ব্রেকিং:
বিএনপি নেতারা বউদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির সিলিন্ডার ফেটে অটোরিকশায় আগুন, ভেতরেই অঙ্গার চালক ভুটানের রাজা ঢাকায় আসছেন আজ, সই হবে তিন এমওইউ মেঘনায় ট্রলারডুবি: দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধারকাজ শুরু দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস যৌন হয়রানি রোধে কাজ করবে আওয়ামী লীগ জলবায়ু সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব: রাষ্ট্রপতি ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার ঘোষণা কানাডার ‘ইফতার পার্টিতে আল্লাহর নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়’ গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে বাইডেনের আপত্তি নির্বাচনে জয়লাভের পর পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত বাংলাদেশকে ২০ টন খেজুর উপহার দিল সৌদি আরব মায়ের আহাজারি ‘মেয়েটাকে ওরা সবদিক থেকে টর্চারে রাখছিল’ এই প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ ভিড়ল গাজার উপকূলে জিম্মি জাহাজের ৪ জলদস্যুর ছবি প্রকাশ্যে নাইজেরিয়ায় রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেফতার করছে পুলিশ বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মুরাদনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে গাইড বইয়ের ছড়াছড়ি

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

কুলসুম আক্তার কাকলী পড়ের পঞ্চম শ্রেণীতে রোল ৬ তার বাবা কবির হোসেন একজন অটোরিক্সা চালক, দুই কন্যা সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত। কুলসুমের সহপাঠীদের ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষক শরিফার নির্দেশে কেনা হয়ে গেছে ‘পপির’ গাইড বই, যা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। বাবা কবির হোসেন অটোরিক্সা থেকে যা উপার্জন  করেন সংসার চালিয়ে ৯০০ টাকা মূল্যের ‘পপি’ গাইড বই মেয়েকে কিনে দেয়া তার কাছে বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই না। এদিকে মেয়েকে সু-শিক্ষায় শিক্ষায় শিক্ষিত দেখতে চান বাবা, কি আর করার অবশেষে মেয়েকে কথা দিয়েছে ঋণ কর্জ করে হলেও কিছুদিনের মধ্যে তাকে কিনে দেয়া হবে স্বপ্নের সেই ‘পপি’ গাইড বই। এ তো গেলো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ১৬৩নং নহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা।

একই চিত্র উপজেলার ধামঘর পূর্ব, রাণীমুহুরী, সুবিলারচর, বোড়ারচর, নেয়ামতকান্দি, জাহাপুর, ধনীরামপুর, ১০১নং রহিমপুর, মুরাদনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২০৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।
সরেজমিনে গিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে নিষিদ্ধ গাইড বইয়ের যাঁতাকলে, ঝড়ে পরছে অনেক দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনেক আগেই প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ করেছে। তার পরও কুমিল্লর মুরাদনগর উপজেলার বাজারগুলোতে দেদার বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ সেই নোট ও গাইড বই।
তবে দোকানীদের দাবী শিক্ষকরা যদি গাইড বইয়ে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করে তাহলে আমরা চাইলেও গাইড বই বিক্রি করতে পারবো না।

বরং নোট ও গাইড প্রকাশনী সংস্থাগুলোও বিদ্যালয় বা শিক্ষকদের নানা রকম সুবিধা দিয়ে গাইড বইয়ের চাহিদা ও দাম দুটোই বৃদ্ধি করে দিয়েছে। সুবিধা দেয়ার দৌড়ে যারা এগিয়ে আছে তাদের গাইড বইয়ের দাম বেশি হলেও বাজারে সেই বইয়ের চাহিদাই অনেক বেশি। যা ‘পপি’ একাই ৮০% বাজার দখল করে রেখেছে।
ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নোট ও গাইড ব্যবসা বহু বছর ধরে চলে এলেও বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতির দোহাই দিয়ে তা আরও বেড়ে গেছে। এই পদ্ধতিতে পাঠদানে শিক্ষকেরা যথেষ্ট দক্ষ নন বলে শিক্ষার্থীদের নোট ও গাইডের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর লাভবান হচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

এদিকে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে নহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফা সহ অন্যান্য বিদ্যালয় প্রধানরা বলছেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সবসময় গাইড বইয়ে নিরুৎসাহিত করি। অনেক সময় তারা নিজেদের প্রয়োজনে তা কিনে থাকতে পারে। আমরা সবসময় গাইড বইয়ের বিরুদ্ধে।

মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আকতার জানান, গাইড বই পুরোপুরি নিষিদ্ধ। আর গাইড বইতো এখন আর কাজেও লাগেনা কারণ মুখস্থবিদ্যার দিন শেষ। যদি কোন শিক্ষককে এ ধরনের কাজে জড়িত পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবদুল মান্নান মুঠোফোনে বলেন, আমাদের প্রাইমারিতে কোন গাইড বই এলাউড না। শিক্ষার্থীদের গাইড বইয়ে উৎসাহিত করা সম্পুর্ণভাবে এটি একটি অনৈতিক কাজ যা মোটেও কাম্য নয়। যদি কারো বিরুদ্ধে সু-নির্দিষ্ট প্রমান পাওয়া যায় অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আলাউদ্দিন ভূঞা জনী জানান, নিষিদ্ধ নোট ও গাইডের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।