ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্কের অবসান

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২০  

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক কে: বঙ্গবন্ধু? নাকি  মেজর জিয়া? 
এই বিতর্ক দীর্ঘদিনের। 

বাংলাদেশের রাজনীতির ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে যারা বেড়ে উঠেছেন তাদের কাছে অবশ্য এই বিতর্ক হাস্যকর ও অবান্তর। ইতিহাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল যে কারো কাছেই এটি কোনো বিতর্কের বিষয়ই হতে পারে না। কারণ ইতিহাসে এর সাক্ষ্যপ্রমাণ এতই স্পষ্ট, অতীর্যক ও উচ্চকিত যে, এ নিয়ে বাহাস করা মূর্খতা মাত্র।

যুক্তরাট্রের ডিফেন্স এজেন্সি তাদের প্রকাশিত দলিলে তুলে ধরেছেন “শেখ মুজিবই ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ রাত ১২.৩০ মি: এ স্বাধীনতার ঘোষনা প্রদান করেন!” তাদের এই দলিলে বহুজন সিনেটের সাক্ষর আছে। 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাত ১২.৩০ মিনিটে, অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষনা দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস- তাদের বৈকালিক সংস্করনে এই ঘোষনা পত্র ছাপিয়ে লিখেছিল “পূর্বপাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবর রহমান যুক্তরাস্ট্র সময় দুপুর ২.৩০ মিনিটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন”।

উল্লেখ্য, শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হন রাত ৩.৩০ মিনিটে। এ ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে তিনি স্বাধীনতা ঘোষনা প্রদান করেন । তাঁর এই ঘোষনা ইপিআরের ওয়্যালেসের মাধ্যমে সারাদেশের সরকারি প্রশাসন ভবনে এবং  ফ্যাক্সের মাধ্যমে লিখিত আকারে প্রচার করা হয় । 

২৭ মার্চ সকাল থেকেই রেডিওতে বার বার এটি পড়ে শুনানো হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাষনের কথা ইয়াহিয়া ক্রোধের সাথেই মিডিয়াতে তুলে ধরেছিল ।

তবে জিয়াউর রহমানের ভুমিকা কি ছিল! 
আসুন জিয়ার একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার দেখা যাক; যেখানে তিনি নিজেই বলছেন তারা ২৭ মার্চ রেডিও স্টেশন দখল করে আর ঘোষনাপত্র পাঠ করে।
https://www.youtube.com/watch?v=zDnAfMkF7gM 

লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হল, ২৫ মার্চ দিনের বেলাতেই মেজর রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের বন্দর এলাকা বেড়িক্যাট দিয়ে রাখা হয়েছিলো, যেন পাকিস্তানি বাহিনী তাদের অস্ত্রশস্ত্রে বোঝাই জাহাজ থেকে গোলা বারুদ খালাশ করতে না পারে। কিন্তু তৎকালীন চট্টগ্রামে পোস্টিংরত মেজর জিয়া পশ্চিম পাকিস্তানি মেজর জেনারেল জাংজুয়ার আদেশে ওই অস্ত্র ও গোলা-বারুদ খালাশ করেছিলো, যা দিয়ে ইতিহাসের সবচেয়ে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটানো হয়েছিল বাংলাদেশে।

২৫ মার্চের বর্বর গণহত্যা সম্পর্কেও মেজর জিয়া নাকি অবগত ছিলেন না। কর্ণেল শওকতকে তিনি এমনটাই জানিয়েছিলেন। ২৬ মার্চ বাঙ্গালী সেনারা চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেডিও স্টেশনের দখল নিয়ে নেয়  এবং মেজর জিয়াকে স্টেশন পাহাড়ার দায়িত্ব দিয়ে,  মেজর রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সৈন্যরা অপারেশনে চলে যান। ঐ সময় স্টেশনের ভেতরে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান, বেলাল মোহাম্মদসহ আরও অনেকে ছিল , কিন্তু রেডিও স্টেশনটি কার্যকর ছিলনা, কারণ সেখানে কোন ট্রান্সফরমার ছিলনা! 
তখন চট্রগ্রাম সরকারি স্টেশনে হামলা চালিয়ে ২৬ মার্চ দুপুরে সেখান থেকে ট্রান্সফরমার খুলে এনে কালুর ঘাটে প্রতিস্থাপনের চেস্টা করেন তারা। অবশেষে ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে রেডিও স্টেশনে ঐ ট্রান্সফরমারটি সেট হয় সেই সময়ে বেতারের প্রচার সক্ষমতা ছিল মাত্র ১‌০ মাইল!! 

২৭ মার্চ সকাল ১০ টায় আওয়ামীলীগ নেতা এম এ হান্নান রেডিওতে প্রথমবারের মত স্বাধীনতা ঘোষনাপত্র পাঠ করেন, এরপর বেলাল মোহাম্মদ বারবার বঙ্গবন্ধুর ভাষনের কপিটি পড়ে শুনান। এ সময় সেখানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মাথায় এই যুক্তি এল যে , যদি এমনটা প্রচার করা হয় আমাদের সাথে বাঙালি সেনা অফিসাররাও যুদ্ধে যোগ দিয়েছে, তাহলে সাধারন জনতা ও বিদ্রোহীদের মনোবল চাঙা হতো! 

কিন্তু সে সময় সব বাঙ্গালী সেনারা যুদ্ধের ময়দানে ছিল, একজন ব্যতীত। তিনি হলেন মেজর জিয়া যিনি তখন  বেতার স্টেশনটি পাহারা দিচ্ছিলেন। ২৭ মার্চ সন্ধা ৭.৪৫ মিনিটে প্রথমে বাংলায় এবং পরে ইংরেজিতে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। যার সারমর্ম ছিল এমন- “I major ziaur rahman , on behalf of our great national leader sheikh mujibur rohman , Supreme commander of bangladesh Do hereby proclaim independent of Bangladesh” (আমি মেজর জিয়াউর রহমান ,আমাদের মহান জাতীয় নেতা ও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি ) 

পুরো ভাষণটির শোনার জন্য এই ভিডিওটি দেখতে পারেনঃ https://www.youtube.com/watch?v=4gNXXHzbb6A 
অতএব আমরা কি দেখতে পেলাম? ২৫ মার্চের গণহত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রের চালানে সহায়তাকারী মেজর জিয়া নেহাতই ভাগ্যের গুণে সেদিন কালুরঘাট স্টেশন পাহাড়া দিতে গিয়ে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্রান্তিলগ্নে এক মহান কাজের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ জন্য তাকে যদি স্বাধীনতার ঘোষক বানিয়ে দেয়া হয়, তবে এম.এ হান্নান আর বেলাল মোহাম্মদের কি কি উপাধী পাওয়া উচিৎ??
হয়তো এ কারণেই  হুমায়ূন আজাদ লিখেছেন, “ঘোষণা দিয়ে ঘোষক হওয়া যায়, মুজিব হওয়া যায় না”