ব্রেকিং:
ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত সিদ্দিকী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি না থাকলে সেটা কলঙ্কজনক হবে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বিজিবি
  • বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শয়তানের দুষ্ট মন্ত্রণা থেকে বাঁচার উপায়

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২ জানুয়ারি ২০২২  

মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু শয়তান। শয়তান মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ওৎ পেতে থাকে। নতুন নতুন পন্থায় ধোঁকা দেওয়ার পথ আবিষ্কার করে। তাই, মানুষেরও উচিত শয়তান থেকে বাঁচার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। তার সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে কুরআন-সুন্নার যথাযথ অনুসরণ করার মাধ্যমে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া।

শয়তানের সঙ্গে জিহাদ দুই প্রকার। এক. যেসব সন্দেহের কারণে ঈমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, শয়তানের সেসব ওয়াসওয়াসার বিরুদ্ধে জিহাদ করা। দুই. যেসব পাপ কাজের জন্য আসক্তি নিক্ষেপ করে, তা প্রতিহত করতে জিহাদ করা।

হজরত হুযায়ফা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘চাটাই বুননের মত ফিৎনা মানুষের অন্তরে এক এক করে (শয়তানের মাধ্যমে) পেশ করা হয়। যে অন্তর তা গ্রহণ করে নেয়, সে অন্তরে একটি করে কালো দাগ দেওয়া হয়। আর যে অন্তর তা প্রত্যাখ্যান করে সে অন্তরে একটি করে শুভ্রোজ্জ্বল চিহ্ন পড়ে। এমনি করে অন্তরগুলো দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি উল্টানো কালো কলসির ন্যায় হয়ে যায়। প্রবৃত্তি তার মধ্যে যা উপস্থাপন করে তা ব্যতিত ভালো-মন্দ কিছুই বুঝে না। আর অপরটি সাদা পাথরের ন্যায়; যতদিন আসমান ও জমিনের স্থায়ীত্ব ততদিন কোনো ফিৎনা তার ক্ষতি করতে পারবে না।’

আমাদের চরম শত্রু শয়তান থেকে বাঁচার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। ইসলামি শরিয়তের পরিপূর্ণ অনুসরণের মাধ্যমে শয়তান থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। কোরআন সুন্নাহর আলোকে নিম্নে কিছু আমলের কথা আলোচনা করা হলো-

সূরা বাকারাহ পাঠ করা

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘তোমরা নিজেদের ঘর-বাড়িগুলো কবরে পরিণত করিও না। যে বাড়িতে সূরা বাক্বারাহ পাঠ করা হয়, অবশ্যই সে বাড়ি থেকে শয়তান পলায়ন করে।’

সাদকা করা : কায়েস ইবনে আবি গারাযা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে ব্যবসায়ী সমাজ! ব্যবসা ক্ষেত্রে শয়তান ও পাপ এসে উপস্থিত হয়। সুতরাং তোমরা ব্যবসায় (শয়তান ও পাপ মুক্ত করতে) সাদকা জড়িত কর।’

আয়াতুল কুরসী পাঠ করা

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিলেন। আমি তিন রাত চোর আটক করলাম। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সে দুই রাতে ছুটে গেল। তৃতীয় রাতে সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও তোমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিব, যা দ্বারা তোমার উপকার হবে। আমি বললাম, সেগুলো কি? সে বলল, যখন তুমি ঘুমাতে যাবে তখন ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করবে। তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত করা হয়। আর সকাল পর্যন্ত তার নিকট শয়তান আসতে পারে না। ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট বর্ণনা করার পর তিনি বললেন, হে আবু হুরায়রা। তুমি কি জান সে কে? সে হলো চিরমিথ্যাবাদী কিন্তু তোমার সঙ্গে সত্য বলেছে। সে হলো শয়তান।’

শয়তানের হাত থেকে বাঁচার যিকির

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, مَنْ قَالَ: لاَ إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ المُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ كَانَتْ لَهُ عَدْلَ عَشْرِ رِقَابٍ، وَكُتِبَتْ لَهُ مِائَةُ حَسَنَةٍ، وَمُحِيَتْ عَنْهُ مِائَةُ سَيِّئَةٍ، وَكَانَتْ لَهُ حِرْزًا مِنَ الشَّيْطَانِ يَوْمَهُ ذَلِكَ حَتَّى يُمْسِيَ،

‘যে ব্যক্তি একশোবার এ দোয়াটি পড়বে, (আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই, রাজত্ব একমাত্র তারই জন্য, সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তারই জন্য, আর তিনি সকল বিষয়ের ওপর ক্ষমতা বান) তাহলে দশটি গোলাম আযাদ করার সমান ছওয়াব হবে। তার জন্য একশটি সওয়াব লিখা হবে, একশটি গুনাহ মাফ করা হবে। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে নিরাপদ থাকবে।’

শয়তানের অনিষ্ট থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যার দোয়া

হযরত আবু বকর (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বললেন, مُرْنِي بِشَيْءٍ أَقُولُهُ إِذَا أَصْبَحْتُ وَإِذَا أَمْسَيْتُ؟ قَالَ: قُلْ: اللَّهُمَّ عَالِمَ الغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ، قَالَ: قُلْهُ إِذَا أَصْبَحْتَ، وَإِذَا أَمْسَيْتَ، وَإِذَا أَخَذْتَ مَضْجَعَك

‘আমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিন, যেগুলো সকাল-সন্ধ্যায় আমি পড়তে পারব। তিনি বলেন, ‘বল, ‘আল্লাহুম্মা ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরজি ‘আলিমাল গাইবি ওয়াশ শাহাদাত, রাববা কুল্লা শাইয়িন ওয়া মালিকিহী ওয়া আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়া আউযুবিকা মিন শাররি নাফসী ওয়া শাররিশ শাইত্বান ওয়া শিরকিহী। ‘তিনি বলেন, সকাল-সন্ধ্যা এবং যখন বিছানায় শুইতে যাবে তখন এটি পাঠ করবে।’ সকাল-সন্ধ্যা দোয়াটি পাঠ করলে শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাবে ইনশাআল্লাহ।

রাসূলের পক্ষ থেকে হাসান-হুসাইনকে ঝাড়ফুঁক

ইবনে আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَوِّذُ الْحَسَنَ، وَالْحُسَيْنَ، يَقُولُ: أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ، قَالَ: وَكَانَ أَبُونَا إِبْرَاهِيمُ يُعَوِّذُ بِهَا إِسْمَاعِيلَ، وَإِسْحَاقَ

‘নবি কারিম (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে ঝাড়ফুঁক করে বলতেন, ‘আঊযুবি কালিমা-তিল্লাহিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হা-ম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিল লা-ম্মাতি’ এবং এই ঝাড়ফুঁক দ্বারা আমাদের পিতা ইবরাহীম (আ.) ইসহাক ও ইসমাঈলকে ঝাড়ফুঁক করতেন।’

ঘুমের মাঝে ভয় পেলে

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ যদি ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, তবে যেন সে এই দোয়া পাঠ করে, তাহলে তার কোন অনিষ্ট হবে না’।

 أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

‘আঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত-তা-ম্মা-তি মিন গাযাবিহী ওয়া ইক্বা-বিহী ওয়া শার্রি ‘ইবা-দিহী ওয়া মিন হামাযা-তিশ শায়াত্বীনি ওয়া আই ইয়াহযুরূন’।