ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

মুরাদনগরে বর্ষায় বেড়েছে নৌকার চাহিদা, ব্যস্ত কারিগররা

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২২  

চলছে বর্ষাকাল। চারপাশের নদী, খাল-বিলে পানি আর পানি। বর্ষায় চলাচলে একমাত্র বাহন নৌকা। এই সময় নৌকার চাহিদা একটু বেশি থাকে। তাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। পাশাপাশি চলছে পুরনো নৌকা মেরামতের কাজও। 

গত বছরের তুলনায় কাঠের দাম বেশি হওয়ায় এবার নৌকার মূল্য একটু বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। জমে উঠেছে নৌকা বিক্রি। মুরাদনগরসহ পার্শ্ববর্তী ৬টি উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে মাছ শিকারের জন্য নৌকা ব্যবহার করে। পাশাপাশি যাতায়াতের জন্য নৌকার ওপর নির্ভরশীল তারা। 

স্থানীয়রা বলছেন, আগের মতো এখন নৌকার তেমন চাহিদা না থাকলেও আষাঢ় মাসে চাহিদা বেড়ে যায়। প্রতিবছর বর্ষায় উপজেলার অধিকাংশ জনপদ পানিতে থৈ থৈ করে। ডুবে যায় অনেক রাস্তাঘাট, নদী-নালা, খাল-বিল। যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করে ছোট-বড় নৌকা। তাই বর্ষা মৌসুম আসলে এই অঞ্চলে বেড়ে যায় নৌকার কদর। এজন্য নৌকার চাহিদা মিটাতে এখন দিনরাত পরিশ্রম করে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।

boatনৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বালুছনা, কৈজুরী, কাঁঠালিয়াকান্দা ও পাঁচকিত্তাসহ বিভিন্ন গ্রামে নৌকা তৈরি ও মেরামতের কাজ চলছে। কেউ কাঠ কাটছেন, আবার কেউ নৌকায় আলকাতরা লাগাচ্ছেন। প্রখর রোদ ও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বর্ষার আগমনের শুরু থেকে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। পরিবারের পুরুষদের পাশাপাশি নৌকা তৈরিতে সহযোগিতা করছেন নারীরা। ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকার, বুলু সরকার, খোকন সরকার, বিপুল সরকারসহ অন্তত ১০টি পরিবার নৌকা তৈরির পেশায় যুক্ত। অন্যান্য মৌসুমে তারা কাঠমিস্ত্রির পেশায় যুক্ত থাকলেও বর্ষার মৌসুমে তৈরি করেন কাঠের নৌকা। এখানে তৈরি নৌকা এ উপজেলার শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তম বাজার রামচন্দ্রপুর, ডুমুরিয়া ও ইলিয়টগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির জন্য। প্রতিটি নৌকা ৬-৮ হাজার টাকা বিক্রি করেন তারা। তা থেকে  নৌকাপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। 

নৌকার কারিগর লোহাগাড়া গ্রামের ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘৫০ বছর যাবত নৌকা তৈরির কাজ করছি। সামনে বর্ষা মৌসুম ইতোমধ্যে তৈরি করেছি ৫টি নৌকা। আগের মত নৌকার চাহিদা তেমন নেই, কিন্তু বর্ষার শুরুতে নৌকার চাহিদা থাকে। তাই বসে না থেকে পরিবারের ভরন-পোষণের জন্য নৌকা তৈরির কাজ চালিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি।’

boat 2নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।

নৌকা তৈরির অন্য এক কারিগর একই গ্রামের মৃত সনাতন সরকারের ছেলে রাসু সরকার বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই নৌকা তৈরির কাজ করি। বর্ষার মৌসুম তাই এখন ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে জেলেদের মাছ ধরার নৌকা বানানোর কাজে। চাহিদা মোতাবেক ছোট, বড় বিভিন্ন রকম নৌকা বানানো হয়। আর নৌকার আকারভেদে দাম নির্ধারণ করা হয়। এ মৌসুমে ৪০-৫০টি নৌকা বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে নৌকা তৈরির মৌসুমে আমাদের একসঙ্গে অনেক টাকার কাঠ কিনতে হয় নৌকা তৈরির জন্য। আর এ টাকা আমরা ঋণ করে এনে নৌকা বিক্রি শেষে লাভের একটা অংশ ওই ঋণদাতাকে দিয়ে দিতে হয়। সরকার যদি এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করত তাহলে আমাদের কষ্ট অনেকটা লাগব হত। 

কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল হক বলেন, ‘বর্ষার শুরুতে এ উপজেলার নিচু গ্রামে নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। ওইসব এলাকায় যাতায়াত ও জেলেরা মাছ ধরার জন্য নতুন নৌকা কিনে থাকেন। ছোটবেলায় আমরা অনেক নৌকা দেখেছি, কিন্তু সেই নৌকার দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না। নৌকা তৈরির শিল্পটাকে টিকিয়ে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি দরকার।’

মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর বলেন, ‘যারা নৌকা তৈরি করেন তারা খুবই দরিদ্র। এ উপজেলায় যারা দীর্ঘদিন নৌকা তৈরির পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিবো। সরকারিভাবে উন্নত প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করার যদি কোন প্রকার সুযোগ থাকে তাহলে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।’