সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নয়, বাসের ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত

সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নয়, অতিরিক্ত গরমের কারণে বাসের ইঞ্জিনে শর্টসার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এ ঘটনায় বাসের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।

দাউদকান্দি ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা ফয়েজ আহমেদ ও দাউদকান্দির ইউএনও কামরুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফয়েজ আহমেদ বলেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে বাসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে পড়ত। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর আমরা বাসের ভেতরে ঢুকে দেখি সিলিন্ডারগুলো অক্ষত রয়েছে।

বাসে আগুন লাগার ঘটনায় নিহত হয় সাড়ে চার বছর বয়সী সাফিন। ছেলের লাশ নিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছেন বাবা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাসের দ্বিতীয় সারিতে আমার ছেলে সাফিন ও আমার মা রওশন আরা বসেছিল। আগুন লাগার পর সাফিনকে নিয়ে বের হওয়ার সময় আমার মা পা পিছলে পড়ে যান। এতে আমার ছেলেটা পুড়ে মারা যায়। মা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক উজ্জ্বল মিয়া। পরিবারের আট সদস্যকে নিয়ে বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। দাউদকান্দিতে বিস্ফোরণে পুড়ে যাওয়া বাসটিতে ছিলেন সবাই। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল মিয়ার বাবা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনজন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।

উজ্জ্বল মিয়া বলেন, মতলব এক্সপ্রেস বাসটি দাউদকান্দির গৌরীপুরে এক যাত্রীকে নামানোর জন্য ব্রেক কষে। তখন বাসের মধ্যেই একটা শব্দ হয়। এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আগুন ধরে যায়। আমরা সামনের দরজা পর্যন্ত গিয়েছিলাম কিন্তু বাস থেকে নামতে পারিনি। পরে আমি, আমার দুই মেয়ে ও বাকি সবাই জানালা কাচ ভেঙে নিচে নামি। তবে বাবাকে বাঁচাতে পারিনি।

দাউদকান্দির ইউএনও কামরুল ইসলাম খান বলেন, বাসে আগুন লাগার ঘটনায় এখনো কোনো তদন্ত কমিটি করা হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ধারণা সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নয়, ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত।

তিনি আরো বলেন, এ দুর্ঘটনায় নিহত দুইজনের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহত ৯ জনকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাসের মালিক মিজানুর রহমান ও চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।

মতলব এক্সপ্রেসের বাসটি ঢাকা থেকে চাঁদপুরের মতলব উপজেলায় যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরে বাসটিতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, দুইজনকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।