ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মুরাদনগরে ৩ ফসলি কৃষি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটায়

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২২  

কুমিল্লার মুরাদনগরে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে ৩ ফসলি কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, এ ভাবে মাটি কেটে নিলে ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি কমে গিয়ে ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দিবে। সুধীজনদের মতে মাটি আমাদের মা। সেই মাকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। নিজের স্বার্থের জন্য এ ভাবে জমির মাটি কেটে নিলে কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের পরিনতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩-এর ৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, ইট তৈরি করার জন্য পতিত জমি, খাল, বিল, নদ-নদী, হাওর-বাঁওড় বা চরাঞ্চল থেকে মাটি কেটে নেওয়া যাবে না। কিন্তু এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মুরাদনগর উপজেলায় গড়ে ওঠা ৪৬টি ইটভাটায় যাত্রাপুর, পায়র, দারোরা, বড় আলীরচর, সোনাপুর, চাপিতলা, কোড়াখাল, বাবুটিপাড়া, ছালিয়াকান্দি, বোরারচর, চন্দনাইল, রোয়াচালা, শ্রীকাইল বিলের কৃষিজমি, গোচারণ ভূমি, জলাশয় ও গোমতী নদের পাড়ের গুঞ্জুর, ত্রিশ, দক্ষিণ ত্রিশ ও ধামঘর এলাকা থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবছর একটি ভাটায় প্রায় ৫০-৬০ লাখ ইট উৎপাদন (পোড়ানো) হয়। ৪৬টি ইটভাটার মাটি কাটার জন্য বিলে রয়েছে ২৭টি খননযন্ত্র ও প্রায় ৩২২টি ট্রাক্টর। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাটিভর্তি ট্রাক্টরগুলো ফসলি জমির উপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা তৈরি করে চলাচল করছে। এতে ধুলাবালুতে দুই পাশের জমির ফসল বিনষ্ট হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে কিছু বলতেও পারছেন না নিরীহ কৃষকরা। আবার কেউ কেউ লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা নিরবেই সহ্য করে যাচ্ছেন অবৈধ  ট্রাক্টর চালকদের সীমাহীন অত্যাচার ও পাশবিক নির্যাতন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, কৃষি কাজই আমাদের আয়ের উৎস। আমরা এ কৃষি জমিগুলোতে বছরে তিন বার ধান চাষ করে থাকি। কিন্তু ভূমিখেকো ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। তাদের এই বেপরোয়া কর্মকান্ডে আমরা কৃষি জমি হারাচ্ছি। যে ভাবে তারা কৃষি জমি কেটে নিচ্ছে কিছু দিনের মধ্যেই আমরা বেকার হয়ে পড়ব। প্রশাসন যদি দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে আমাদের ৩ ফসলি জমি ভেকুর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিস দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানায়, এ ভাবে কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। কৃষি প্রধান দেশে ভূমিখেকোরা যে ভাবে তিন ফসলি জমি বিনষ্ট করছে, তাদের এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে যেমনি উৎপাদন ব্যাহত হবে, তেমনি কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যাত্রাপুর গ্রামের কৃষক আবদুস ছালাম দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, বিলের ৩ ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চয়নিকা ব্রিকসে। বর্তমানে আমরা কৃষকরা খুব অসহায়। যদি কোন ভাবে একজন কৃষকের জমির মাটি তারা ক্রয় করতে পারে, তাহলে পাশের জমির মালিকও বাধ্য হয়ে মাটি বিক্রি করতে হয়। এ ভাবে পুরো বিলের চিত্র বদলে এখন হাওড়ে রূপ নিচ্ছে।
যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, কৃষকদের অনুরোধে কাবিখার আওতায় রাস্তাটি করেছি। কৃষকরা বলেছিল জমি থেকে ফসল আনতে তাদের খুব কষ্ট হয়। এখন যদি সেই রাস্তা ব্যবহার করে কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হয় তাহলে আমার কি করার আছে?
যাত্রাপুর বিলের মধ্যে কৃষি জমির উপর গড়ে তোলা চয়নিকা ব্রিকসের মালিক নেছার আহম্মেদ রাজু দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, যে কৃষি জমি কেটে মাটি আনা হচ্ছে, সে কৃষি জমিটি আমরা কিনে নিয়েছি। সকলকে ম্যানেজ করেই ব্রিকফিল্ড পরিচালনা করছি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দীন ভূইয়া জনী দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য এ্যাসিল্যান্ড বর্তমানে মাঠে আছে।