২ টি সড়ক থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর ভাঙ্গার নির্দেশ

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন। উপজেলার মহিচাইল ইউনিয়নের গাবগাছিয়া গ্রামে তাঁর পৈত্রিক নিবাস। ওই মুক্তিযোদ্ধার পৈত্রিক জায়গায় এলজিইডি’র সড়ক সহ দুইটি সড়ক থাকা সত্বেও সরকারি জায়গার সামান্য অংশে ওই মুক্তিযোদ্ধার বসত ঘর নির্মাণের অভিযোগে নির্দেশনা আসে স্থাপনা ভাঙ্গার!

এতে চরম হতাশায় পড়েছে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। মানবিক দিক বিবেচনা করার আহবান এলাকাবাসীর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- শতাধিক বছর পূর্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন পৈত্রিক ভিটিবাড়ির ঘেঁষে নির্মাণ হয় মহিচাইল-গাবগাছিয়া সড়ক। যা ব্রিটিশদের আমালে তৈরিকৃত (সিএস) নকশা রয়েছে। ওই সড়কটি মমতাজ উদ্দিন এর বাড়ির পাশে বাঁকা থাকায় দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর পূর্বে সড়কটি সোজা করতে নকশার জায়গা বাদ দিয়ে জমার জায়গার উপর দিয়ে নেওয়া হয়। যা বিএস নকশায়ও সংশোধন করা হয়নি।

দীর্ঘ ৪ যুগেরও বেশি সময় যাবৎ রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন এর পৈত্রিক সম্পত্তির উপর দিয়ে ওই সড়ক।  
মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন ২০০৫ সালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানোর পর তার প্রবাসী দুই ছেলে মাকে একটি পাকা ঘরে রাখার উদ্দেশ্যে গত ৩ বছর পূর্বে একটি পাকা ভবন নির্মাণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন এর স্ত্রী সালেহা বেগম জানান-  প্রায় ৫০ বছর আগেই সড়কটি সোজা করার সময় আমাদের জমার জায়গা দিয়ে রাস্তা নেয়। আর সড়কের জায়গায় ছিল আমাদের বাড়ি-ঘর। আমার ছেলেরা যখন ভবন নির্মাণ করে তখন সড়কের জায়গা বাদ রেখেই বাড়ি করে। এক বছর আগে উপজেলা থেকে লোকজন এসে জানান আমাদের ঘরের সামান্য অংশ নাকি সরকারি জায়গা (রাস্তা)। রাস্তা সোজা করার জন্য আমাদের জমার জয়গা নিয়ে গেলো, আর সরকারি জায়গায় মুক্তিযোদ্ধার বসত ঘরের সামান্য একটু অংশ পড়াতে এখন ভাঙ্গার জন্য নোটিশ করা হলো! আমার ছেলেরা কেউ দেশে থাকে না।

তিনি আরও জানান- আমি বৃদ্ধ বয়সে এবং আমার মেয়ে ও পুত্রবধু জেলা প্রশাসকের দপ্তরে ঘুরছি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমাদেরকে এক মাসের সময় দিয়েছেন। ৫৪ শতক জায়গার মধ্যে সোয়া ৫৩শতক জায়গা নিয়ে যাক সরকার কিন্তু মাত্র পৌঁনে এক শতক জায়গার বিষয়টি মানবিক ভাবে বিবেচনার জন্য আবেদন জানাই।

স্থানীয় বাসিন্দা মান্নান জানান- যেখানে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্ণবাসন করছেন আর সেখানে ৫৪ শতক সরকারি জায়গার মধ্যে মাত্র পৌঁনে এক শতক জায়গা দখলের অযুহাতে তাঁর বসস্থান ভাঙ্গতে হবে! একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের কথা চিন্তা করে বিষয়টি পুণ:বিবেচনা করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে অনুরোধ করছি।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মুছা জানান- ওই মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির দুই পাশে তাঁর জমার জায়গায় দিয়ে রাস্তা। আর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে সরকারি সামান্য একটু জায়গা দখল হওয়ায় ভাঙ্গার নোটিশ অত্যন্ত দুঃখ জনক। বিষয়টি পুণ: বিবেচনা করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ¯েœহাশীষ দাশ জানান- মানবিক দিক বিবেচনা করা আর সরকারি নির্দেশ এক কথা নয়। যেহেতু বিষয়টি আদালতের বিষয়ে সেখানে আমার কিছুই করার নেই। তবে তাদেরকে আরও এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি।