ব্রেকিং:
ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এমপির মন্ত্রী-এমপিরাই আওয়ামী লীগের নির্দেশ মানছে না ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল মার্চে কুমিল্লায় ৭১ অগ্নিকাণ্ড খুন ৭; সড়কে ঝরেছে ২০ প্রাণ মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের সুবিধা বঞ্চিত ১৬৫ শিক্ষার্থী পেলো ৮ লাখ টাকা অনুদান দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশায় ধাক্কা দিয়ে বাস খালে, নিহত ৩ শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে : কাদের সিদ্দিকী কুমিল্লা জেলা ছাত্র জমিয়তের সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত নাঙ্গলকোটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অনার্স শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাউদকান্দিতে বাস চাপায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
  • শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

২০১৯-২০ অর্থবছর বাজেটে শিক্ষাখাত

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০১৯  

জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন হয়েছে। এই বাজেটে শিক্ষাখাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এতে এমপিওসহ প্রাথমিক-কারিগরি-মাদরাসার জন্য বিশেষ সুবিধার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

বাজেটে শিক্ষাখাতের এসব সুবিধা ও অর্জন তুলে ধরা হলো-

১। শিক্ষাখাতে উল্লে­খযোগ্য অর্জন ও বাজেট সম্প্রসারণ: শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপযোগী সুশিক্ষিত আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকার পর্যায়ক্রমে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ বাস্তবায়ন করছে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। তন্মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষাখাতে মোট ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ২২ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা ছিল। অন্যদিকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। কাজেই ক্রমান্বয়ে বাজেট সম্প্রসারণের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়নসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা ও শিক্ষার সকল কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা আইন প্রণয়নের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। 

২। শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রতিবছর ১ জানুয়ারি সমগ্র বাংলাদেশে একযোগে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে পূর্ণসেট পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়। ২০১৮ শিক্ষা বর্ষে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, এবতেদায়ী, মাধ্যমিক, দাখিল, দাখিল (ভোকেশনাল) ও এসএসসি (ভোকেশনাল)  স্তরে ৪ কোটি ৩৭ লক্ষ ৬ হাজার ৮৯৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৫ কোটি ৪২ লক্ষ ৯০ হাজার ১৬২টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ২০১০ থেকে ২০১৮ সন পর্যন্ত সর্বমোট ২৬০ কোটি ৮৬ লক্ষ ৯১ হাজার ২৯০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ হতে সর্বপ্রথম এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর মাঝে বিনামূল্যে ২৭ হাজার ৮১১টি ব্রেইল পদ্ধতির পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়েছে। এর পূর্বে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক বিতরণের কোন উদ্যোগ ছিল না। ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ হতে সর্বপ্রথম প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, দাদরি, ত্রিপুরা ও গারো) ৮২ হাজার ৮৯৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে নিজ নিজ মাতৃভাষায় মূদ্রিত ২ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৫৮ টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ নির্ধারিত ২০১৫ সালের পূর্বেই বাংলাদেশ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী সমতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। সর্বোপরি জাতীয় সাক্ষরতার হার বর্তমানে ৭৩% ছাড়িয়ে গেছে যা ২০০৮ সালে ছিল ৪৭%। সেই ধারাবাহিকতায় সকল শিশুদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ ও প্রচেষ্ঠা গ্রহণের ফলে প্রায় ৯৯% শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। ১০০% শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা এবং ঝরেপড়া বন্ধ করে সকলকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখার সক্রিয় প্রচেষ্ঠা অব্যাহত আছে।

৩।    শিক্ষাক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:    জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত MDGs (Millennium Development Goals) এর লক্ষ্যমাত্রা ২০১৫ এর তিন বছর পূর্বে শতভাগ অর্জন করায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীকে ২০১২ ও ২০১৭ সালে গ্লোবাল এডুকেশন কংগ্রেস কর্তৃক ‘‘গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড’’ প্রদান করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী  জাতিসংঘের UNESCO (United Nations Educational Scientific and Cultural Organization)  এর ২০১৭ এর Ministerial Meeting of Education সম্মেলনে দুই বছরের জন্য চেয়াপারসন নির্বাচিত হন। শিক্ষামন্ত্রীকে কমনওয়েলথ অব লার্নিং এর বোর্ড অব গভর্নরস এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতিনিধি হিসেবে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। তাছাড়া জাতিসংঘের UNESCO (United Nations Educational Scientific and Cultural Organization)  এর ৩৮ তম (২০১৫) ও ৩৯ তম (২০১৭) সাধারণ দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে পরপর দু’বার বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী  UNESCO এর ৩৭ তম (২০১৩), ৩৮ তম(২০১৫) ও ৩৯ তম (২০১৭) দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সম্মেলনে বাংলাদেশ পর পর তিনবার UNESCO এর নির্বাহী বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন। শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের জন্যই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।

৪। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আড়াই হাজার এমপিওভূক্তি করণ এবং ০১ জুলাই ২০১৯ থেকে বেতন-ভাতা প্রদান:  ২০১৯-২০ অর্থবছরে আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভূক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০টি প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ও বাকি ৫০০টির মতো প্রতিষ্ঠানে মাদ্রাসা। বাকিগুলো কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর জন্য আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। নতুন এমপিওভূক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আগামী ১ জুলাই ২০১৯ থেকেই বেতন ভাতা পেতে পারেন। মোট ৯ হাজারের বেশি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তির জন্য আবেদন করলেও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ মোতাবেক যোগ্য ২ হাজার ৭৬২টি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন স্কুল ও কলেজ ১ হাজার ৬২৯টি, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অধীন মাদ্রাসা ৫৫১টি এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে ৭৫ হাজার শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। বর্তমানে এমপিওভূক্ত স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা আছে ২৬ হাজার ১৮০টি। প্রায় পাঁচ লক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানে। এমপিওভূক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নতুন জাতীয় স্কেল ২০১৫ অনুসারে শতভাগ বেতন পাচ্ছেন। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় সর্বমোট ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৪৬ জন শিক্ষক কর্মচারীকে এমপিওভূক্ত করা হয়েছে। নন-এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে এমপিওভূক্ত করা হয়। পরে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভূক্ত করা হয়। এমপিওভূক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সরকারের কাছ থেকে মূল বেতন ছাড়াও কিছু ভাতা পান। ৯ হাজারের বেশি নন-এমপিওভূক্ত প্রতিষ্ঠান হতে আড়াই হাজারের বেশি এমপিওভূক্ত করায় প্রায় সাড়ে ছয় হাজারের মত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নন-এমপিওভূক্ত থেকে যাবে যাদের ক্রমান্বয়ে এমপিওভূক্তির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

৫। শিক্ষায় সাফল্য ও অগ্রগতি:  ২০০৯ সালে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ৬১%। বর্তমানে তা শতভাগ উন্নীত হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তির হার ৫১% থেকে ৬২%, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ভর্তির হার ৩৩% থেকে ৪৪% বেড়েছে এবং প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ৪৮% থেকে কমে ২০.৯% এসেছে। এ পর্যন্ত ২৬,১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে শুধুমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের উন্নয়ন বরাদ্দের তুলনায় ৫৪% বেশি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ১,৫০০টি বেসরকারি কলেজ ও ৩,০০টি বেসরকারি স্কুলের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ জুন ২০১৯ এর মধ্যেই সমাপ্ত হবে। সারাদেশে ২৬,২০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪৮,৯৪৮টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ, ২০০টি ল্যাগুয়েজ কাম আইসিটি ল্যাব, ১০০০টি সাইন্স ল্যাব ও ২,১২০টি স্মার্ট শ্রেণীকক্ষে আইসিটি উপকরণ সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশে ১২৫টি উপজেলায় ‘আইসিটি ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং আরো ১৬০টি উপজেলায় উহা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাছাড়া ১৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে এবং ৫০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে আরো ৬টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বর্তমানে দেশে ৪৮টি পাবলিক ও ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ১৫১টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তন্মধ্যে ৪২টি পাবলিক ও ৯২টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ১৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে। 

৬। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার হার ছিল ১% এর কম যা বর্তমানে ১৭% উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষায় ২০% এনরোলমেন্টের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিপ্লোমা কোর্সে আসন সংখ্যা ১২,৫০০ হতে ৫৭,৭৮০ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভর্তির ক্ষেত্রে মহিলা কোটা ১০% থেকে ২০% এ উন্নীত করা হয়েছে। নারী শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার লাভ করছে; শিক্ষার হার বাড়ছে। বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে মেয়েদের অংশ গ্রহণে হার দাঁড়িয়েছে ৫১% আর ছেলেদের ৪৯%। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অংশ গ্রহণ মেয়েদের ৫৩% ও ছেলেদের ৪৭%। প্রাথমিক শিক্ষাকতায় ৬০% নারী শিক্ষক নিয়োগ দান করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আরো ২৩ জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে যার সংখ্যা দাঁড়াবে ৭৫টি যা বর্তমানে ৫২টি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে যা বেড়ে দাঁড়াবে মোট ৮টি। বর্তমানে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে যথাক্রমে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, ও চট্টগ্রামে। বেসরকারি ক্ষেত্রে ৪৫৭টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ প্রায় ৭৭৭৩টি বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ১৬৩০টি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ১৮,৬৬১ জন শিক্ষক কর্মচারীকে এমপিওভূক্ত করা হয়েছে। সরকারি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানে ২০০৮ সালে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২,৩৭৫ বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিবছর ৫৭,৭৮০ জনে। ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। অবশিষ্ট চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ১০০টি উপজেলায় ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অবশিষ্ট ৩৮৯টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এবং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া ৮টি বিভাগীয় শহরে ৮টি মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

৭। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ১২৬৬ কোট টাকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৫টি মাদ্রাসায় শিক্ষার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, শ্রেণীকক্ষ আধুনিকায়ন ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ৫২৮ কোটি টাকা ব্যায়ে মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অদ্যাবধি ২৮১টি মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষা কোর্স চালু করা হয়েছে। সরকার ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং কওমি মাদ্রাসায় ডিগ্রীকে সরকার স্বীকৃতি প্রদান করেছে। কওমি মাদ্রাসা সমূহের দাউরায়ে হাদিস (তাকমীল) এর সনদকে মাস্টার ডিগ্রী (ইসলামিক ষ্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান আইন-২০১৮ প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিভূক্ত ৯,৩৯৭টি মাদ্রাসা রয়েছে; আরও ১৮০০ নতুন মাদ্রাসা সারাদেশ ব্যাপী নির্মাণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।  

৮। ২০২১ সালের মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আমাদের নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন। আমাদের শিক্ষার মূল লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের নতুন প্রজন্মকে আধুনিক, উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলা, নতুন প্রজন্মকে যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।