ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সৌদির ভুলে কুমিল্লার রুহুলের লাশ পাকিস্তানে দাফন

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২০  

হাসপাতালের বিল পরিশোধ এবং বিমানে দেশে আনার টিকেট কাটা হলেও সৌদি আরবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে মৃত কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পীরকাশিমপুর গ্রামের রুহুল আমিনের মরদেহ চলে যায় পাকিস্তানে। এ ঘটনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করেছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা। পাকিস্তানে তার দাফনও সম্পন্ন করে ফেলেছে।

২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সৌদি আরবে মস্তিঙ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যুবরণকারী লাশ ভুলে পাকিস্তানে চলে যাওয়ায় তারা দাফন করে ফেলে। লাশ বদলের এমন ঘটনায় এলাকাবাসীও রীতিমত হতবাক। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুহুল আমিনের স্ত্রী মিলি আক্তার বলেন- ‘দুই বছর আগে আমার স্বামী রুহুল আমিন সৌদি আরব গেছেন। যাওয়ার সময় বলছিলেন আমাদের আর কষ্ট থাকবো না। দেখতে দেখতে দুইটা বছর গেল। কিন্তু ৩ লাখ টাকা ঋণ থাকায় বাড়িতে আসার ইচ্ছা থাকলেও তিনি আসেননি। সবসময় দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেছেন। কিন্তু শেষবারের মতো স্বামীর মরা মুখটাও দেখলাম না। এ কেমন ভাগ্য! এখন কেমনে বাঁচমু।’

জানা গেছে, মুরাদনগরের পীরকাশিমপুর গ্রামের মৃত দানু মিয়ার ছেলে মো. রহুল আমিন প্রায় ১৫ বছর আগে একই উপজেলার চন্দনাইল গ্রামের বেদন মিয়ার মেয়ে মিলি আক্তারকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রিদওয়ান হাসান (১৩) স্থানীয় মাদরাসায় ৭ম শ্রেণিতে এবং ছোট ছেলে রাইয়ান হাসান (৮) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে মিলি আক্তার তার স্বামীর রেখে যাওয়া ঋণের বোঝা এবং দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

পরিবারের সুখের আশায় রুহুল আমিন ঋণ করে ২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর সৌদি আরবে যান। কিন্তু ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে তিনি মারা যান। এতে হত-দরিদ্র ওই পরিবারের নেমে আসে অন্ধকারের ছায়া। রুহুল আমিনের স্ত্রী মিলি আক্তার জানান, তার স্বামী সৌদি আরবে মারা যাওয়ার পরদিন লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) শোয়াইব আহমাদ খান গত ২২ ডিসেম্বর সৌদি আরবের জেদ্দায় নিযুক্ত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ের কাউন্সেলরের (শ্রম) নিকট পত্র প্রেরণ করেন। রুহুল আমিনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে শোকাহত পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসার আড়াইলাখ টাকা স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে পরিশোধ করেন এবং বিমানযোগে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ৩টি টিকেট ক্রয় করেন। বাড়ির পাশে দাফনের জন্য কবরস্থানও চিহ্নিত করা হয়। পরে জানতে পারেন সৌদি আরবের কিং ফয়সাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানে। পরে সেখানেই তাকে দাফন করা হয়।

রুহুল আমিনের ভাই মুজিবুর রহমান জানান, ‘আমার ভাইয়ের লাশ আনার জন্য এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করেছিলাম। দাফনের জন্য কবরস্থানের জায়গাও চিহ্নিত করেছিলাম। কিন্তু ভাইয়ের লাশ চলে গেছে পাকিস্তানে। আমার ভাইয়ের অসহায় এ পরিবারটির দিকে সরকার খেয়াল রাখলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।’ এ বিষয়ে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ‘দুঃখজনক এ ঘটনার জন্য আমরা সরাসরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দোষারোপ করেছি, কারণ এই কফিনটি তারাই রিলিজ করেছে। এ নিয়ে মৃত ব্যক্তির মনোনীত কর্তৃক গভর্নর অফিসে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আর আমাদের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে নিহত রুহুল আমিনের পরিবার যে ধরণের সহযোগিতা চাইবে আমরা তা করব।’