ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

হোমনা মুক্ত দিবস আজ

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

কুমিল্লার হোমনা মুক্ত দিবস আজ। ১৬ ডিসেম্বর যখন সারা দেশ বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত তখনও শত্রুমুক্ত হতে পারেনি হোমনবাসী। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপজেলার ঘাগুটিয়া গ্রামে পাক বাহিনীর সাথে তুমুল যুদ্ধে লিপ্ত হন হোমনাবাসী।

অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাঞ্ছারামপুর, দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও যৌথ বাহিনীর ট্যাংক আক্রমণের পর সম্পূর্ণরূপে শত্রুমুক্ত হয় ঘাগুটিয়া গ্রাম তথা কুমিল্লার হোমনা থানা। ঘাগুটিয়ার যুদ্ধই সম্ভবত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে সর্বশেষ যুদ্ধ।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঘাগুটিয়া গ্রামের হাজি আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা সোবহান মিয়াসহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে সূর্যোদয়ের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ক্যাম্প থেকে লঞ্চযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল শতাধিক পাক সেনার একটি দল।

পালিয়ে হোমনার ঘাগুটিয়া লঞ্চঘাটের অদূরে আসামাত্রই বাঞ্ছারামপুর ও হোমনার মুক্তিসেনারা একযোগে আক্রমণ করে। নিরুপায় হয়ে ঘাগুটিয়া পাকা মসজিদে আশ্রয় নেয়। পাকবাহিনী গ্রামে ঢুকেই মসজিদের পাশে দারোগা সিদ্দিকুর রহমান ও ভূঁইয়া বাড়িসহ আশেপাশের ৪০/৫০ টি বাড়িতে আগুন দেয় এবং উপর্যুপরি গুলি চালায়।

পাকবাহিনী গ্রামে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ঘাগুটিয়া ও ভবানীপুর গ্রামের অধিবাসীরা বাড়িঘর, সহায় সম্পত্তির মায়া ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর, রামপুর ও নালাদক্ষিণ গ্রামে আশ্রয় নেয়। এ খবর মুরাদনগর ও দাউদকান্দির মুক্তিসেনাদের কাছে পৌঁছলে শতাধিক মুক্তিসেনা ঘাগুটিয়া যুদ্ধে অংশ নেয়। পরে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্যাঙ্ক নিয়ে আসা মিত্র বাহিনীর সহায়তায় ঘাগুটিয়া মুক্ত হয়।

ঘাগুটিয়া যুদ্ধে দুইজন মুক্তিযোদ্ধাসহ গ্রামের ২০ নারী-পুরুষ শহীদ হন এবং গ্রামের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পাক সেনারা ব্যাপক ক্ষতি করে। শতাধিক গ্রামবাসী ও এফএফ কমান্ডার আব্দুল আউয়ালসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা এ যুদ্ধে আহত হন। 

পাকবাহিনীর হাতে যারা শহীদরা হলেন- সৈয়দ আলি প্রধান, বাবা-কিসমত আলি প্রধান, আছমত আলি প্রধান, ছন্দু মিয়া পিতা, লাল মিয়া (লালা),  দেওয়ান আলি ভূঁইয়া, জবা মিয়া, আমজত আলি হাজি (ভবানীপুর), কাশেম মিয়া (কাছম), খোরশেদ পাগলা, আইয়ুবের নেছা, মনজুরের নেছা, কালা মিয়া প্রধানের মা, হাওয়া, লালু মিয়া, গোলবরের নেছা, জাবেদ আলি, পাথালিয়াকান্দি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা আলেক মিয়া, ঝগড়ারচর গ্রামের মনিরুল হকের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান মতি।

ঘাগুটিয়া গ্রামে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে শহীদ স্মারক স্মৃতিসৌধসহ একটি পাঠাগার নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি শহীদ পরিবার ও স্থানীয়দের। তাছাড়া স্বাধীনতা ইতিহাসের কালের সাক্ষী হয়ে আজো দাঁড়িয়ে আছে ঘাগুটিয়া জামে মসজিদ। সেই ঐতিহাসিক মসজিদ ও স্কুলের পাশে গণকবরটি চিহ্নিত করে তা সংস্কার করা হয়েছে।

হোমনা ২৩ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক মো. মাহবুবুর রহমান খন্দকার বলেন, ঐতিহাসিক ঘাগুটিয়া যুদ্ধ উপলক্ষে হোমনা ইউএনও তাপ্তি চাকমার সভাপতিত্বে একটি বিজয় র‌্যালি, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এমপি সেলিমা আহমাদ মেরী।