লাকসামে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত আ’লীগ নেতার মৃত্যু

কুমিল্লার লাকসামে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত আওয়ামীলীগ নেতা মো. ফয়েজ উল্যাহ (৫০) গত বুধবার রাতে মারা গেছেন। গুরুতর আহত ওই নেতাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির ১০দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত ফয়েজ উল্যাহ বাকই (দক্ষিণ) ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং একই ইউনিয়নের কৈত্রা গ্রামের মো. আবদুর রব বেপারীর ছেলে।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কৈত্রা ঈদগাহ মাঠে নিহত আওয়ামী লীগ নেতার জানাযা অনুষ্ঠান শেষে তাঁর মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মো. ফয়েজ উল্লাহ’র মৃত্যুতে আগামী শনিবার লাকসামে অনুষ্ঠিতব্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলামের নাগরিক সংবর্ধনা স্থগিত করা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার বাকই (দক্ষিণ) ইউনিয়নের কৈত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের অদূরে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র কর্মীরা ভোটারদের আসতে বাধা দেন। এ সময় ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ফয়েজ উল্যাহ (৪৫) এবং তাঁর ছেলে মুদাফরগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান ফয়সাল (২০) প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র কর্মীরা তাঁদের এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
গুরুতর আহত দু’জনকে স্থানীয় লোকজন আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মো. ফয়েজ উল্যাহকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশেষে ১০দিন মৃত্যুর সাে পাঞ্জালড়ে বুধবার রাতে নয়টার দিকে তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় নিহত ওই নেতার ছেলে মো. আতিকুর রহমান ফয়সাল বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত নামা আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্ততার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- বিএনপি নেতা অশ্বদিয়া গ্রামের মৃত নছর উদ্দিনের ছেলে আবদুর রব প্রকাশ রব মাষ্টার (৫৫), একই গ্রামের মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে অহিদুর রহমান (৪৮), ও মনোহর আলীর ছেলে ইমান হোসেন (৪২)। 

দলের ত্যাগী এই নেতার অনাকাংখিত মৃত্যুতে নবগঠিত মন্ত্রী পরিষদের সদস্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। 
এ ছাড়া লাকসাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইউনূস ভূঁইয়া, পৌর মেয়র অধ্যাপক মো. আবুল খায়ের, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলীসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ গভীর শোক জানিয়েছেন।    
এ ব্যাপারে লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনোজ কুমার দে জানান, নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ নেতাকে  কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। এ পর্যন্ত ওই মামলায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।