রাসূল (সা.) যেভাবে হালাল ক্ষেত্রগুলোতে ভালোবাসা গভীর করতেন
কুমিল্লার ধ্বনি
প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
শরীয়তের সীমারেখার মধ্যে থেকে সুস্থ ও রুচিশীল বিনোদন চর্চাকে ইসলাম সমর্থন করে। সুন্থ রুচি পরিপন্থি কোন ব্যবস্থাকে ইসলাম অনুমোদন দেয় না। আল কোরআনে ইরাশাদ হয়েছে, ‘আর (দয়াময় আল্লাহর বান্দা হচ্ছেন) যারা গোনাহের কাজে যোগদান করে না এবং যখন কোনো অনর্থক কাজের সম্মুখীন হয়, তখন ভদ্রভাবে পাশ কেটে চলে যায়।’ (সূরা ফুরকান, আয়াত নং-৭২)
তাই ঈমানের দাবিদার কোন মুসলমান সুস্থ রুচি পরিপন্থি কোন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে না। বরং কখনো অনিচ্ছায় এগুলোর সম্মুখীন হয়ে গেলে উচিত হচ্ছে পাশ কেটে চলে যাওয়া।
বিনোদন যদি ইসলামের নীতিমালা মেনে করা হয় এবং এর দ্বারা উদ্দেশ্য থাকে দ্বীনি কাজ ও জাগতিক বৈধ কাজে উদ্যমতা ফিরিয়ে আনা তাহলে তা বৈধ। নিম্নে কোরআন ও হাদিস থেকে কয়েকটি দলিল উপস্থাপন করা হয়েছে:
কোরআন থেকে বিনোদনের বৈধতার দলিল
হজরত ইউসুফ (আ.) এর ঘটনা প্রসঙ্গে আল কোরআনে বলা এসেছে, তার ভায়েরা একদিন তাদের পিতা হজরত ইয়াকুব (আ.) এর কাছে আবেদন করে বললো, ইউসূফকে আমাদের সঙ্গে মাঠে যেতে দেন। সেখানে সে দৌড়বে এবং আমাদের রান্না করা খাবার খাবে। ঘরে থেকে থেকে তার সুদর্শন চেহারা ও শক্তি সামর্থ্য নষ্ট হচ্ছে। হজরত ইয়াকুব (আ.) তাকে মাঠে যেতে দিয়েছিলেন। আল কোরআনের ভাষ্য হচ্ছে, ‘তারা বললো, হে আমাদের পিতা! আপনার কী হলো যে, আপনি ইউসূফ সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস করেন না, অথচ আমরা তো অবশ্যই তার হিতাকাঙ্খী? আগামীকাল তাকে আমাদের সঙ্গে যেতে দেন, সে আমাদের সঙ্গে মাঠে মনভরে খাবে ও খেলবে।’ (সূরা ইউসূফ, আয়াত নং-১১,১২)
উল্লেখিত আয়াতে ছেলেরা বিনোদনের জন্য মাঠে যাওয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষীতে হজরত ইয়াকুব (আ.) এর নিষেধ না করার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, চিত্ত বিনোদনের জন্য শরীয়তের সীমারেখায় থেকে খেলাধুলা করা, ভ্রমণে যাওয়া বা অন্য কিছুর আয়োজন করা নিষিদ্ধ নয়।
আল কোরআনে জায়গায় জায়গায় ভ্রমণে বের হওয়ার নির্দেশনা এসেছে। যেমন সূরা হজে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ওরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি? তাহলে ওদের এমন অন্তর হতো, যার দ্বারা বুঝতো অথবা এমন কর্ণ হতো, যার দ্বারা শুনতো।’ (আয়াত নং-৪৬) মুমিনের জীবনে আসল উদ্দেশ্য যেহেতু ঈমানকে মজবুত করা, বিনোদন নয়, তাই সফরে যেন শুধু বিনোদনের প্রতিই খেয়াল না থাকে সে দিকে আয়াতে সতর্ক করেছেন।
হাদিস থেকে বিনোদন বৈধতার দলিল
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘হে আব্দুল্লাহ! আমি জানতে পেরেছি তুমি দিনের বেলায় রোজা রাখো এবং রাতের বেলায় জেগে জেগে আল্লাহর ইবাদত করো। তুমি সামনে এমন করবে না। তুমি মাঝে মাঝে রোজা রাখবে, রাতের বেলায় নামাজ আদায় করবে, আবার ঘুমাবেও। কেননা তোমার উপর শরীরের হক রয়েছে, তোমার উপর আত্মার হক রয়েছে। আর তোমার উপর তোমার স্ত্রীরও হক রয়েছে।’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৯১৯৯)
উপরোক্ত হাদিস থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, মানুষ ইবাদত-বন্দেগিতে ভারসাম্য রক্ষা করে পরিবারের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি নিজের দেহ ও মনের সুস্থতা নিশ্চিত করবে। তাই কাজের ফাঁকে নিজের দেহ ও মানসিক সুস্থতার জন্য বিনোদন করা শুধু বৈধ নয় বরং কখনো কখনো জরুরীও হয়ে পড়ে। সহীহ মুসলিম ও সহীহ বুখারীর ‘কিতাবুল আদব’ অধ্যায়ে এ সংক্রান্ত আরো হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ কেউ স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে তাতেও ছওয়াব হবে। সাহাবাগণ এ কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রাসুলল্লাহ! আমাদের কেউ নিজের স্ত্রীর কাছে গিয়ে যৌন চাহিদা পূরণ করলে ছওয়াব পাবে? তখন রাসূল (সা.) বলেন, সে যদি হারাম পন্থায় চাহিদা পূরণ করতো তাহলে গোনাহ হতো না? সাহাবাগণ বলেন, অবশ্যই। তখন রাসুল (সা.) বলেন, তাই হালাল পন্থায় কেউ এই চাহিদা পূরণ করলে তার জন্য ছওয়াব রয়েছে।’এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় বর্তমানে গতানুগতিক রুচি পরিপন্থি বিনোদনগুলো পরিহার করে, শরীয়তের সীমারেখায় থেকে দেহ ও মনের সুস্থতার জন্য কেউ যদি হালালভাবে স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিনোদনের জন্য বের হয় তাহলে ছওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাল্লাহ। কারণ, সে যদি অবৈধ পন্থায় নিজের প্রেমিকাকে নিয়ে বের হতো তাহলে সে গুনাহগার হতো।
রাসূল (সা.) সম্পর্ককে গাঢ় করতেন যেভাবে
বর্তমান সময়ে নিজেদের মাঝে বিদ্যমান দূরত্ব গোছানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সম্পর্ককে গাঢ় করার জন্য ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নামে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তবে ইসলামের নবী এই ব্যাপারে উত্তম আদর্শ রেখে গেছেন। তিনি সর্বদা চাইতেন তাঁর মাঝে ও সাহাবাগণের মাঝে সম্পর্ককে দৃঢ় করতে। এজন্য তিনি সাহাবাগণকে সময় দিতেন, তাদের সঙ্গে মিশতেন। হজরত সালামা ইবনে আকওয়া থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূল (সা.) আসলাম গোত্রের একদল সাহাবির পাশ দিয়ে গেলেন, যারা তীরান্দাজি করছিল, রাসূল (সা.) তাদেরকে বলেন, হে ইসমাইলের বংশধর, তোমরা তীরান্দাজি করতে থাকো, কেননা তোমাদের পিতা ছিলেন তীরান্দাজ। তোমরা তীর নিক্ষেপ করো, আমি ওমুক গোত্রের সঙ্গে আছি।
রাসূল (সা.) এর এই কথা শুনে একদল তীরান্দাজি থেকে বিরত থাকলো। রাসূল (সা.) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, কী হলো, তোমরা তীরান্দাজি করছো না কেন? তারা বলবো, আমরা কীভাবে তীরান্দাজি করবো, আপনি যে তাদের সঙ্গে? রাসূল (সা.) বলেন, তোমরা তীর নিক্ষেপ করো, আমি তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আছি।’ (সহীহ বুখারী, হাদিস নং-২৭৪৩)
এক হাদিসে পাওয়া যায় ‘মানুষের সব খেলাই বাজে অনর্থক কাজ, তবে... নিজের স্ত্রীর সঙ্গে খেলাধুলা ও ফূর্তি করা ব্যতিত।’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষের নিজেকে নিয়ে ব্যস্ততা থেকে বের হয়ে পরিবারকে সময় দেয়া। এর মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় হয়। নবী করিম (সা.) নিজেও এ কাজ করতেন। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একবার নবী করিম (সা.) এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। পথে এক জায়গায় আমরা যাত্রা বিরতি দিলাম, রাসূল (সা.) আমাকে বলেন, আসো! আমি তোমার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দেবো। হজরত আয়শা (রা.) বলেন, সেই প্রতিযোগিতায় আমি রাসূল (সা.)কে পেছনে ফেলে বিজয়ী হই। এই ঘটনার পর অন্য এক সফরে রাস্তায় যাত্রা বিরতি হয়। রাসুল (সা.) আমাকে প্রতিযোগিতার জন্য ডাকলেন। এবার তিনি আমাকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হলেন এবং বলেন, এই বিজয় তোমার আগের বিজয়ের বদলায়।’ (মুসনাদে আহমদ-২৭৪৩)
মসজিদে নববীর প্রান্তরে হাবশিরা বর্শা নিয়ে খেলা দেখাতো। হজরত আয়শাকে নিয়ে নবী করিম (সা.) সে খেলা দেখায় অংশগ্রহণ করতেন। এগুলো ছিল পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় করার মাধ্যম। অবশ্যই হজরত আয়শা (রা.) সঙ্গে নবী করিম (সা.) এর কোনো দূরত্ব ছিল না। তিনি তারপরও কেন এমন করলেন? উম্মতের সামনে আদর্শ স্থাপনের জন্যই এমনটি করেছেন যে, ইসলাম শুধু দ্বীনদারি তথা নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং বিনোদনমূলক বিষয়েও নবীজি (সা.) এর সিরাতে রয়েছে উত্তম আদর্শ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানুষের সঙ্গে প্রকৃত যোগাযোগের বিষয়টি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই খাবার টেবিলে বসেও দু’জনের মাঝে কোন কথাবার্তা নেই বরং দু’জন আলাদা দু’জগতে বসবাস করছে। এতে মানুষের মেধা, কাজের উদ্যমতা ও পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে, যা বছরের একদিন দিয়ে পূরণ হবার নয়। তাই আসুন! রাসূল (সা.) এর আদর্শ মেনে পরিবারকে অর্থবহ সময় দেই। গড়ে তুলি আগামী দিনের উদ্দমী, মেধাবী প্রজন্ম। আল্লাহ তায়ালা সহায় হোন। আমীন
- পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
- বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে
- নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী
- দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ
- দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
- শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা
- বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার
- দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ
- বাংলাদেশ-কুয়েত বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন
- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাতারের আমির
- আগুনে পুড়ল ১৪ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
- বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই
- সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম
- কসবায় ৩৪ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার
- কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
- তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়াম্যানসহ ৩০ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা
- হাজীগঞ্জে বৃদ্ধের টং দোকানে বিদ্যুতের মিটার থাকলেও জ্বলছেনা আলো
- মতলবে সাবেক ইউপি সদস্য হত্যা : যশোর থেকে প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
- কচুয়ায় সর্বজনীন পেনশন বিষয়ক আলোচনা সভা
- চাঁদপুরে পৃথক ঘটনায় দুই মরদেহ উদ্ধার
- ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া
- লাকসামে সফল খামারিদের মাঝে চেক ও পুরস্কার বিতরণ
- লালমাইয়ে জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে এক শিশু উপহার পেল সাইকেল
- দাউদকান্দিতে বাস চাপায় মা-মেয়েসহ ৪ জন নিহত
- পিটিয়ে নয়, ‘স্ট্রোকে’ মৃত্যু হয়েছে শামীমের
- দেবিদ্বারে সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ
- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৪০ সিটের শিশু ওয়ার্ডে ১২১ জন রোগী
- দেবিদ্বারে অর্ধগলিত কঙ্কাল উদ্ধার
- সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন
- মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক
- বাংলাদেশ-কুয়েত বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন
- দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ
- কসবায় ৩৪ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার
- সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম
- তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়াম্যানসহ ৩০ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা
- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৪০ সিটের শিশু ওয়ার্ডে ১২১ জন রোগী
- সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন
- ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া
- দেবিদ্বারে সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ
- কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
- দেবিদ্বারে অর্ধগলিত কঙ্কাল উদ্ধার
- হাজীগঞ্জে বৃদ্ধের টং দোকানে বিদ্যুতের মিটার থাকলেও জ্বলছেনা আলো
- পিটিয়ে নয়, ‘স্ট্রোকে’ মৃত্যু হয়েছে শামীমের
- দাউদকান্দিতে বাস চাপায় মা-মেয়েসহ ৪ জন নিহত
- চাঁদপুরে পৃথক ঘটনায় দুই মরদেহ উদ্ধার
- বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ৫ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই
- লাকসামে সফল খামারিদের মাঝে চেক ও পুরস্কার বিতরণ
- মতলবে সাবেক ইউপি সদস্য হত্যা : যশোর থেকে প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
- কচুয়ায় সর্বজনীন পেনশন বিষয়ক আলোচনা সভা
- আগুনে পুড়ল ১৪ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান