লকডাউনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৬ পরামর্শ

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে পুরোবিশ্ব। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি শহর লকডাউন করা হয়েছে।

গত ২৫ ডিসেম্বর জেনেভাতে স্থানীয় সময় ৬টা ৩০ মিনিটে করোনা সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। সম্মেলনে করোনা সম্পর্কে বেশকিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান টেড্রস অ্যাধনম গেব্রিয়াসেস। করোনার বিরুদ্ধে লড়তে তিনি ৬টি পরামর্শ দিয়েছেন যা প্রতিটি দেশকে অবশ্যই অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে নতুন করে আরো প্রায় এক বিলিয়ন মানুষকে লকডাউনের আওতায় নেয়া হয়েছে। খুব সাধারণ একটি অনুরোধের মাধ্যমে ডাব্লিউএইচও বলেছে, ‘এই সুযোগটিকে কেউ নষ্ট করবেন না’।

ডাব্লিউএইচও’র কর্মকর্তারা বলেছে, লকডাউনের মাধ্যমে শারীরিক দূরত্ব বাড়ে যার ফলে ভাইরাসের বিস্তারকে কমিয়ে দেয়া সম্ভব। তবে এর মাধ্যমে ভাইরাসকে নির্মূল করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ, স্কুল-কলেজ বন্ধ এবং সাধারণ মানুষদের বাড়িতে থাকতে বলার নির্দেশের কারণে দেশ এ ভাইরাস মোকাবিলায় আরো কিছু সময় পাবে।

গেব্রিয়াসেস বলেন, লকডাউনের মাধ্যমে দ্বিতীয় আরেকটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে যেহেতু এ সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে তাই এ সুযোগটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

গেব্রিয়াসেস আরো বলেন, এর আগেও আমরা অনেক মহামারি অতিক্রম করেছি। আমরা এই মহামারিও অতিক্রম করতে পারবো। তবে এই মহামারি অতিক্রম করতে আমাদের ঠিক কি মূল্য দিতে হবে এবং কতটা মূল্য দিতে হবে সেটাই দেখার বিষয়। 

তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে প্রায় ২৪ হাজার মানুষকে হারিয়েছি। আমরা জানি যে আমরা আরো অনেকের প্রাণ হারাবো। তবে কতটা হারাবো সেটা অনেকাংশে নির্ভর করছে আমরা কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি সেটার ওপর। এ ভাইরাস ঠেকাতে কি কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেটার ওপরেও নির্ভর করছে।

সম্মেলনের শেষে গেব্রিয়াসেস বিশ্বের দেশগুলোকে ৬টি পরামর্শ দেন যা তাদের জন্য অবশ্যই পালনীয়। পরামর্শগুলো হচ্ছে,

১। প্রতিটি দেশের জনস্বাস্থ্য বাহিনী যতটা সম্ভব প্রসারিত করে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মোতায়েন করতে হবে।

২। কমিউনিটি লেভেলে প্রতিটি সন্দেহভাজন আক্রান্তকে খুঁজতে একটি নির্দিষ্ট নিয়মের প্রয়োগ করতে হবে।

৩। করোনা পরীক্ষার সব ধরণের ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করতে হবে। 

৪। করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে এবং বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্য কি পর্যাপ্ত সুবিধার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫। করোনা রোগীদের সংস্পর্শে আসা প্রত্যকের কোয়ারেন্টাইনের নিশ্চিত করতে হবে এবং তার জন্য পৃথক এবং সুস্পষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

৬। কভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য এরইমধ্যে সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো পুনরায় মূল্যায়ন করতে হবে।

সূত্র- ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম