারি ভাবে গ্রাম দু’টি নিয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি। বিপুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিটি খাতের উন্নয়নে অধিকতর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিদ্যালয় দুরে হওয়ায় কোমলমতি শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে এটা দু:খজনক। গ্রাম দু’টি নিয়ে সরকারি ভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রয়োজন।


উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিষয়টি অবগত হয়েছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে যদি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা পাওয়া যায় তাহলে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলোচনা করে সরকারি ভাবে বিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


 উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জাকির হোসেন বলেন, পাটিয়ালা-বিহড়া গ্রাম দু’টিতে অনেক পরিবারের বসবাস হলেও কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকার কারণে অনেক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জায়গা নিয়ে। প্রথমে এক লোক জায়গা দান করে পরে ফেরত নেয়। কেউ জায়গা দিলে এ দু'গ্রামে সরকারিভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো।
এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, বিষয়টি জেনেছি। কেউ জায়গা দান করলে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।