ব্রেকিং:
পুকুর থেকে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার বাংলাদেশি জিনাতের সোনা জয় দক্ষিণ আফ্রিকার বক্সিংয়ে নিয়মিত দ্বিগুন মাত্রার শব্দে দূষণের শিকার কুমিল্লা নগরী দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী শিশু সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা পাচার দুদিনব্যাপী পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ ৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া সেকান্দর চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন মোহনপুরে নৌ-পুলিশের অভিযানে ১৩ জেলে আটক ১০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ২ পূজা নিয়ে এমপি বাহারের বক্তব্য ব্যক্তিগত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেঘনায় মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেডক্রিসেন্টের অ্যাডহক কমিটি গঠন ইঁদুরের শত্রু, কৃষকের বন্ধু জাকির হোসেন বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজন নিহত, আহত ৩০ কুমিল্লায় ১৭ কোটি টাকার মাদক ধ্বংস নোয়াখালীতে রোহিঙ্গার পেটে মিলল ইয়াবা, গ্রেফতার ৪ দক্ষিণ আফ্রিকায় ডাকাতের গুলিতে প্রাণ গেল ছাগলনাইয়ার দিদারের
  • বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

২২ বছর পর ফিরলেন মৃত ব্যক্তি, বিক্রি করলেন জমিও

কুমিল্লার ধ্বনি

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২১  

কুমিল্লার মুরাদনগরের সুরেন্দ্র চন্দ্র দাস মারা যান ১৯৯৯ সালে। মারা যাওয়ার ২২ বছর পর গত ১৩ ডিসেম্বর তার ভাই দ্বীনেশকে সুরেন্দ্র সাজিয়ে জমি লিখে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রেজিস্ট্রি অফিসের অন্যান্য দলিল লেখক ও স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরও দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দলিল লেখক জহিরুল ইসলাম ওই উপজেলার চাপিতলা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

একই উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রহিম সরকার বলেন, মহেশপুরের হরি চরণ দাসের ছেলে সুরেন্দ্র চন্দ্র দাস ১৯৯৯ সালের ১২ ডিসেম্বর মারা যান। তার ১৬ শতক জমি দলিল লেখক জহিরুল ইসলামের মাধ্যমে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন লিখে নেন। শুধু তাই নয়, দলিল লেখক জহিরুল ইসলাম নিজেই দলিলে শনাক্তকারী হন।

জমিটি মহেশপুর মৌজার ৩৫০ নং বিএস খতিয়ানের ৭৭৭ নম্বর দাগের। মারা যাওয়ার ২২ বছর পর জমি লিখে দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

দলিল গ্রহীতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, দ্বীনেশ চন্দ্র দাস থেকে আমি ১৬ শতক জমি ক্রয় করি। দলিল নেয়ার পূর্বে জানতে পারি, জমির প্রকৃত মালিক সুরেন্দ্র চন্দ্র দাস। তা জানার পর বিষয়টির সমাধান খুঁজতে গিয়ে চাপিতলা গ্রামের দলিল লেখক জহিরুল ইসলামের সঙ্গে আমি কথা বলি।

তিনি আরো বলেন, অতিরিক্ত খরচ দিলে দলিল করতে গিয়ে যা দরকার জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সব কাগজপত্র তৈরি করে রেজিস্ট্রি অফিস ম্যানেজ করে দলিল করা সম্ভব। তার কথায় আমি রাজি হই। সে মোতাবেক গত মাসের ১৩ তারিখ দলিল লেখক জহিরুল ইসলাম দলিলটি রেজিস্ট্রি করেন।

সুরেন্দ্র চন্দ্র দাসের ভাতিজা অমর চন্দ্র দাস বলেন, আমার বাবা দ্বীনেশ চন্দ্র দাস দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ও হার্টের রোগী। এ অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে আমার বাবাকে সুরেন্দ্র চন্দ্র দাস বানিয়ে দলিল লেখক জহিরুল ইসলামের যোগসাজশে দেলোয়ার হোসেন ১৬ শতক জমি লিখে নেয়। ঘটনার দিন আমি বাড়ি ছিলাম না। পরে লোকমুখে ঘটনাটি জানতে পারি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম মুরাদনগরে যোগদান করার পর থেকে ৪-৫ জনের একটি চক্র ভুয়া ভোটার আইডি, আরএস ও বিএস খতিয়ান, দাখিলা এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে দলিল করছেন। এতে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি রেজিস্ট্রি অফিসের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মৌখিকভাবে সাব-রেজিস্ট্রারকে জানানো হলে তিনি ওই চক্রের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অভিযোগকারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।

অভিযুক্ত দলিল লেখক জহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন এবং তার সঙ্গে সরাসরি দেখা করার অনুরোধ জানান।

উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহজাহান মুন্সি বলেন, মারা যাওয়ার ২২ বছর পরও দলিল দেয়ার ঘটনা সবার মুখে মুখে। এ জালিয়াতির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা আমি জানি না। তবে এ সাব-রেজিস্ট্রার আসার পর সব দলিল লেখক সমান সুযোগ পায় না। সঠিক কাগজপত্র নিয়ে দলিল করতে গিয়ে অনেকে হয়রানির শিকার হন। আবার অনেকেই নিজে কাগজপত্র তৈরি করে সন্ধ্যার পর দলিল করেন।
     
জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম বলেন, মোবাইলে এসব কথা বলতে পারব না। আপনি অফিসে আসেন, আপনার বিষয়টা আমি দেখব। এরপর তিনি লাইন কেটে দেন।