ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সিকৃবির সাফল্য: অভয়াশ্রমে রক্ষা দেশীয় মাছ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২১  

দেশের বিভিন্ন হাওর-বাঁওড় থেকে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কমে আসছে দেশীয় মাছের সংখ্যাও। তার ব্যতিক্রম নয় হাওর-বাঁওড় বেষ্টিত সিলেট অঞ্চলও। মাছের আশ্রয়স্থল, প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্র প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে নষ্ট হচ্ছে। প্রজনন মৌসুমে অবাধে মাছ শিকারের ফলে অসংখ্য প্রজাতির দেশীয় মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। কিন্তু বিলুপ্ত প্রজাতির দেশীয় মাছের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিস্তার, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)। ২০১৮ সাল থেকে সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট ও গুরকচি নদীতে মাছ রক্ষায় সাফল্য দেখিয়েছে সিকৃবি। মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তুলে মৎস্যজীবীদের সম্পৃক্ত করায় সাফল্য এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা। তারা জানিয়েছেন, শুধু দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষা নয়, মাছের সঙ্গে সংশ্নিষ্টদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে টেকসই আয়ের পথ দেখানো হচ্ছে। মাছের আয় থেকে ইতোমধ্যে সেলাই মেশিন, ছাগল ও ভেড়াসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের মধ্যে।

সূত্র মতে, সিকৃবির মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের জলজসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রক্ষায় প্রকল্প শুরু হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের আওতায় এনএটিপিফেজ-২ প্রকল্পের অর্থায়নে প্রকল্পে সহযোগিতা করছে সিকৃবি প্রশাসন, বন বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ। প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছেন সিকৃবির মাৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুণ্ডু ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. ফয়সাল আহমদ। তাদের তত্ত্বাবধানে সিলেটের সারি-গোয়াইননদী ও তৎসংলগ্ন হাওর ও বিলে দেশীয় মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য গবেষণা কার্যক্রম চলছে। গবেষণার অংশ হিসেবে রাতারগুল ও গুরকচি নদীতে প্রায় ৩ একর জায়গায় অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়। গুরকচি অভয়াশ্রমে ৫০ জন ও রাতারগুলে ৩০ জন মৎস্যজীবীকে নিয়ে গঠন করা হয় অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনা কমিটি। অভয়াশ্রম তৈরি করার ফলে চিতল, ঘোড়া, খারি, নানিদ প্রভৃতি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ এখন সেখানে মিলছে।



প্রকল্প-সংশ্নিষ্টরা জানান, শীতকালে পানি কমে যাওয়ায় মাছগুলো আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। ফলে রাতারগুল সোয়াম্পফরেস্টের একটি বিলে ও গুরকচি নদীতে অভয়াশ্রম তৈরি করা হয়েছে। অভয়াশ্রমের পাশে জাল ও বাঁশ সহকারে স্থাপিত পেনে কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদী থেকে ডিমওয়ালা মলা ও ঢেলা মাছ সংগ্রহ করার পর তাদের প্রজনন সম্পন্ন করা হয়। ফলে ভরা বর্ষায় বিভিন্ন জলাশয়ে এসব মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। এ ছাড়া মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে উন্মুক্ত জলাশয়ে বর্ষা মৌসুমে খাঁচায় মাগুর, পাবদা, পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ চাষ করা হচ্ছে ওই প্রকল্পের আওতায়। চাষকৃত এসব মাছ বিক্রি করে লভ্যাংশ থেকে ইতোমধ্যে মৎস্যজীবীদের টেকসই আয়ের লক্ষ্যে সেলাই মেশিন, ছাগল ও ভেড়াসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড জানান, প্রতি শুষ্ক মৌসুমে উন্মুক্ত জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় মাছের আশ্রয়স্থল দিন দিন কমে যাচ্ছে। হাওর ও বিল সেচে অবাধে মাছ শিকারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে মলা ঢেলাসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ। পেনে এসব দেশীয় প্রজাতির মাছ লালন-পালন করায় তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে বংশবিস্তার করতে পারছে। পরবর্তীতে বর্ষায় উন্মুক্ত জলাশয়ে ছেড়ে দেওয়ায় খুব সহজেই বিলুপ্ত প্রজাতির এসব মাছের বিস্তার ঘটানো সম্ভব হচ্ছে। সেসঙ্গে দেশীয় প্রজাতির অন্যান্য মাছও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রকল্পের অধীনে মাছ চাষে জড়িত রাতারগুলের আরব আলী ও গুরকচি জেলে পাড়ার অর্চনা দাস জানিয়েছেন, অভয়াশ্রম গড়ে তোলায় এখন আগের চেয়ে বেশি মাছ পাওয়া যায়।