ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মাটির হাঁড়ি নাকি আধুনিক স্টিল বা নন স্টিক, কোনটি বেশি উপকারি?

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০১৯  

বর্তমানে তো মাটির হাড়ি বাসনের চল নেই বললেই চলে। সে জায়গা এখন দখল করে নিয়েছে নন-স্টিকির বাসনপত্র। তবে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির কথা মাথায় রাখলে এসব বাসন ব্যবহার না করায় শ্রেয়। কারণ ভুল বাসনে, ভুলভাবে রান্না করলে এর থেকে কিছু উপাদান এসে মিশে খাবারকে বিষাক্ত করে দিতে পারে৷।দেখা দিতে পারে বিভিন্ন অসুখ। কাজেই আসুন, দেখে নেয়া যাক, আমরা সচরাচর যেসব পাত্রে রান্না করি বা খাই, তা কতটা নিরাপদ-

কাটিং বোর্ড

ছুরি দিয়ে সবজি কাটতে হলে চাই কাটিং বোর্ড। পরিষ্কার রাখার সুবিধার জন্য আমরা সচরাচর প্লাস্টিকের বোর্ড ব্যবহার করি। কিন্তু সমস্যা হল, খুব ভাল করে পরিষ্কার না করলে কিছু দিন পরই এর খাঁজে খাঁজে ই–কোলি, সালমোনেলা জাতীয় জটিল জীবাণু বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে তা সবজিতে মেশে। রান্নার তাপে তারা সব সময় মরে না। ফলে খাবারের মাধ্যমে অন্ত্রে বাসা বাঁধলে জটিল পেটের গোলমাল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাজেই বিজ্ঞানীদের মত হল, কাঠের বা রবারের কাটিং বোর্ড ব্যবহার করা ভাল। যেখানে এ সব জীবাণু জন্মাতে পারে না।

অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের ব্যবহার 

অ্যালুমিনিয়াম , অক্সিডাইজ করা থাকে বলে এতে রান্না করলে বা গরম করলে খাবার দূষিত হয় না। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করলে কিন্তু ব্যাপারটা আর এত নিরাপদ থাকে না। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে গরম খাবার রাখলে বা এতে জড়িয়ে রান্না করলে সে খাবার দূষিত হতে পারে। লেবু, টমেটো বা ভিনিগারের মতো টক কিছু মেশানো থাকলে তো এই আশঙ্কা আরো বেড়ে যায়।

জার্নাল অফ অ্যালঝাইমার ডিজিজে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে জানা গেছে, কম বয়সে অ্যালঝাইমার ও পার্কিনসন ডিজিজ দেখা দেয়ার মূলে এই ধাতুটির ভূমিকা আছে। এছাড়া আমেরিকার স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যে এজেন্সি ফর টক্সিক সাবস্ট্যান্স ও ডিজিজ রেজিস্ট্রি (এটিএসডিআর) বের করা হয়, তাতে ক্ষতিকর ২০০টি রাসায়নিকের তালিকায় অ্যালুমিনিয়ামের নামও আছে। কাজেই খাবার প্যাক করার কাজে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের বদলে পার্চমেন্ট কাগজ ব্যবহার করুন। আর রান্নায় ফয়েলের মতো সুবিধা পেতে কাচের পাত্রে তেল ব্রাশ করে নিন।

নন-স্টিক প্যান

শৌখিন রান্নাঘরের অঙ্গ। কম তেলে রান্না করতে ও সহজে পরিষ্কার করতে এর জুড়ি মেলা ভার। ১৯৪৬ সালে টেফলন কোটিংয়ের হাত ধরে সে প্রথম আসে বাজারে। তারপর একে একে সিলভারস্টোন, টেফাল, অ্যানোলন, সার্কুলন, সেফালন ও আরো অনেকে আসতে থাকে। মূলত অ্যালুমিনিয়মের সঙ্গে বিভিন্ন উপায়ে এদের জুড়ে এসব বাসন বানানো হয়। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, এসব উপাদানের সঙ্গে বন্ধ্যাত্ব, পড়াশোনার দক্ষতা কমে যাওয়া ও ওজন বাড়ার একটা যোগ আছে। যদিও তা সত্ত্বেও তার বাজার পড়ে যাওয়ার বদলে ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী। তাই রান্নায় একটু বেশি তেল লাগলেও নিয়মিত নন-স্টিক প্যান ব্যবহার না করে নিরাপদ স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে রান্না করুন। লোহার পাত্রে করতে পারলে তা স্বাস্থ্যের জন্য আরো ভালো।

স্টেইনলেস স্টিল 

ভাল মানের স্টিল দেখতে ভাল, কাজেও ভাল। এই ধরনের বাসন থেকে কোনো ক্ষতিকর ধাতু খাবারে এসে মেশে না। যদিও আয়রন, ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ মিশলে বরং ভাল, কারণ আমাদের শরীরে এদের প্রয়োজনীয়তা আছে। নিকেল মিশলে ক্ষতি আছে। তবে মেশার আশঙ্কা নেই, যদি না তারজালি দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করার সময় পাত্রে প্রচুর কাটাছেঁড়ার দাগ হয়ে যায়। কিছু স্টিলের পাত্রে অ্যালুমিনিয়াম বা তামার প্রলেপ দেয়া থাকে। কখনো আবার পাত্রের নীচে থাকে তামার প্রলেপ। অনেকক্ষণ তাপ ধরে রাখার জন্যই এসব করা হয় সচরাচর। তবে স্টিলের দু’টি স্তরের মাঝে স্যান্ডুইচের মতো করে দেয়া থাকে বলে, প্রবল ঘষাঘষিতে উপরের স্তর উঠে না গেলে কোনো ক্ষতি হয় না।

লোহার পাত্র

লোহার পাত্র দেখতে খুব একটা ভাল হয় না। তার উপর এতে রান্না করলে খাবার অনেক সময় কালো হয়ে যায়। বিশেষ করে টমেটো, লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে রান্না করলে। কিন্তু এসব না ভেবে যদি লোহার কড়াই ব্যবহার করেন, কড়াই থেকে লোহা খাবারে মিশে পুষ্টি বাড়িয়ে দেবে। তবে হ্যাঁ, পলিসাইথিমিয়া নামে বেশি রক্ত থাকার অসুখ বা থ্যালাসেমিয়া রোগ থাকলে নিয়মিত ব্যবহারে সমস্যা হতে পারে।

তামা

এজেন্সি ফর টক্সিক সাবস্ট্যান্স ও ডিজিজ রেজিস্ট্রি (এটিএসডিআর) এর প্রায়োরিটি টক্সিন তালিকার বেশ উঁচুতেই রয়েছে তামার নাম। অর্থাৎ শরীরে এর পরিমাণ খুব বেড়ে গেলে, সমস্যা আছে। উল্টো দিকে আবার সুস্বাস্থ্যের জন্য এর প্রয়োজন। ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স এর ডায়াটারি রেফারেন্স ইনটেক্সের মতে, পূর্ণবয়ষ্ক মানুষের দিনে ৯০০ মাইক্রোগ্রামের মতো তামা দরকার। আর তার পরিমাণ ১০ হাজার মাইক্রোগ্রাম বা ১০ মিলিগ্রামের থেকে বেড়ে না গেলে কোনো ক্ষতি নেই। কাজেই এই সব বাসনপত্রে রান্না করলে বা খেলে ভাল ছাড়া মন্দ হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা নেই।

প্লাস্টিক 

প্লাস্টিক পাত্রে পানি ও খাবার রাখলে এমনিতেই বিপিএ নামের ক্ষতিকর রাসায়নিক তাতে মিশে যায়। আর গরম করলে তো কথাই নেই।

মেলামাইন

প্লাস্টিকের চেয়ে অনেক ভাল অবশ্যই। তবে এতে খাবার গরম করা বা রান্না না করাই ভাল। কারণ গলে না গেলেও এ থেকে সামান্য পরিমাণে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে খাবারে মিশতে পারে। মাইক্রোওয়েভ আভেন বা ডিশ ওয়াশারের তাপেও একই ব্যাপার ঘটতে পারে, যতই তা মাইক্রোওভেন-টেকসই  বলা হোক না কেন।

সিরামিক

যেভাবে খুশি ব্যবহার করা যায়। আগুন গরম খাবার যেমন খাওয়া যায়, এতে রান্না করলেও ক্ষতি নেই। মাইক্রোওভেন, ডিশ ওয়াশার বা ব্রয়লারের তাপেও সে ঠিকঠাক থাকে। দেখতেও সুন্দর। তবে মেলামাইনের তুলনায় দাম একটু বেশি।

বোন চায়না  

হালকা ওজন। দেখতে অসাধারণ। ডিনার সেট হিসেবে অনবদ্য। মাইক্রোওভেনে খাবার গরম করতেও ব্যবহার করতে পারেন।

পোর্সেলিন 

দেখতে ভাল, টেকসই, নিরাপদ। মাইক্রোওভেন, সাধারণ আভেন বা ডিশ ওয়াশারে ব্যবহার করতে পারেন স্বচ্ছন্দে৷ ভাঙাভাঙির ব্যাপার নেই। তবে অনেক পোর্সেলিনের বাসনে সৌন্দর্যের খাতিরে বিভিন্ন ধাতু দিয়ে একটু ডিজাইন করা থাকে। সেক্ষেত্রে কিন্তু তা আর মাইক্রোওভেনে ব্যবহার করা যাবে না।

মাটি বা পাথরের বাসন 

আগেকার দিনে মাটির হাঁড়িতে ভাত রান্না করার চল ছিলো। পানি রাখা হতো মাটির কলসি বা কুঁজোতে। গরমকালে সেই পানি খাওয়ার মজাই ছিলো আলাদা। পাথরের বাসনে খেতেন কেউ কেউ। আজকাল অনেকে শখ করে এসব ব্যবহার করেন। ক্ষতি কিছু নেই। তবে মাটির পাত্র একদিকে যেমন ভঙ্গুর, উচ্চতাপও সে বিশেষ সহ্য করতে পারে না। কাজেই বাসনের রূপ, গুণ অক্ষুণ্ণ রাখতে চাইলে তাকে মাইক্রোওভেন থেকে দূরে রাখবেন। পাথরের বাসন অত ভঙ্গুর না হলেও তাপমাত্রার অনেকটা পরিবর্তন সে মেনে নিতে পারে না। কাজেই এই ফ্রিজে ঢোকালাম তো এই মাইক্রোওভেনে, এসব চলবে না।