ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শব্দদূষণে কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০  

বড় হচ্ছে কুমিল্লা শহর; বাড়ছে রাস্তাঘাট, যানবাহন, দোকানপাট, বাড়িঘর, অট্টালিকা, মানুষজন আর সেইসাথে বাড়ছে হইচই, কোলাহল, হট্টগোল। নতুন উন্নয়য়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে জনজীবনে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন সমস্যাও। কুমিল্লাবাসীর ব্যস্ত জীবনযাত্রায় আজ আরেক আতঙ্কের নাম শব্দদূষণ। নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে মানুষের শ্রবণশক্তির সহনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে শব্দের মাত্রা দিন দিন দূষণে পরিণত হচ্ছে। কেউ বুঝতে না পারলেও নীরবে মানুষের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন করছে উচ্চমাত্রার শব্দ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সাধারণ মানুষের জন্য প্রযোজ্য সুরক্ষিত শব্দমাত্রা ৪০ থেকে ৫০ ডেসিবল। সাধারণত ৬০ ডেসিবলের শব্দ মানুষকে সাময়িকভাবে বধির করে দিতে পারে। আর ১০০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ সম্পূর্ণ বধিরতা তৈরি করতে পারে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক কামরুল ইসলাম নগরীর ব্যস্ত এলাকাগুলোতে শব্দমাত্রার পরিমাপ করেন। এ সময় এ প্রতিবেদকও তার সঙ্গে থেকে শব্দদূষণের মাত্রা সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেন। দেখা যায়, নগরীর কান্দিরপাড়ে নিউ মার্কেটের সামনে শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ৯০ ডেসিবল ও সর্বনিম্ন ৭৫ ডেসিবল, লিবার্টি মোড়ে সর্বোচ্চ ৯৩ ডেসিবল ও সর্বনিম্ন ৭৯ ডেসিবল, পূবালী চত্বরে সর্বোচ্চ ৯২ ডেসিবল থেকে সর্বনিম্ন ৮১ ডেসিবল। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, কান্দিরপাড় বাণিজ্যিক এলাকা এবং সে হিসেবে এই এলাকায় দিনে ৭০ ডেসিবল এবং রাতে ৬০ ডেসিবল শব্দমাত্রা থাকতে পারে।

এই এলাকাতেই ব্যাটারিচালিত রিকশার ইলেকট্রিক হর্নের এক বিপে ৯০ ডেসিবল মাত্রা এবং সিএনজি অটোরিকশা থেকে ৮৫ ডেসিবল মাত্রার শব্দ তৈরি হয় বলে পরীক্ষায় ধরা পড়ে। শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে এসব যানবাহনের যে আধিক্য, তাতে এগুলো যে প্রতিনিয়ত উচ্চমাত্রার শব্দদূষণ করে চলেছে, তা শতভাগ নিশ্চিত কওে বলা যায়।

কুমিল্লার বেশিরভাগ ব্যস্ত এলাকাকে যদি বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে, তবে সেসব এলাকায় যেসব মানুষ খোলা পরিবেশে চলাচল করে বেশি, তারা ইতিমধ্যে অসহনীয় মাত্রার শব্দ সহ্য করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। শুধু কান্দিরপাড় এলাকায়ই যদি গড় শব্দমাত্রা দিন এবং রাতের মাঝামাঝি সময় সহনীয়তার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তবে চকবাজার, রাজগঞ্জ, শাসনগাছা, টমছম ব্রীজ, পদুয়ারবাজারের মতো জনবহুল এলাকাগুলোর যে একই দশা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

কান্দিরপাড় লিবার্টি মোড়ের ব্যবসায়ী ও বাইকার মালেক খসরু উষা বলেন, হাইড্রোলিক আর ইলেকট্রিক হর্নের শব্দের মাত্রা প্রায় একই। লিবার্টি মোড়ে যে মাত্রায় শব্দ হয়, আমরা যারা এখানে সবসময় থাকি তাদের ‘মাথা খারাপ’ অবস্থা। যারা যানবাহনের মালিক, তাদের এই বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। তা না হলে দিন দিন পরিবেশের অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-কুমিল্লার কোষাধ্যক্ষ রেজবাউল হক রানা বলেন, যেহেতু কুমিল্লায় নগরায়ন বাড়ছে, সেদিকে খেয়াল রেখে শব্দদূষণের মতো সমস্যাগুলো সিটিকর্পোরেশ ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কুমিল্লাকে আমরা যদি বাসযোগ্য নগরী বলে পরিচিত করতে চাই, তাহলে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি।

পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, কুমিল্লা নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে শব্দের মাত্রা বাড়ছে। হাইড্রোলিক হর্ন নিয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে, এছাড়া উচ্চমাত্রার যে কোনো হর্ন আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কুমিল্লা নগরীতে একটি নীরব এলাকা তৈরির জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বিতভাবে আমরা কাজ করছি।

বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে,  উচ্চমাত্রার শব্দ জনসাধারণের মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কারণ। এটি উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ  হৃদস্পন্দন, মাথ্যাব্যথা, বদহজম ও পেপটিক আলসার সৃষ্টির কারণ, এমনকি গভীর ঘুমকেও ব্যাহত করছে। যেকোনো ব্যক্তি যেকোনো স্থানে আধাঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে ১০০ ডিবি বা তার বেশি শব্দদূষণের মধ্যে থাকলে তিনি বধির হয়ে যেতে পারেন। উচ্চমাত্রার শব্দের কর্ম পরিবেশে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে যেকোনো ব্যক্তির সম্পূর্ণ বধিরতা দেখা দিতে পারে। যেকোনো ধরনের শব্দদূষণ গর্ভবতী মায়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলেও চিকিৎসকরা জানান।